—ফাইল চিত্র।
এলাকায় গুজব রটে যায়, বৃহস্পতিবারই রেশন কার্ড সংশোধনের শেষ দিন।
ব্যস! রাত জেগে লোকে দাঁড়িয়ে পড়ে লাইনে। ভোর থেকে চড়া রোদ। সেই অবস্থায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লেন তিন মহিলা।
নতুন রেশন কার্ড তৈরি ও সংশোধন নিয়ে এই ঘটনার সাক্ষী থাকল মগরাহাট ২ ব্লক এলাকা।
এ দিন বেলা ২টো নাগাদ ব্লক অফিস চত্বরে গিয়ে দেখা গেল, তখনও শ’য়ে শ’য়ে মানুষের লাইন। পাশে গাছের ছায়ায় বসে কাগজপত্র গোছাচ্ছিলেন রশিদা বিবি। বেলাড়িয়া গ্রামের ওই মহিলার রেশন কার্ডে স্বামীর নাম ভুল আছে। এত দিন গড়িমসি চললেও এনআরসি-ভীতি দানা বাঁধতে থাকায় তড়িঘড়ি সংশোধনের কথা মাথায় এসেছে। বুধবার রাত থাকতে লাইনে দাঁড়িয়েছেন বলে জানালেন রশিদা। কিন্তু বেলা গড়িয়ে গেলেও তখনও কাজ হয়নি। কুলদিয়া গ্রামের আব্দুল হামিদ শেখের রেশন কার্ডে পদবি উধাও। তিনিও ভোর ৩টে থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছেন বলে জানালেন। একই সমস্যা নসিমন বিবি, আকলিমা লস্করদের। তাঁদের দাবি, নাম-ঠিকানা সব ঠিকঠাকই দিয়েছিলেন প্রশাসনের কাছে। ভুল করেছেন কর্মীরা। কিন্তু ফের ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে খেসারত গুনতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে মগরাহাট ২ ব্লকের জনসংখ্যা প্রায় ৪ লক্ষ। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় ১৪টি পঞ্চায়েত রয়েছে। ৯ তারিখ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভোটার কার্ড সংশোধনের জন্য সমস্ত পঞ্চায়েত এলাকায় মাইকে প্রচার চলছে। শুরু হয়েছিল ভিড়। কিন্তু কোনও ভাবে রটে যায়, বৃহস্পতিবারই রেশন কার্ড সংশোধনের শেষ দিন। ফলে বুধবার রাত থেকে ব্লক অফিসের সামনে ভিড়টা বাড়তে থাকে।
রোদে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে এ দিন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিন মহিলা। করিমা বিবি, জাহিরা বিবি ও মাকসুদা বিবিরা ধকলটা নিতে পারেননি। অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় মগরাহাট গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এ দিন লাইনে দাঁড়ানো সোলেমান গাজি, ইউনুস মোল্লারা বলেন, ‘‘আমরা রেশন কার্ড সংশোধন নিয়ে এতটা আতঙ্কিত হয়ে পড়তাম না। কিন্তু হঠাৎ এনআরসি নিয়ে বাজারে শোরগোল পড়ায় ভয়ে ভয়ে আছি। তাই তড়িঘড়ি রেশন কার্ড সংশোধন করতে এখানে এসেছি।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গেল, প্রায় ৪ লক্ষ জনসংখ্যা হলেও বর্তমানে রেশন কার্ড পেয়েছেন ৩ লক্ষ ৭১ হাজার ৭০৬ জন। এটা কম্পিউটার নথি। কিন্তু সেখানে অনেক ভুল আছে বলে অভিযোগ। বাস্তবে সংখ্যাটা আরও বেশি হবে বলে স্থানীয় মানুষের মত। মগরাহাট ২ বিডিও রথীন বিশ্বাস বলেন, ‘‘মানুষ অকারণে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। যাঁদের রেশন কার্ড আছে, তাঁরাও আবার আবেদন করছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy