চেষ্টা: খেত থেকে জমা জল বের করার চেষ্টা করছেন বসিরহাটের চাষি। ছবি: নির্মল বসু
নিম্নচাপের জেরে শীতের অকাল বৃষ্টিতে ভাসল বসিরহাট মহকুমার বিভিন্ন এলাকা। অসময়ের বৃষ্টিতে আলু, শীতকালীন আনাজ-সহ বিভিন্ন চাষে ক্ষতি হতে পারে বলে মনে করছেন কৃষকেরা।
মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার দিনভর টানা বৃষ্টিতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় জল জমে গিয়েছে। জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃষ্টিতে সব থেকে ক্ষতি হবে আলু, সর্ষে, ধানের। আউশ ও আমন ধান ওঠার মুখে নিম্নচাপের এই বৃষ্টি চাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে।
কৃষি দফতর মনে করছে, প্রতিকূল আবহাওয়ার জেরে মার খেতে পারে আমন ধান। বৃষ্টিতে ফসল নষ্ট হলে বাজারে তার প্রভাব পড়তে পারে। শুক্রবার দেখা গেল, ঘরে ওঠার মুখে বৃষ্টিতে মাঠে শুয়ে পড়েছে সর্ষে গাছ। মাঠে কাটা পাকা ধান থেকে অঙ্কুর বেরোনোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বৃষ্টি থামলেও ধান তোলার পরে আলু চাষে ক্ষতির আশঙ্কা থাকছে। বসিরহাটের শ্বেতপুর এলাকার কৃষক সাবুরালি মোল্লা, অহাব গাজি বলেন, ‘‘ধান চাষ করেই সংসার চলে। অকাল বৃষ্টি রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। এই ফলন নষ্ট হলে সংসার অচল হয়ে পড়বে। ধান গাছের গোড়ায় জল জমে রয়েছে। ফলে গাছ হেলে পড়েছে। ওই গাছ যদি মাটিতে পড়ে, তা হলে আর ফলন ঘরে তুলতে পারা যাবে না।’’
একই আশঙ্কা বসিরহাটের রামনগর এলাকার চাষি নজরুল ইসলাম, ফজের আলির। তাঁরা বলেন, ‘‘আলু ঘরে তোলার সময় এসে গিয়েছে। এই সময়ে বৃষ্টিতে আলুর পচন ধরে বড় রকম ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে।’’
স্বরূপনগরের রতন মণ্ডল, ভবেন দাসরা বলেন, ‘‘আগে একবার ফসলে মাজরা পোকা ধরেছিল। কীটনাশক দিয়ে ঠিক করা হয়েছে। আবার বৃষ্টিতে ধানের কী হবে বুঝতে পারছি না।’’ ধানের পাশাপাশি কয়েক বিঘা জমিতে চাষ করা শশার ফসল নিয়েও তাঁরা আশঙ্কায়।
অকাল বৃষ্টিতে রবি শস্য চাষের ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়েও। পর পর অকাল বৃষ্টি, বুলবুলের দাপটে চাষিরা রীতিমতো চিন্তিত। নতুন বছরের শুরুতে আবারও অকাল বৃষ্টি রবি শস্য চাষের পক্ষে খুবই ক্ষতি করতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের।
ভাঙড়ের চাষি আনোয়ার আলি মোল্লা বলেন, ‘‘রবিশস্য ছাড়াও আলু, টম্যাটোর পচন শুরু হতে পারে। বুলবুলের সময়েও চাষের প্রচুর ক্ষতি হয়েছিল। এখনও সেই ক্ষতিপূরণের টাকা পাইনি। আবার অকাল বৃষ্টিতে এক বিঘা জমির আলু চাষের ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।’’
ভাঙড়ের বানিয়াড়া গ্রামের ফুল চাষি শ্রীদাম মণ্ডল বলেন, ‘‘এক বিঘা জমিতে গাঁদা ফুল চাষ করেছি। ১০ কাঠা জমিতে সর্ষে আছে। গাছে খুব ভাল ফুল হয়েছিল। অনেক গাছে ফলন ধরেছে। কিন্তু যে ভাবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে, তাতে গাছের ফুল সব ঝরে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অনেক গাছের গোড়ার মাটি আলগা হয়ে যাওয়ায় গাছ মাটিতে শুয়ে পড়েছে।’’
ভাঙড় ১ ব্লকের কৃষি দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘এখনও সে ভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে কেউ অভিযোগ জানাননি। তবে এই ভাবে বৃষ্টি হতে থাকলে রবিশস্যে কিছুটা ক্ষতির আশঙ্কা আছে। আমরা সমস্ত বিষয়ের উপরে নজর রাখছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy