Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Illegal oil Trade

অধরা ফজের, কাটা তেলের কারবার চলছেই

শনিবারের ওই ঘটনার পর রবিবার ভাঙড় থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে ভাঙড়ের নলমুড়ি, পাগলাহাট থেকে কয়েকশো লিটার কাটা তেল, কেরোসিন তেল উদ্ধার করে।

দেদার: ভাঙড়ের নানা জায়গায় বিক্রি হচ্ছে কাটা তেল। নিজস্ব চিত্র

দেদার: ভাঙড়ের নানা জায়গায় বিক্রি হচ্ছে কাটা তেল। নিজস্ব চিত্র

সামসুল হুদা  
ভাঙড় শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২০ ০৬:০২
Share: Save:

প্রশাসনের নজর এড়িয়ে ফজের গাজি বেআইনি তেলের কারবার চালাত ঘটকপুকুর বাজারে। ঘিঞ্জি বাজারের ভিতরে সেই গোডাউনে কোনও ভাবে আগুন ধরে ছড়িয়ে পড়ে আশেপাশে। শনিবার ওই ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে তিনজনের।

ঘটকপুকুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষে আয়নাল আলি বলেন, ‘‘ফজের দীর্ঘ দিন ধরে এ ধরনের অসাধু ব্যবসা চালাচ্ছেন। আমরা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাব, তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।’’

শনিবারের ওই ঘটনার পর রবিবার ভাঙড় থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে ভাঙড়ের নলমুড়ি, পাগলাহাট থেকে কয়েকশো লিটার কাটা তেল, কেরোসিন তেল উদ্ধার করে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পাগলাহাট থেকে রেজাউল মোল্লা নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটকপুকুরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দমকলের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। মূল অভিযুক্ত ফজের গাজি পলাতক। তার খোঁজ চলছে।

গ্রামীণ এলাকার বিভিন্ন রাস্তার ধারে আকছার চোখে পড়ে বোতলবন্দি কাটা তেল, পেট্রোল, ডিজেল। মুদিখানা, চায়ের দোকান, স্টেশনারি দোকানেও বিক্রি হয় বেআইনি কেরোসিন তেল, কাটা তেল, পেট্রোল, ডিজেল। সরকারি নীল রঙের কেরোসিন তেল যে খোলাবাজারে আসছে, তা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। প্রশাসনের নজরদারি এড়িয়ে সরকারি কেরোসিন রেশন ডিলারদের থেকে ঘুরপথে চলে আসে খোলাবাজারে। একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সেই কেরোসিনের সঙ্গে রাসায়নিক মিশিয়ে ডিজেল তৈরি করে। চলতি ভাষায় যার নাম ‘কাটা তেল।’ খোলা ঘিঞ্জি বাজারে এ ধরনের বেআইনি ব্যবসার কী মারাত্মক পরিণতি হতে পারে, তার সাক্ষী ভাঙড়ের ঘটকপুকুর বাজার।

এরপরেও কি হুঁশ ফিরবে প্রশাসনের? উঠছে সেই প্রশ্ন।

রবিবার সকালে ভাঙড় ঘটকপুকুর, পাগলাহাট, বোদরা সহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেল, এ ধরনের বেআইনি কারবারের রমরমা। শুধু ভাঙড় নয়, ক্যানিং, বারুইপুর, জয়নগর-সহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় বেআইনি এই কারবারের রমরমা।

রেশন ডিলারেরাই অনেকে সরকারি কেরোসিন খোলাবাজারে বেচে দেন বলে জানালেন ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ।

রেশনে কেরোসিন ২৮-৩০ টাকা লিটারে বিক্রি হয়। অভিযোগ, কিছু ডিলার সেই তেল চুরি করে খোলা বাজারে বিক্রি করছেন ৪০-৪৫ টাকা লিটার দরে। খোলাবাজারে সেই সরকারি তেল বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা লিটারে। একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী আবার কেরোসিন তেলে রাসায়নিক মিশিয়ে ডিজেল তৈরি করে আরও চড়া দামে বিক্রি করছেন।

ভাঙড় ১, ২ ব্লক মিলিয়ে প্রায় ২৫০ জন রেশন ডিলার রয়েছেন। কী ভাবে রেশন ডিলারদের থেকে সরকারি কেরোসিন খোলাবাজারে চলে আসছে? এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভাঙড়ের এক ফুড ইন্সপেক্টর বলেন, ‘‘খোলা বাজারে কেরোসিন তেল বিক্রি হলে তা দেখার দায়িত্ব আমাদের নয়। এ জন্য পুলিশ, এনফোর্সমেন্ট ডিপার্টমেন্ট রয়েছে। আমরা কেবল আমাদের অনুমোদিত ডিলারদের উপরে নজরদারি চালাই।’’

ভাঙড় ১ বিডিও দীপ্যমান মজুমদার বলেন, ‘যারা এ ধরনের বেআইনি কারবারের সঙ্গে যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হবে।’’

ভাঙড় ১ ব্লকের কেরোসিন তেল ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দিনদার আলি মোল্লা অবশ্য বলেন, ‘‘আমাদের অ্যাসোসিয়েশনের কোনও ডিলার খোলাবাজারে কেরোসিন তেল ব্ল্যাকে বিক্রি করেন না। ওই সমস্ত অসাধু কারবারিরা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কেরোসিন তেল কিনে খোলাবাজারে বিক্রি করছেন। আমরা সাধারণ ডিলার। প্রশাসনের উচিত ওই সমস্ত অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Illegal oil Trade Bangar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy