Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Stagnant Water

stagnant water: নিকাশি বেহাল, রাস্তা কেটে জল সরাল জনতা

দীর্ঘ টালবাহানার পরে ভাঙড় ২ ব্লকের আবু হুদা থেকে ভাঙড় বিজয়গঞ্জ বাজার পর্যন্ত রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল।

দুর্ভোগ: রাস্তা কেটে দেওয়ায় বিপর্যস্ত যাতায়াত। রাস্তার কাটা অংশ গিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে জমা জল ।

দুর্ভোগ: রাস্তা কেটে দেওয়ায় বিপর্যস্ত যাতায়াত। রাস্তার কাটা অংশ গিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে জমা জল । ছবি: সামসুল হুদা।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
ভাঙড়  শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:৫৬
Share: Save:

গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে ভাঙড়ের বিস্তীর্ণ এলাকা। বেহাল নিকাশির কারণে জমা জল বের না হওয়ার ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। প্রশাসনের উদাসীনতার অভিযোগ তুলে জল বের করার জন্য মঙ্গলবার নবনির্মিত রাস্তার বিভিন্ন জায়গা কেটে দিলেন এলাকার মানুষ। বন্ধ হয়ে গিয়েছে যান চলাচল।

দীর্ঘ টালবাহানার পরে ভাঙড় ২ ব্লকের আবু হুদা থেকে ভাঙড় বিজয়গঞ্জ বাজার পর্যন্ত রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। নিকাশির জন্য বেলেডোনা বাজার, কচুয়া বাজার এবং শানপুকুর বাজার সংলগ্ন এলাকায় নবনির্মিত ওই রাস্তা কেটে দিয়েছেন মানুষ।

কচুয়া গ্রামের বাসিন্দা জয়নাল মোল্লা বলেন, ‘‘অতীতে ভারী বৃষ্টি হলেও এ ভাবে কখনও গোটা এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েনি। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করার ফলে নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। বৃষ্টির জল বাড়ির মধ্যে ঢুকে পড়েছে। ঘর থেকে বেরোতে পারছি না। বাধ্য হয়ে নিকাশির জন্য রাস্তা কেটে দিতে হয়েছে।’’

কচুয়া গ্রামের শিক্ষক হাসান মোল্লা বলেন, ‘‘এলাকা জলমগ্ন হয়ে থাকার ফলে সমস্যা তৈরি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু রাস্তা কেটে দেওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ফলে সমস্যা আরও বেড়েছে। প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই।’’

এ বিষয়ে পূর্ত দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সুপ্রকাশ মণ্ডল বলেন, ‘‘নিকাশির জন্য রাস্তা কেটে দেওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। আবার নতুন করে রাস্তার কাজ করতে হবে। ওই রাস্তার বেশ কয়েকটি জায়গায় জল নিকাশির জন্য কালভার্ট তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। সেই কাজ পর্যায়ক্রমে করা হচ্ছে।’’

ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ভাঙড় ২ ব্লকের পানাপুকুর, কাঁঠালিয়া, ভুমরু, শানপুকুর, কচুয়া, পাকাপোল, বেলেডোনা বাজার-সহ প্রায় চল্লিশটি গ্রাম জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ব্লক এলাকায় ৩ লক্ষ ৫১ হাজার মানুষ বসবাস করেন। দশটি পঞ্চায়েত এলাকায় অতিবৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এক লক্ষের বেশি মানুষ। ভাঙড় ১ ব্লক এলাকায় প্রায় আড়াই লক্ষ লোক বসবাস করেন। ব্লকের ৯টি পঞ্চায়েত এলাকায় শাঁকশহর, বোদরা, চন্দনেশ্বর, মরিচা, বড়ালি, জাগুলগাছি-সহ প্রায় ৮৪টি গ্রাম জলমগ্ন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় ৮০ হাজার মানুষ।

ভাঙড় ১ ও ২ ব্লক এলাকায় প্রচুর আনাজ চাষ হয়। অধিকাংশ এলাকায় বৃষ্টির কারণে খেতের ফসল ডুবে রয়েছে। নিকাশি নিয়ে অভিযোগ বহু জায়গায়। এলাকার জল নিকাশি ব্যবস্থার প্রধান মাধ্যম শোনপুর খাল, ভাঙড় খাল ও ঘটকপুকুর খাল। ভাঙড় ১ ও ২ ব্লকের ১৯টি পঞ্চায়েত এলাকার জল নিকাশির জন্য বিভিন্ন ভাবে ওই খালগুলির সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে খাল ও নিকাশি নালাগুলি সংস্কার না করার ফলে সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ।

ভাঙড় ১ বিডিও দীপ্যমান মজুমদার বলেন, ‘‘বৃষ্টির কারণে ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে রয়েছে, তা ঠিক। ইতিমধ্যে বিভিন্ন পঞ্চায়েত পাম্প চালিয়ে জল নিকাশির ব্যবস্থা করছে। বৃষ্টি থেমে গেলে নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতির বিষয়ে পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’’

অন্য দিকে, ক্যানিং ২ ব্লকের দেউলি ১ ও ২, কালীকাতলা, মঠেরদিঘি, আঠারোবাঁকি, সারেঙ্গাবাদ-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লা এদিন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান। তাঁকে ঘিরে ধরে এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মানুষ। বিধায়ক বলেন, ‘‘ব্লক এলাকায় প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষয়ক্ষতির হিসেব জেলায় পাঠিয়েছি। ইতিমধ্যে আমরা পর্যাপ্ত ত্রিপল ও ত্রাণসামগ্রী দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Stagnant Water
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy