ধূলিসাৎ: পুরোপুরি ভেঙে দেওয়া হয়েছে অবৈধ বাড়িটি। বুধবার। (ইনসেটে) দু’মাস আগে এ ভাবেই দাঁড়িয়ে ছিল সেই বাড়ি। নিজস্ব চিত্র
হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী দু’মাসের মধ্যেই বজবজ পুরসভার প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান তথা ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর লুতফর হোসেনের অবৈধ নির্মাণটি ভাঙার কাজ সম্পন্ন করল পুরসভা। একটি নার্সিংহোম তৈরির জন্য সরকারি নিকাশি খাল ও কবরস্থান দখল করে লুতফর অবৈধ নির্মাণ করেছেন, এই অভিযোগে ২০২১ সালের জুলাই মাসে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই পুর এলাকার বাসিন্দা এক মহিলা।
মামলার শুনানিতে বজবজ পুরসভার কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করেছিল হাই কোর্ট। পুরসভার তরফে আদালতে জানানো হয়, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের মহাত্মা গান্ধী রোডের ওই বাড়িটি অবৈধ। এর পরেই গত মার্চ মাসে বজবজ পুরসভাকে ওই অবৈধ নির্মাণ ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেয় হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। দু’মাসের মধ্যে সেটি ভেঙে আদালতে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতিরা।
পুরসভা সূত্রের খবর, গত ৫ মে চারতলা ওই নির্মাণ ভাঙার কাজ শুরু হয়। ৫ জুলাই সেই কাজ শেষ হয়েছে। পুরসভা ও ভূমি সংস্কার দফতরের তরফে খালি জমির মাপজোকও করা হয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, ওই জায়গায় লুতফরের কম-বেশি এক কাঠা জমি রয়েছে। বাকি জমির কিছুটা বজবজ পুরসভা এলাকার মূল নিকাশি চড়িয়াল খালের অংশ। পাশের কবরস্থানের জমির কিছুটা অংশও জবরদখল করা হয়েছিল।
হাই কোর্টের নির্দেশে ওই অবৈধ বাড়ি ভাঙার কাজে পুরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৭ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ঠিকাদারকে ওই টাকা দেওয়া হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। ওই অবৈধ বাড়ির আশপাশে কয়েকটি দোকান ছিল। বাড়ি ভাঙার কাজের সময়ে ওই সব দোকান বন্ধ রাখতে হয়েছিল। গত দু’মাসে ব্যবসায় লোকসানের ক্ষতিপূরণ বাবদ দোকানের মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁদের টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই বিষয়ে পুরসভা ও দোকান-মালিকদের মধ্যে কোনও আলোচনা হয়নি বলেই সূত্রের খবর।
তবে, অবৈধ নির্মাণ ভাঙার কাজে নিজস্ব উন্নয়ন তহবিল থেকে টাকা খরচ করা নিয়ে পুরসভারঅন্দরে উঠেছে নানা প্রশ্ন। এক পুরকর্তার অবৈধ বাড়ি ভাঙার জন্য পুরসভার তহবিল থেকে কেন টাকা খরচ করা হবে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন কাউন্সিলরদের একাংশ।
পুরসভার চেয়ারম্যান গৌতম দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘হাই কোর্ট অবৈধ নির্মাণ ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। সেই কারণে পুরসভার তহবিল থেকে আপাতত খরচ করা হয়েছে। কিন্তু এমন ছোট একটি পুরসভার উন্নয়ন তহবিল থেকে সাত লক্ষ টাকা খরচ হয়ে যাওয়ায় সমস্যা হবে। নির্মাণ ভাঙার পরে ছবি-সহ সমস্ত তথ্য হাই কোর্টে জমা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। পাশাপাশি, খরচের বিষয়টিও হাই কোর্টকে জানানো হবে। সে ক্ষেত্রে আদালত কী নির্দেশ দেয়, তার উপরে সব কিছু নির্ভর করছে।’’
কাউন্সিলরদের একাংশের দাবি, যিনি অবৈধ নির্মাণ করেছিলেন, ভাঙার খরচও তাঁরই দেওয়া উচিত। উন্নয়ন তহবিলে টান পড়লে বাসিন্দারা নানা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। অবৈধ বাড়ির মালিকের কাউন্সিলরের পদ থেকে পদত্যাগ করা উচিত বলেও দাবি তুলেছেন পুরসভার কেউ কেউ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy