মায়ের সঙ্গে নুরউদ্দিন
বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর জন্য অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে খাবার চেয়েও পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ তুললেন মা। ঘটনাটি ভাঙড়ের কাশীপুর থানার কাশীপুর সর্দারপাড়ার ১২৫ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের। গ্রামের বাসিন্দা নাজিরা বিবির ন’বছর আগে বিয়ে হয় ভাঙড়ের মাঝেরহাট গ্রামের বাসিন্দা হাফিজুল মোল্লার সঙ্গে। বছরখানেক পরে ছেলে হয়। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন হওয়ায় মা-ছেলেকে শ্বশুরবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। নাজিরা তাঁর ছেলে নুরউদ্দিন মোল্লাকে নিয়ে স্বামী র সঙ্গে কাশীপুরের সর্দার পাড়ায় বাপের বাড়িতে ওঠেন। পরে ওই দম্পতির আরও দু’টি সন্তান হয়।
বাড়িতে প্রসব করতে গিয়ে মাথায় আঘাত লাগে নুরউদ্দিনের। স্নায়ুতন্ত্র বিকল হয়ে যায় তার। এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে শুরু করে নানা সরকারি হাসপাতালে ঘুরেছেন ওই দম্পতি। কিন্তু ছেলেকে পুরোপুরি সুস্থ করতে পারেননি। বর্তমানে কাশীপুর বাজারে দিলীপকুমার পাল নামে এক চিকিৎসক চিকিৎসা করছেন। তিনি বলেন, ‘‘জন্মের সময়ে ওর মস্তিষ্কে আঘাতের কারণে এই সমস্যা।’’
নুরউদ্দিন সে ভাবে কিছু খেতে পারে না। মিড ডে মিলের রান্না করা গলা খিচুড়ি পছন্দ করে। ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কাছেই তার বাড়ি। মা অনেকবার সেখানে গিয়ে ছেলের খাবার চেয়ে আবেদন করেছেন। কিন্তু কেন্দ্র থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, পাঁচ বছর পর্যন্ত বাচ্চাদের জন্য পুষ্টিকর খাবার দেওয়ার নিয়ম। তার বেশি বয়সের বাচ্চাদের খাবার দেওয়ার নিয়ম নেই। নাজিরা বলেন, ‘‘আমার অসুস্থ ছেলে। জন্মের পর থেকে শ্বশুর-শাশুড়ি তাড়িয়ে দিয়েছে। অভাবের সংসারে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে অসুস্থ বাচ্চাটা খাবার পেলে কিছুটা সুরাহা হয়। বাচ্চাও ওই খাবার খেতে পছন্দ করে।’’ নাজিরা জানান, কয়েকবার প্রতিবন্ধী ভাতা পেয়েছিলেন। কিন্তু তা-ও বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী ঝর্না কর্মকার বলেন, ‘‘নাজিরার অন্য দুই সন্তানকে আমাদের কেন্দ্র থেকে খাবার দেওয়া হয়। কিন্তু অন্য ছেলেটির খাবারের জন্য আমাদের কাছে আবেদন করা হয়নি। তা ছাড়া, এমনিতেই নিয়ম অনুযায়ী ৫ বছরের উপরে শিশুকে খাবার দেওয়ার নিয়ম নেই।’’ ভাঙড় ২ ব্লকের সিডিপিও অর্পিতা রায় সান্যাল বলেন, ‘‘এ রকম কোনও ঘটনার কথা আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। মানবিক কারণে ওই শিশুর খাবার দেওয়া উচিত। যাতে সে খাবার পায়, সেই ব্যবস্থা করা হবে।’’ ভাঙড় ২ বিডিও কৌশিককুমার মাইতি বলেন, ‘‘যত দূর জানি, ওই শিশুটি মানবিক পেনশনের আওতাধীন। পরিবারটি যাতে সেই টাকা পান, সে ব্যাপারে ব্যবস্থা করা হবে।’’ ছবি: সামসুল হুদা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy