রুবিনার বাড়িতে মাস্টারমশাই। নিজস্ব চিত্র।
বাবা ভ্যান চালক। মা বিড়ি শ্রমিক। সংসারে অভাব নিত্যসঙ্গী। এর মধ্যে পড়াশোনা চালিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে ৯৫ শতাংশ নম্বর পেল হাসনাবাদের বরুণহাট হাই স্কুলের ছাত্রী রুবিনা খাতুন। তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৭৯। হাসনাবাদের মঙ্গলআটি গ্রামে দরমার বেড়া দেওয়া এক চিলতে ঘরে বাবা, মা ও ভাইয়ের সঙ্গে থাকে রুবিনা। মা সাকিলা বিবির কথায়, “মেয়ে খুব কষ্ট করে পড়াশোনা করেছে। প্রথম থেকেই পড়াশোনায় খুব ভাল। তবে আমরা ওকে ঠিক মতো বইপত্র কিনে দিতে পারতাম না। পুরনো বই সংগ্রহ করে পড়ত। অনেক কষ্টে তিন জন গৃহশিক্ষক রেখেছিলাম। একটু ভাল খাবার-দাবারও জুটত না মেয়েটার।”
রুবিনা জানায়, পড়াশোনা নিয়েই বেশিরভাগ সময় কাটাত সে। অবসরে মায়ের সঙ্গে বিড়ি বাধার কাজে সাহায্য করত। রুবিনা চায় ভূগোল নিয়ে টাকি সরকারি কলেজে পড়াশোনা করে ভবিষ্যতে স্কুলের শিক্ষিকা হতে। স্কুলের নিয়োগ নিয়ে এই টালমাটাল পরিস্থিতি দেখে ভয় করছে না শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখতে? রুবিনার কথায়, “ছোট থেকে স্কুলের শিক্ষকদের দেখে বড় হয়েছি। ভেবেছি বড় হয়ে শিক্ষকই হতে হবে। এখনও সেই স্বপ্ন দেখি। আশা করি, স্বপ্নপূরণ হবে।”
কিন্তু মেয়ের উচ্চ শিক্ষার খরচ কী ভাবে সামলাবেন জানেন না ভ্যানচালক বাবা রব্বানি সর্দার। তিনি বলেন, “যদি কোন আর্থিক সাহায্য মিলত, তাহ লে মেয়ের পড়াশোনা চালিয়ে নিয়ে যেতে সুবিধা হত। ভ্যান চালিয়ে খুব সামান্য আয় হয়। তা দিয়ে সংসার চালাতেই হিমসিম খেতে হয়।”
ছাত্রীর সাফল্যে বাড়ি এসে সংবর্ধনা দিয়ে গিয়েছেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আজিজুল হক। আজিজুল বলেন, “রুবিনার এই ফলাফল আমাদের গর্বিত করেছে। স্কুল ওর পাশে থাকবে।” রুবিনার বাড়িতে গিয়ে সংবর্ধনা দেন হিঙ্গলগঞ্জের বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল, হাসনাবাদ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আমিরুল ইসলাম। বিধায়ক বলেন, “রুবিনার পড়াশোনা চালিয়ে নিয়ে যেতে কোনও সমস্যা হবে না। আমরা সাহায্য করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy