Advertisement
০৬ অক্টোবর ২০২৪
অনুপস্থিতির কারণ খুঁজতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের খোঁজ নিচ্ছেন প্রধান শিক্ষক
school

school: গেমের নেশায় স্কুলে যাচ্ছে না অনেক পড়ুয়া

অনলাইন ক্লাস করেনি, স্কুল খুললেও আসছে না, তারা কী অবস্থায় আছে, তা খোঁজ নিতে শুরু করে স্কুল।

পদক্ষেপ: স্কুলছুট রুখতে ছাত্রের বাড়িতে প্রধান শিক্ষক।

পদক্ষেপ: স্কুলছুট রুখতে ছাত্রের বাড়িতে প্রধান শিক্ষক। নিজস্ব চিত্র।

নবেন্দু ঘোষ 
হিঙ্গলগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২১ ০৮:৪৪
Share: Save:

নতুন করে স্কুল খুললেও সকলে আসছে না ক্লাসে। কেন এই পরিস্থিতি, তা দেখার জন্য ওই পড়ুয়াদের বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন হিঙ্গলগঞ্জের কনকনগর এসডি ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক পুলক রায়চৌধুরী।

স্কুল সূত্রের খবর, পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার ৩০ শতাংশের আশপাশে দেখে উদ্বিগ্ন হন সকলে। যারা অনলাইন ক্লাস করেনি, স্কুল খুললেও আসছে না, তারা কী অবস্থায় আছে, তা খোঁজ নিতে শুরু করে স্কুল। জানা যায়, নবম শ্রেণির ৫ ছাত্রী এবং দশম শ্রেণির ৮ ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গিয়েছে। কাজ খুঁজে নিয়েছে দশম শ্রেণির ৮ পড়ুয়া। এদের মধ্যে ৬ জন ভিন্‌ রাজ্যে চলে গিয়েছে। দু’জন গ্রামে কাজ করছে। এক ছাত্র ইঞ্জিন ভ্যান চালায়। আর এক জন গ্রিলের দোকানে কাজ করে। নবম শ্রেণির এক নাবালক সৌদি আরবে শ্রমিকের কাজে গিয়েছে বলেও জানতে পেরেছেন শিক্ষকেরা। ৫ নাবালক ভিন্‌ রাজ্যের শ্রমিকের কাজে চলে গিয়েছে।

পুলকের কথায়, ‘‘বেশ কিছু পড়ুয়া বাড়িতে থাকলেও অনলাইন গেমে এতটাই আসক্ত, স্কুলে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেম খেলছে বলেও জানতে পেরেছি আমরা।’’

দিনের বেলায় ছেলেমেয়েদের বাড়িতে গিয়ে অনেককে বাড়িতে পাওয়া যাচ্ছিল না। সোমবার রাতে স্কুলে থেকে যান পুলক। সন্ধ্যায় কয়েক জন ছাত্রের বাড়িতে যান। কলোনিপাড়ায় নবম শ্রেণির ছাত্রের বাড়িতে গিয়ে মায়ের থেকে জানতে পারেন, ছেলে সারাদিন অনলাইন গেম খেলে। তাই স্কুলে যেতে চায় না। ছেলেটিকে প্রধান শিক্ষক বোঝান, স্কুলে ফিরতে। সে কথা দিয়েছে, গেম খেলবে না। স্কুলে যাবে। মঙ্গলবার স্কুলে যায় সে। তার কথায়, ‘‘অনেকদিন স্কুল বন্ধ থাকায় অভ্যাস কিছুটা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তবে স্যার ও মাকে কথা দিয়েছি, আর স্কুল কামাই করব না। গেম খেলব না।’’

কলোনিপাড়ার বাসিন্দা এক ছাত্রের বাড়িতে যান পুলক। সে করোনা পরিস্থিতির শুরুতে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত। তারপর থেকে আর স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। জানা যায়, কলকাতায় একটি হোটেলে কাজ নিয়েছে। পরে চেন্নাইয়ে চিংড়ি মাছের ভেড়িতে শ্রমিকের কাজে নেয়। কিছুদিন হল বাড়ি ফিরেছে। পাড়ার দোকানে তাকে দেখেন প্রধান শিক্ষক। মাধ্যমিক পাস করাটা কত জরুরি, ছেলেটিকে বুঝিয়ে বলেন। স্কুলে ফিরতে চাইলে তাকে সব রকম ভাবে সাহায্য করা হবে বলে আশ্বাস দেন।

পুলক বলেন, ‘‘অনেক নাবালকের স্কুলছুট হয়ে যাওয়ার পিছনে একটা বড় কারণ, অভিভাবকদের অসচেতনতা। অনেকে টাকা রোজগারে নেমে পড়েছে। যে সব শিশু শ্রমিকদের কথা জানতে পারছি, তাদের মধ্যে যারা গ্রামে রয়েছে, তাদের স্কুলে ফেরাতে পারব বলে আশা রাখি।’’

প্রধান শিক্ষক জানান, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের নিয়েও এমন খোঁজখবর করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

school Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE