প্রকল্প হলে বদলে যাবে মোয়া শিল্পের চেহারা। —ফাইল চিত্র
জয়নগরে জমি জটে দীর্ঘদিন ধরে আটকে রয়েছে মোয়া হাব তৈরির কাজ। তবে সেই জমি সমস্যা এবার মিটতে চলেছে বলেই দাবি স্থানীয় প্রশাসনের। মিত্রগঞ্জ বাজারে জয়নগর-মজিলপুর পুরসভার দেওয়া জমিতেই মোয়া হাব তৈরির সিদ্ধান্ত কার্যত পাকা। দিন কয়েকের মধ্যেই প্রয়োজনীয় কাজ কর্ম শুরু হবে।
রাজ্যের গণ্ডি ছাড়িয়ে দেশে, এমনকী দেশের বাইরেও জয়নগরের মোয়ার খ্যাতি রয়েছে। দেশে বা দেশের বাইরে মোয়ার চাহিদাও রয়েছে। প্রতি মরসুমে বিক্ষিপ্তভাবে জয়নগর থেকে মোয়া রফতানি হয়। কিন্তু নিয়মিত রফতানির ক্ষেত্রে তৈরি হচ্ছে সমস্যা। কারণ, জয়নগরে তৈরি মোয়া বেশিদিন তাজা থাকে না। রফতানির ক্ষেত্রে ৩-৪ দিন সময় লাগলে মোয়ার স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়। এই সমস্যার সমাধানে মোয়া হাব তৈরি করে মোয়া তাজা রাখার একটি বিশেষ যন্ত্র বসানোর পরিকল্পনা হয়। সেই যন্ত্রের সাহায্যে মোয়ার স্বাদ ২৫-২৬ দিন পর্যন্ত অপরিবর্তীত রাখা সম্ভব। স্থানীয় সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল বছর দু’য়েক আগে রাজ্য সরকারের কাছে এই হাব তৈরির প্রস্তাব দেন। প্রস্তাব মঞ্জুরও হয়। রাজ্য সরকারের খাদি ও গ্রামীণ শিল্প পর্ষদ ওই যন্ত্র বাবদ এক কোটি টাকারও বেশি মঞ্জুর করে। কিন্তু হাবটি কোথায় হবে, তা নিয়েই তৈরি হয় সমস্যা।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রের খবর, ফাঁকা জায়গায় পরিকাঠামো তৈরির বরাদ্দ মেলেনি। তাই যন্ত্রটি বসানোর জন্য ছাদ-সহ তৈরি বাড়ির খোঁজ শুরু হয়। কিন্তু পছন্দমতো জায়গা মিলছিল না। একাধিক জায়গা দেখা হলেও, নানা কারণে সেগুলি বাতিল হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে প্রকল্পের কাজ আর এগোয়নি। সম্প্রতি এক বৈঠকে জয়নগর-মজিলপুরের বিদায়ী পুরপ্রধান ও বর্তমান প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান সুজিত সরখেলকে সমস্যার কথা জানান মোয়া ব্যবসায়ীরা। সুজিত মিত্রগঞ্জে পুরসভার নিজস্ব জায়গায় যন্ত্রটি বসানোর প্রস্তাব দেন। এরপরই শনিবার সাংসদ প্রতিমা মণ্ডলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পুর প্রশাসক। বৈঠকে মোয়া ব্যবসায়ীরাও ছিলেন। সেখানেই মিত্রগঞ্জ বাজারে পুরসভার ওই ভবনে মোয়া হাব তৈরির সিদ্ধান্ত হয়।
সাংসদ বলেন, “পুর প্রশাসক পুরসভার অধীনে থাকা একটি জায়গায় প্রকল্পটি করার প্রস্তাব দিয়েছেন। সব দিক বিচার করে জায়গাটি আমাদের উপযুক্ত বলেই মনে হয়েছে। দ্রুত ওই জায়গায় প্রকল্পের কাজ শুরুর ব্যাপারে সংশ্লিস্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলব।” সুজিত বলেন, “মোয়া জয়নগরের গর্ব। পুরসভা সব দিক থেকে এই প্রকল্প রূপায়ণে সাহায্য করবে।”
মোয়া ব্যবসায়ী রঞ্জিত ঘোষ বলেন, “নিমপীঠ, শ্রীপুর-সহ কয়েকটি জায়গায় এই হাব তৈরির ব্যাপারে প্রাথমিক কথাবার্তা হয়েছিল। কিন্তু এই জায়গাগুলিতে যাওয়া-আসা সহ নানা সমস্যা ছিল। মিত্রগঞ্জের এই জায়গায় সেই সমস্যা নেই। আশা করি দ্রুত হাব তৈরি হবে। যন্ত্রটি চালু হলে মোয়া রফতানিতে আমূল পরিবর্তন আসবে।”এ দিন বৈঠকে মোয়া ব্যবসায়ীদের নিয়ে একটি কমিটি তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। সাংসদ জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সরকারি আধিকারিক এবং মোয়া ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত শিল্পী-শিউলিদের নিয়ে কমিটিটি তৈরি হবে। মোয়া ব্যবসা এবং ব্যবসায়ীদের স্বার্থে কাজ করবে এই কমিটি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy