স্কুল চত্বরে পুলিশ। ছবি: সামসুল হুদা
পরীক্ষাকেন্দ্রে কড়া নজরদারি দিয়ে ‘খেসারত’ গুনতে হল মাস্টারমশাইদের।
বৃহস্পতিবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার বাধে ভাঙড় হাইস্কুলে। অভিযোগ, টোকাটুকিতে বাধা দেওয়ায় কয়েক জন শিক্ষককে পরীক্ষার পরে মারধর করে কিছু ছাত্র। হাতের আঙুল ভাঙে এক শিক্ষকের। তাদের প্রতিহত করতে গিয়ে মারপিটে জড়িয়ে পড়ে আরও কিছু ছেলে। দু’পক্ষের সংঘর্ষে জখম হয় কয়েক জন। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে জখম হন এক পুলিশ কর্মী। ছাত্রদের উপরে লাঠি চালানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। সে কথা অবশ্য মানেনি তারা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ভাঙড় হাইস্কুলে পরীক্ষা দিচ্ছে কাঁঠালিয়া ও কারবালা হাইস্কুলের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। এ দিন পদার্থবিদ্যা ও এডুকেশন পরীক্ষা ছিল। অভিযোগ, ছাত্রছাত্রীরা টোকাটুকি করতে গেলে শিক্ষকেরা বাধা দেন। অভিযোগ, পরীক্ষা চলাকালীনই ওই শিক্ষকদের হুমকি দেয় পরীক্ষার্থীরা। অবাধ্য ছাত্রদের উত্তরপত্র বাতিল (আরএ) করে দেওয়ার কথা বলেন শিক্ষকরা। তাতেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়নি।
পরীক্ষা শেষে কাঁঠালিয়া হাইস্কুলের কয়েক জন ছাত্র স্কুল চত্বরেই বিক্ষোভ শুরু করে। কয়েক জন ক্লাসঘরে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। শিক্ষকেরা বাধা দিলে ছাত্রেরা তাঁদের উপরে চড়াও হয়। মারধরে রবিউল আওয়াল নামে এক শিক্ষকের আঙুল ভাঙে। তাঁকে ভাঙড়ের নলমুড়ি ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা শেষ হতেই দুপুর ২টো থেকে ওই স্কুলে একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের পরীক্ষা ছিল। ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে পৌঁছে জানতে পারে, শিক্ষককে মারধর করেছে বহিরাগত ছাত্রেরা। কাঁঠালিয়া হাইস্কুলের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের উপরে পাল্টা চড়াও হয় ভাঙড় হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণির কিছু পড়ুয়া। দু’পক্ষের মারামারি বেধে যায়। ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। কয়েক জন ছাত্র জখম হয়। খবর পেয়ে স্কুলে আসে পুলিশ। পুলিশের দাবি, মারমুখী ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে গিয়েছিলেন কর্মীরা। তবে কিছু ছাত্রের দাবি, পুলিশ লাঠি চালিয়েছে। এর জেরে পুলিশের উপরে চড়াও হয় ওই ছাত্রেরা। নবকুমার দাস নামে এক পুলিশ কর্মী জখম হন। ঘটনাস্থলে আসেন তৃণমূলের ছাত্রনেতা সাবিরুল ইসলাম। তিনি ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলে সেখান থেকে সরিয়ে দেন। নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলের একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা শুরু হয়।
কাঁঠালিয়া হাইস্কুলের এক পরীক্ষার্থীর কথায়, “ভাঙড় হাইস্কুলে গার্ড দেওয়ার নামে শিক্ষকেরা বার বার সন্দেহ করে খাতা-প্রশ্নপত্র পরীক্ষা করছিলেন। এতে পরীক্ষা দিতে সমস্যা হচ্ছিল। প্রতিবাদ করলে ওই শিক্ষকেরা খাতা বাতিল করার হুমকি দেন। সে কারণেই পরীক্ষা শেষে বিক্ষোভ দেখায় পরীক্ষার্থীরা। পুলিশের মারে আমাদের কয়েক জন বন্ধু জখম হয়েছে।”
ভাঙড় হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক গোবিন্দচন্দ্র সরকারের কথায়, “পরীক্ষার্থীরা অসৎ উপায় অবলম্বন করতে চাইছিল। শিক্ষকেরা তা মেনে নেননি। পরীক্ষা শেষে ওই ছাত্রেরা স্কুলে ভাঙচুর চালাতে গেলে শিক্ষকেরা বাধা দেন। তখনই ওদের মারে আমাদের এক শিক্ষকের হাত ভেঙে যায়।” পুলিশের ভূমিকা সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য, “কেউ যদি স্কুলের পরিবেশ নষ্ট করতে চায়, পুলিশের কাজে বাধা দেয়, তা হলে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে পারে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy