Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

রাজ্য-প্রাণীর প্রাণসংশয়

বন দফতর দুই যুবককে আটক করলেও পরে ছেড়ে দেয়। কিন্তু ঘটনার গুরুত্ব বুঝে নড়েচড়েও বসে। রবিবার বন দফতরের তরফে ভাঙড়, কাশীপুর ও কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকায় বাঘরোল না মারার আবেদন জানিয়ে মাইকে প্রচার হয়েছে।

বাঘরোল বা মেছো বিড়াল।

বাঘরোল বা মেছো বিড়াল।

সামসুল হুদা 
ভাঙড় শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:২৬
Share: Save:

রাজ্য-প্রাণী হিসাবে তকমা পেয়েছে সে। কিন্তু তাতে নিরাপত্তা তো বাড়েনি। রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে মাঝে মধ্যেই বাঘরোল পিটিয়ে মারার কথা শোনা যায়।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়েও সম্প্রতি এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। দিন কয়েক আগে কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার কুলবেড়িয়ায় একটি বাঘরোলের মৃত্যুর পরে স্থানীয় দুই যুবক দেহ নিয়ে ভিডিয়ো বানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়। নিমেষে সেই ভিডিয়ো ভাইরাল। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, দুই যুবকের সগর্ব ঘোষণা, ‘‘বাঘ মেরে ঠান্ডা করে দিয়েছি।’’

বন দফতর দুই যুবককে আটক করলেও পরে ছেড়ে দেয়। কিন্তু ঘটনার গুরুত্ব বুঝে নড়েচড়েও বসে। রবিবার বন দফতরের তরফে ভাঙড়, কাশীপুর ও কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকায় বাঘরোল না মারার আবেদন জানিয়ে মাইকে প্রচার হয়েছে। লিফলেট, হ্যান্ডবিল বিলি হয়। থানা, বাজার-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। বন দফতরের তরফ থেকে প্রচারে বলা হয়, ‘‘বাঘরোল আমাদের শত্রু নয়। সে আমাদের কোনও ক্ষতি করে না। যে কোনও পশুকে মারা আইনত দণ্ডনীয়। জখম কোনও পশু দেখলে সঙ্গে সঙ্গে বন দফতরে খবর দিন।’’ এ দিন বন wwwদফতরের সঙ্গে প্রচারে যোগ দেয় দুই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও।

৩১ অক্টোবর পোলেরহাটের গাজিপুরে একটি বাঘরোলকে পিটিয়ে মেরে উল্লাস করেছিলেন গ্রামবাসীরা। মৃত বাঘরোলের সঙ্গে অনেকে সেলফি তোলেন। বছরখানেক আগে কাশীপুর থানার চণ্ডীহাট গ্রাম থেকে একটি আধমরা বাঘরোলকে উদ্ধার করে চিড়িয়াখানায় পাঠিয়েছিল বন দফতর। তারও আগে কাশীপুর থানার কচুয়া গ্রামে দু’টি বাঘরোলকে পিটিয়ে মারা হয়েছিল। ২৭ নভেম্বর রাস্তা পার হতে গিয়ে গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয় একটি পূর্ণবয়স্ক বাঘরোলের।

চিতাবাঘের গায়ের সঙ্গে বাঘরোলের চেহারার সাদৃশ্য থাকায় অনেকে চিতাবাঘ ভেবে ভুল করেন। যদিও বাঘরোল আদৌ আগ্রাসী স্বভাবের নয়। বরং বেশ শান্ত। সাধারণত জলাভূমি, খাল, বিল এলাকায় এদের দেখা মেলে। সাধারণত মাছ ভালবাসে। কখনও-সখনও গৃহস্থের বাড়িতে ঢুকে হাঁস-মুরগিও অবশ্য খায়।

দীর্ঘ দিন ধরে বাঘরোল নিয়ে গবেষণা করছেন তিয়াশা আঢ্য। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য-প্রাণী তকমা পাওয়া বাঘরোল আজ অবলুপ্তির পথে। ভাঙড়, নিউটাউন-লাগোয়া এই সব এলাকায় আগে প্রচুর জলাভূমি ছিল। সেখানে বড় বড় আবাসন তৈরি হওয়ায় এই প্রাণী তাদের বাসস্থান হারিয়ে ফেলছে। আমরা মানুষকে বোঝাতে চাইছি, বিলুপ্তপ্রায় এই প্রাণীকে আপনারা মেরে ফেলবেন না বা কোনও ক্ষতি করবেন না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Fishing Cat বাঘরোল
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy