প্রায় ফাঁকাই বকখালির সৈকত। নিজস্ব চিত্র।
ছবিটা এ বার অনেকটাই বদলে গিয়েছে!
গত বছর দোলের আগের দিন বকখালিতে পর্যটকের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। সমুদ্র সৈকতে আবির খেলায় মেতে উঠতে দেখা যায় অনেককেই। হোটেলগুলিতেও চলে আবির খেলা। তবে, সোমবার, দোলের আগের দিন পর্যটকদের সেই ভিড় কই!
বকখালিতে বর্তমানে হোটেল, লজের সংখ্যা একশোর কাছাকাছি। হোটেল ব্যবসায়ীরা জানান, বেশির ভাগ হোটেল-লজের বহু ঘরই খালি পড়ে রয়েছে। কিন্তু গত বছর দোলে প্রায় সব ঘরই ‘বুক’ হয়ে গিয়েছিল। এ বার পর্যটকের সংখ্যা খুবই কম।
কেন?
অনেকে দুষছেন পরিকাঠামোর অভাবের কথা। সম্প্রতি আগুন লেগে বকখালির কয়েক বিঘা ঝাউবন নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। প্রভাব পড়েছে প্রাকৃতিক পরিবেশে। সমুদ্রে চর পড়ে থাকায় সৈকত থেকে প্রায় এক কিলোমিটার হেঁটে গিয়ে জল মেলে। সৈকতের সামনে তৈরি হয়েছে প্রায় ৪০ ফুট চওড়া খাল। ভাটার সময়ে খালে জল থাকে না। ফলে, শুকনো খাল পেরিয়ে সমুদ্রস্নান করতে যান পর্যটকেরা। কিন্ত অনেক সময় স্নান সেরে ফেরার সময়ে জোয়ার এলে জলভরা খাল পেরোতে হয় পর্যটকদের। যা অনেক সময়ে দুর্ঘটনা ডেকে আনে। তা ছাড়া, বকখালির অন্যতম আকর্ষণ ডিয়ার পার্ক ও ইকো-ট্যুরিজ়ম পার্ক দু’টি এখন বন্ধ।
ফলে, পর্যটকদের হতাশা বাড়ছে। সমস্যা আরও আছে। গাড়ি রাখার পর্যাপ্ত জায়গা পান না পর্যটকেরা। যত্রতত্র রয়েছে আবর্জনার স্তূপ।
পরিকাঠামোর অভাবের কথা মেনে নিয়ে বকখালি-ফ্রেজারগঞ্জ হোটেলিয়ার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সম্পাদক দেবরাজ জানার দাবি, “সরকার যে ভাবে দিঘা, মন্দারমণি নিয়ে প্রচার করে, সে ভাবে বকখালি নিয়ে প্রচার করে না। এ বছর ঘরের ভাড়া কমিয়েও তেমন পর্যটকের দেখা নেই।” তাঁর দাবি, গত বছর এই সময়ের তুলনায় এ বার ৬০ শতাংশ কম পর্যটক এসেছেন।
নানা সমস্যা সমাধানের জন্য কিছুদিন আগে বকখালি-ফ্রেজ়ারগঞ্জ ট্যুরিজ়ম ডেভেলপমেন্ট কো-অর্ডিনেশন কমিটির তরফে এলাকায় মিছিল করা হয়। শামিল হন বহু ব্যবসায়ী। তাঁদের দাবি, বকখালি পর্যটনকেন্দ্রের উন্নয়নে নজর নেই প্রশাসনের। বেহাল পরিকাঠামোর জন্য পর্যটকের সংখ্যা দিন দিন কমছে।
আন্দোলনকারীদের পক্ষে বিশ্বেশ্বর প্রামাণিক বলেন, “ডিয়ার পার্ক থেকে হরিণ-কুমির তুলে নেওয়া হয়েছে। অ্যাকোয়ারিয়ামের কাজ শুরু হয়েও বন্ধ হয়ে আছে। ওয়েলকাম গেট, ভাসমান জেটি কিছুই করা হয়নি। আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট ভ্যাট নেই। পর্যটনকেন্দ্র ফের সাজিয়ে তুললে আমরা ব্যবসা করে খেতে পাব।”
নামখানার বিডিও শান্তনু সিংহ ঠাকুর বলেন, “ব্যবসায়ী ও স্থানীয় মানুষ নানা সমস্যার কথা জানিয়েছেন। গঙ্গাসাগর-বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ এলাকাটি দেখাশোনা করেন। সমস্যার কথা দফতরকে জানিয়েছি। দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে তারা।” পর্যদের নির্বাহী আধিকারিক শম্ভুদীপ সরকার বলেন, “বকখালি ও মৌসুনি দ্বীপে উন্নয়নের জন্য রাস্তা, আলো জেটির মতো একাধিক পরিকল্পনা করা হয়েছে। বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করে কোস্টাল রেগুলেশন জ়োন-এর অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy