এ ভাবেই মাটির খননের সঙ্গে উঠে আসছে ম্যানগ্রোভ। —নিজস্ব চিত্র।
ম্যানগ্রোভ কেটে নদীবাঁধ তৈরির অভিযোগ উঠল সেচ দফতরের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে রায়দিঘির নগেন্দ্রপুর পঞ্চায়েত এলাকায়।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নগেন্দ্রপুর পঞ্চায়েতে পুরকাইতপাড়ার দমকল জেটিঘাটের কাছে মণ্ডলের ঘেরি গ্রামে মণিনদীর বাঁধ দীর্ঘ দিন ধরে বেহাল। প্রায় আড়াইশো মিটার বাঁধ ভেঙে প্রতি বছর এলাকায় নোনাজল ঢুকে পড়ে। দিন পনেরো আগে ওই বাঁধ মেরামতির তোড়জোড় শুরু হয়। জেসিবি দিয়ে মাটি কেটে বাঁধ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ছোট-বড় ম্যানগ্রোভের জঙ্গল রয়েছে। বাঁধের সামনে থেকে মাটি কাটতে গিয়ে কয়েক হাজার ম্যানগ্রোভ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। যন্ত্রে কাটা পড়ে মাটির সঙ্গে উঠে আসছে বাদাবনের চারা।
এক সময়ে ওই নদীবাঁধ বাঁচানোর জন্যই ম্যানগ্রোভের চারা বসানো হয়েছিল। কয়েক বছরের মধ্যে তা জঙ্গলে পরিণত হয়ে যেতে পারত। নদীর ঢেউ থেকে নদীবাঁধ রক্ষা করত। নির্বিচারে ম্যানগ্রোভ কেটে ফেলায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাঁধ তৈরি হবে, ভাল কথা। কিন্তু ম্যানগ্রোভ ধ্বংস করে, মাটি কেটে এই কাজ পরিবেশবান্ধব হচ্ছে না। অন্য কোথাও থেকে মাটি এনে বাঁধ তৈরি করা যেত। তাতে ম্যানগ্রোভের ক্ষতি হত না।
এলাকার বাসিন্দা, সিপিএম নেতা ইয়াসিন গাজির অভিযোগ, “এলাকায় একশো দিনের কাজ পাচ্ছেন না যুবক-যুবতীরা। তাঁরা কাজের খোঁজে ভিন্ রাজ্যে চলে যাচ্ছেন। অথচ, নদীবাঁধ তৈরির কাজ হচ্ছে যন্ত্রের সাহায্যে মাটি কেটে! মাটি কাটতে গিয়ে ম্যানগ্রোভ নির্মূল হয়ে যাচ্ছে। অথচ, ওই ম্যানগ্রোভগুলি বড় হলে নদীবাঁধ রক্ষা করতে পারত। প্রশাসনের উচিত ছিল, একশো দিনের প্রকল্পের মাধ্যমে শ্রমিকদের দিয়ে মাটি কেটে বাঁধ মেরামত করা। তাতে এত ম্যানগ্রোভও নষ্ট হত না। কর্মসংস্থানও হত।”
রায়দিঘির বিধায়ক অলোক জলদাতা বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার একশো দিনের প্রকল্পের টাকা আটকে রেখেছে। প্রকল্পের কাজ বন্ধ। তা সত্ত্বেও আমাদের সরকার যত কম খরচে সম্ভব মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সে জন্যই যন্ত্রের সাহায্যে মাটি কেটে নদীবাঁধ তৈরি হচ্ছে। তবে কত ম্যানগ্রোভ নষ্ট হচ্ছে, তা আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।”
রায়দিঘি সাব ডিভিশনের সেচ দফতরের সহকারী বাস্তুকার অলোক পাল বলেন, “সম্প্রতি ওই বাঁধ পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। নদীবাঁধ তৈরি করতে গেলে চর থেকে তো মাটি নিতেই হবে। কারণ, পাশেই ব্যক্তি মালিকানার জমি রয়েছে। সেখান থেকে মাটি পাওয়া যাবে না। চরের থেকে মাটি নিতে গিয়ে কিছু ছোট ম্যানগ্রোভ নষ্ট হচ্ছে।” শ্রমিক দিয়ে কাজের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “নদীবাঁধ থেকে অনেকটা দূরে চরের মাটি কেটে মাঠ তৈরি হচ্ছে। সেটা শুধু শ্রমিকের দিয়ে করানো যেত না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy