মৃত তৃণমূল কর্মীর মেয়ে মনোয়ারা পিয়াদা (বাঁ দিকে)। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
তিনি নিজে তৃণমূলের প্রার্থী। কিন্তু বাবার খুনের ঘটনায় রাজ্য পুলিশের উপর তাঁর আস্থা নেই। তিনি চান সিবিআই তদন্ত। শেষমেশ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করে বিচার চাইলেন বাসন্তীতে নিহত যুব তৃণমূল কর্মী জহিরুল মোল্লার মেয়ে মনোয়ারা পিয়াদা। রাজ্যপালের পা জড়িয়ে তিনি জানালেন, রাজ্য পুলিশ সম্পূর্ণ ব্যর্থ।
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস আবার এসেছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। তাঁর সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ জানাতে মোটর বাইকে সওয়ারি হন বাসন্তীর নিহত তৃণমূল যুব নেতার মেয়ে। পরিবারের অন্যান্য সদস্যও রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে যান। বাসন্তীর বাড়ি থেকে তাঁরা রওনা দেন ক্যানিংয়ে সেচ দফতরের বাংলোয়। সেখানেই রয়েছেন রাজ্যপাল। দুপুরে সেখানে পৌঁছে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন নিহত তৃণমূল কর্মীর মেয়ে। তিনি পুলিশ প্রশাসন এবং দলের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন।
রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করার ঠিক আগে ওই তৃণমূল প্রার্থী জানান, তিনি নিজেও ভয়ে-আতঙ্কে আছেন। তিনি বাবার মৃত্যুর সুবিচার চাইবেন রাজ্যপালের কাছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমার বাবার মৃত্যুর সুবিচার যেন পাইয়ে দেন রাজ্যপাল। এই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি। সেটা জানাব। আমার নিজেরও প্রাণ হারানোর আশঙ্কা আছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমার বাবা যুব তৃণমূল করত। তৃণমূলের লোক বাবাকে চাপ দিত। বাবা রাজনীতিও ছেড়ে দিতে চেয়েছিল। তার পর শনিবার বাবাকে খুন করা হয়েছে।’’
বস্তুত, গত কয়েক দিন ধরে অশান্ত বাসন্তীর গাগড়ামারি গ্রাম। তৃণমূল এবং নির্দলের মধ্যে অশান্তি লেগে রয়েছে সেখানে। আক্রান্ত হয়েছেন বেশ কয়েক জন। সেই সমস্ত সন্ত্রাস কবলিত এলাকায় মানুষদের সঙ্গে কথা বলতে যান রাজ্যপাল। কিন্তু বাসন্তীর নিহত যুব তৃণমূল কর্মী জহিরুলের পরিবারের সঙ্গে তিনি দেখা করেননি। রাজ্যপাল বাসন্তীর চাত্রাখালি গ্রামে জহিরুলের মৃত্যুর স্থল পরিদর্শন করেন। কিন্তু সেখান থেকে কয়েক মিনিটের দূরত্বে জহিরুলের বাড়িতে তিনি যাননি। রাজ্যপাল তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন, এই ভেবে পরিবারের সকলে মুখিয়ে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত রাজ্যপালের নির্দেশেই নিহত জিয়ারুল মোল্লার পরিবারের সদস্যেরা ক্যানিং যান। সেখানেই রাজ্যপালের সঙ্গে কথা হয় তাঁদের।
শনিবার রাতে বাসন্তীতে খুন হন যুব তৃণমূল কর্মী জিয়ারুল। মৃতের পরিবার জানায় রাজ্যপুলিশ নয়, তাদের আস্থা রাজ্যপালের উপর। তিনি বিচার পাইয়ে দেবেন। একই সঙ্গে, সিবিআই তদন্ত দাবি করেন মৃতের মেয়ে মনোয়ারা পিয়াদা। মনোয়ারা নিজে বাসন্তীর কাঁঠালবেড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল প্রার্থী। তিনি অভিযোগ করেন, বাবা ছিলেন যুব তৃণমূল নেতা আমানুল্লা লস্করের অনুগামী। ভোটের টিকিট নিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে বিবাদের জেরেই খুন হয়েছেন তাঁর বাবা। তৃণমূল প্রার্থীর আরও অভিযোগ, পুলিশকে বার বার জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সোমবার রাজ্যপাল তাঁর জেলায় আসছেন শুনে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে উদ্গ্রীব ছিলেন মনোয়ারা। শেষমেশ এক জনের বাইকের পিছনের আসনে বসে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে যান তিনি।
পঞ্চায়েতের ভোটের আগে অশান্ত ভাঙড় এবং ক্যানিংয়ে আগেই এসেছিলেন রাজ্যপাল। গত তিন দিন তিনি ছিলেন উত্তরবঙ্গের কোচবিহারে। সেখানেও ভোটের আগে হিংসায় আহত এবং নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। রাজ্যপাল আনন্দ বোস জানান, তিনি প্রতিটি উপদ্রুত এলাকাতেই যেতে চান। সোমবার কলকাতা ফিরেই তিনি রওনা হন দক্ষিণ ২৪ পরগনায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy