অন্য বাজির সঙ্গেই বিক্রি হচ্ছে চকলেট বোমা। নিজস্ব চিত্র।
দিনকয়েক আগেই বারুইপুরে সাদার্ন বাইপাস থেকে প্রচুর নিষিদ্ধ শব্দবাজি-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, চম্পাহাটির হারাল থেকে বাজি কিনে ব্যবসার জন্য উস্তিতে নিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁরা। তাঁদের কাছ থেকে পুলিশ প্রায় হাজার তিনেক শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করে বলে দাবি করা হয়। এই ঘটনাতেই বোঝা যায়, বার বার পুলিশি
অভিযান ও ধরপাকড়েও হারালে নিষিদ্ধ বাজির উৎপাদন ও বিক্রিতে রাশ টানা যায়নি। সম্প্রতি হারালের বাজি বাজার ঘুরেও চোখে পড়ল একই ছবি। দেখা গেল, বাজার জুড়ে কার্যত প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে চকলেট বোমা, দোদমা, কালীপটকার মতো নিষিদ্ধ শব্দবাজি।
বাজি তৈরি ও বিক্রির জন্য প্রসিদ্ধ চম্পাহাটির হারাল। এই এলাকায় কার্যত ঘরে ঘরে বাজি তৈরি হয়। এমনকি, বাজি বিক্রির জন্য এলাকায় বেশ কিছু স্থায়ী দোকানও রয়েছে। পাশাপাশি, কালীপুজোর আগে রাস্তার দু’ধারে প্রচুর অস্থায়ী দোকানও বসে যায়। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা তো বটেই, এমনকি, ভিন্ রাজ্য থেকেও ক্রেতারা আসেন এই এলাকায় বাজি কিনতে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রশাসনের তরফে সবুজ বাজি তৈরির অনুমতি পেয়েছেন ওই এলাকার ২২ জন বাজি প্রস্তুতকারক। পাশাপাশি, তামিলনাড়ুর শিবকাশী থেকেও এখানে প্রচুর সবুজ বাজির আমদানি হয়। স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির দাবি, এলাকার দোকানগুলিতে শুধুমাত্র শংসাপত্রপ্রাপ্ত সবুজ বাজিই বিক্রি করা হচ্ছে।
কিন্তু এলাকা ঘুরে চোখে পড়ল অন্য ছবি। দেখা গেল, দোকানে দোকানে সবুজ বাজি রাখা রয়েছে ঠিকই। তবে, তার সঙ্গেই দেদার নিষিদ্ধ শব্দবাজিও রয়েছে। অন্য বাজির আড়ালে শব্দবাজি রাখা থাকছে। ক্রেতারা চাইলেই বার করে দিচ্ছেন বিক্রেতা। অস্থায়ী দোকানে শব্দবাজি মিলছে বেশি। স্থানীয় সূত্রের খবর, এই বিপুল শব্দবাজি তৈরি হচ্ছে এলাকাতেই। সবুজ বাজি তৈরির অনুমতি সবাই পাননি। তা ছাড়া, সবুজ বাজি তৈরির খরচও বেশি। আবার বাইরে থেকে আমদানি করে বাজি বিক্রি করলে বেশি লাভ থাকে না। সেখানে নিজেদের তৈরি চকলেট, দোদমা বিক্রি করলে লাভ অনেক বেশি। সেই কারণেই ব্যবসায়ীদের বড় অংশ নিষিদ্ধ বাজি তৈরি চালিয়ে যাচ্ছেন।
ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, নিষিদ্ধ ঘোষণা হলেও বিপুল চাহিদা রয়েছে এই শব্দবাজির। এক-একটি দোকান থেকেই রোজ কয়েক হাজার বাজি বিক্রি হচ্ছে। খুচরোর পাশাপাশি পাইকারি ক্রেতারাও কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এক ব্যবসায়ীর কথায়, “কিছু ক্রেতা আছেন, যাঁরা অন্য বাজি কিনতে চান না। তাঁরা শুধু শব্দবাজিই কিনতে আসেন।” ‘চম্পাহাটি হারাল আতশবাজি ব্যবসায়ী সমিতি’র মুখপাত্র শঙ্কর মণ্ডল অবশ্য বলেন, “এখানে ব্যবসায়ী সমিতির অনুমোদিত পাঁচশোরও বেশি দোকান রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, তাঁরা শুধুমাত্র সবুজ বাজিই বিক্রি করছেন। শব্দবাজি বিক্রি পুরোপুরি নিষিদ্ধ। তার পরেও কেউ বিক্রি করলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বারুইপুরের এসডিপিও অতীশ বিশ্বাস বলেন, “নিষিদ্ধ বাজির বিরুদ্ধে আমরা লাগাতার অভিযান চালাচ্ছি। ইতিমধ্যেই কয়েক দফায় বেশ কিছু বাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আগামী দিনে আবারও অভিযান হবে।” যদিও প্রশ্ন উঠছে, প্রশাসন বা স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির নজর এড়িয়ে এ ভাবে এলাকায় বিপুল বাজি তৈরি ও বিক্রি আদৌ সম্ভব কিনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy