সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে শুক্রবার রাতের ঘটনার সিসি ফুটেজের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত।
কামারহাটিতে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে শনিবার সকালেও চলছে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি। এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শুক্রবার তপ্ত হয়েছিল হাসপাতালের পরিস্থিতি। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার রাত থেকেই কর্মবিরতি শুরু করেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। হাসপাতাল চত্বরে চলছে ধর্নাও। বহির্বিভাগ বা জরুরি বিভাগে আপাতত পরিষেবা বন্ধ রেখেছেন তাঁরা। কত ক্ষণ কর্মবিরতি চলবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। হাসপাতাল চত্বরে অবস্থানে বসে থাকা জুনিয়র ডাক্তারেরা জানাচ্ছেন, শনিবার তাঁদের কলেজ কাউন্সিলের বৈঠক রয়েছে। ওই বৈঠকের পরেই পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করা হবে।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে টানা ৪২ দিন জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি চলেছে রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি মেডিক্যাল কলেজে। সরকারের তরফে নিরাপত্তা ও পরিকাঠামোগত ক্ষেত্রে ইতিবাচক কিছু আশ্বাস পাওয়ার পর সদ্য কাজে ফিরেছিলেন তাঁরা। আংশিক ভাবে শুরু করেছিলেন রোগী পরিষেবা। কিন্তু এরই মধ্যে ফের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ। শুক্রবার রাতে সাগর দত্ত মেডিক্যালে হামলার অভিযোগে ইতিমধ্যে চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কিন্তু জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য, তাঁরা কর্মস্থলে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। সাগর দত্তের এক জুনিয়র ডাক্তার জানান, ঘটনার পর হাসপাতালের অধ্যক্ষ এবং এমএসভিপির সঙ্গে তাঁদের কথা হয়েছে। নিরাপত্তার বিষয়ে তাঁরা মৌখিক আশ্বাস পেয়েছেন কর্তৃপক্ষের থেকে। কিন্তু বাস্তবে সেই আশ্বাসের কোনও প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না বলেই দাবি জুনিয়র ডাক্তারদের।
শুধু তাই নয়, হাসপাতাল চত্বরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। সাগর দত্তের এক জুনিয়র ডাক্তার বলেন, “শুক্রবার সন্ধ্যায় মহিলা ওয়ার্ডে রোগীর পরিজনেরা প্রবেশ করে ধস্তাধস্তি শুরু করেছিলেন। এই অত্যাচারের প্রতিবাদে আমরা আবার ধর্নায় বসতে বাধ্য হয়েছি। যত ক্ষণ না নিরাপদ কর্মস্থল না পাচ্ছি, তত ক্ষণ আমরা কাজে যোগ দিতে পারছি না।”
তাঁদের অভিযোগ, ঘটনাস্থলে পুলিশকর্মীরা থাকলেও তাঁরা এক প্রকার দর্শকের ভূমিকাতেই ছিলেন। হাসপাতালের ভিতরের সিসি ফুটেজে দেখা গিয়েছে এক মহিলা থালা জাতীয় কিছু বস্তু দিয়ে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর চড়াও হন। ওই মহিলাকেও ওয়ার্ড থেকে বার করার জন্য পুলিশ কোন চেষ্টা করেননি বলে অভিযোগ জুনিয়র ডাক্তারদের।
সাগর দত্ত হাসপাতালে শুক্রবার রাতে এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। অভিযোগ, রোগীর পরিবারের সদস্যেরা হাসপাতালের চার তলায় উঠে গিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের উপর হামলা চালান। ভাঙচুর করা হয় মহিলাদের ওয়ার্ডে। এমনকি, মহিলা চিকিৎসকদের ঘর থেকে টেনে বার করে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
আরজি করে নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে আন্দোলন শনিবার ৫১ দিনে পা রাখল। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে সাগর দত্তের জুনিয়র ডাক্তারেরা বলেন, “হাসপাতালের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদের বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। গতকাল দুপুর ২টো ৫৭ মিনিটে মহিলা ওয়ার্ডে এক জন রোগী ভর্তি হয়েছিলেন। যাবতীয় যা চিকিৎসা করা সম্ভব, তা করা হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, সব কিছু করার পরেও সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ তিনি মারা যান।”
জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগ, বিকাল সাড়ে ৪টে থেকেই রোগীর প্রায় ১০-১২ জন আত্মীয় ওয়ার্ডে প্রবেশ করেন। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই পুরুষ ছিলেন। তাঁরা কর্তব্যরত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের হেনস্থা করেন এবং গালিগালাজ করেন। আরজি করের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনেও হুমকি দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। এতে জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য, আরজি করের প্রসঙ্গ টেনে পরোক্ষ ভাবে ধর্ষণের হুমকিই দেওয়া হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy