Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Electric Hooking

Hooking: বিপদ ছড়িয়ে ট’বাজারে

ক্রেতা-বিক্রেতাদের আশঙ্কা, যে কোনও সময়ে বিদ্যুৎবাহী তার ছিঁড়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

বিপজ্জনক: চতুর্দিকে এ ভাবেই ঝুলছে বিদ্যুতের তার।

বিপজ্জনক: চতুর্দিকে এ ভাবেই ঝুলছে বিদ্যুতের তার। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

সীমান্ত মৈত্র  
বনগাঁ শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২১ ০৭:৩০
Share: Save:

দোতলা, ভগ্নপ্রায় বাড়ির দেওয়াল জুড়ে গজিয়ে উঠেছে আগাছা। তার মধ্যে বিদ্যুতের তার কুণ্ডলী পাকিয়ে বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে আছে। দেওয়া জুড়ে তারের কুণ্ডলী। বাজার-দোকানেও বিদ্যুতের তারও ঝুলে আছে। কোথাও দলা পাকিয়ে। সেখানেই বেচাকেনা চলছে। রাস্তার পাশে বাড়ির জানলা, ঝুল বারান্দার পাশ দিয়ে গিয়েছে বিদ্যুতের তার। দেওয়ালে তারের ছড়াছড়ি।

ঘটনাটি বনগাঁ শহরে ট’বাজার এলাকার। ক্রেতা-বিক্রেতাদের আশঙ্কা, যে কোনও সময়ে বিদ্যুৎবাহী তার ছিঁড়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কিছু তার আবার জোড়াতালি দেওয়া। ঝড়-বৃষ্টিতে বিপদের আশঙ্কা আরও বেড়ে যায়। বাজারে যাওয়া মানুষজন দাবি তুলেছেন, বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে থাকা তার সরানো হোক। ট'বাজারে অনেক বসতবাড়ি আছে। শুক্রবার সকালে ট’বাজারের মধ্যেই এক বাড়িতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মা-ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় অনেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। বাড়ি ও দোকানপাট থেকে বিপজ্জনক তার সরানোর দাবি জোরদার হয়েছে।

মৃতদের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে মা-ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছেন। তিনি ছেলেকে হাত ধরে টান দিয়েছিলেন। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্তারা জানান, চোখের সামনে কাউকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হতে দেখলে তাঁকে বাঁচানোর জন্য হাত ধরে টানা উচিত নয়। শুকনো কাঠ বা বাঁশ দিয়ে তাঁকে ছাড়ানোর চেষ্টা করা উচিত। খেয়াল রাখতে হবে, বাঁশ বা কাঠ যেন ভেজা না থাকে। শাড়ি, গামছা, পোশাক এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করা উচিত নয়। বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্তা বলেন, ‘‘চোখের সামনে বিপদ দেখলে অনেকেই কী করবেন বুঝতে না পেরে হাত ধরে টেনে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। এ বিষয়ে বিদ্যুৎ দফতরের পক্ষ থেকে নিয়মিত মানুষকে সচেতন করা হয়।’’

অনেকে বাড়িতে জামা- কাপড় মেলার জন্য জিআই তার বা লোহার তার ব্যবহার করেন। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্তারা জানাচ্ছেন, এটাও বিপজ্জনক কাজ। জামাকাপড় মেলার কাজে সব সময়ে প্লাস্টিকের তার ব্যবহার করা উচিত।

বিদ্যুৎ বিভাগের বক্তব্য, ট’বাজার এলাকায় বিদ্যুতের যে তারের লাইন আছে, তা কেব্‌ল দিয়ে মোড়া। তাতে বিপদের আশঙ্কা নেই। সমস্যা হচ্ছে, বাড়ি বা দোকান পর্যন্ত যে তার টানা হয়, তা নিয়েই। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার পক্ষ থেকে এদিনই ট’বাজারে গিয়ে বিদ্যুতের তারের পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখা হয়েছে।

বনগাঁ শহরের অন্যতম বড় বাজার ট’বাজার। রোজ কয়েক হাজার মানুষ আসেন। ঘিঞ্জি এলাকায় আগুন লাগলে দমকলের গাড়ি ভিতরে ঢুকতে পারে না। মাথার উপরে বিদ্যুতের তার ঝুলে থাকে। পর পর দোকানপাট। ক্রেতারা জানান, ঝড়-বৃষ্টিতে তার ছিঁড়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। সে সময়ে বাজারে ঢুকতে ভয় লাগে। অনেক দোকানি তার টেনে দোকানে আলো জ্বালান। দোকানিদের মাথার উপরে তার ঝুলে থাকে। ক্রেতাদের বক্তব্য, বিদ্যুতের তারগুলি রাস্তায় লাইনের তারের মতো কেব‌‌্লে মুড়ে দিলে বিপদের আশঙ্কা কমবে।

ট’বাজারের বাসিন্দা রাধারমণ পাল বলেন, ‘‘ট'বাজারে বিদ্যুতের তার মাকড়সার জালের মতো কুণ্ডলী পাকিয়ে আছে। বিপদের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করতে হয়। আমরা চাই প্রশাসন সুরক্ষার ব্যবস্থা করুক।’’

মৃত্যুর ঘটনার পরেই পুরসভার বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা ট’বাজারে গিয়ে বিপজ্জনক বিদ্যুতের তার নিয়ে সমীক্ষা শুরু করেছেন। পুরপ্রশাসক গোপাল শেঠ বলেন, ‘‘ট’বাজারে থাকা বিপজ্জনক বিদ্যুতের তার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সরানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ দফতরের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। বিপজ্জনক তারগুলি সব পাইপ লাইনের মধ্যে দিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। যাতে তারগুলি ছড়িয়ে ছিটিয়ে না থাকে।

অন্য বিষয়গুলি:

Electric Hooking
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE