Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

মৃতের পরিবারের পাশে প্রশাসন

এ দিন মৃতদের বাড়িতে সমবেদনা জানাতে যান জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ ফিরোজ কামাল গাজি। তিনি বলেন, ‘‘অভাবের সংসারে হাল ধরেছিলেন বাকিবুল্লা এবং নাসিরুদ্দিন। তাঁদের মৃত্যু খুবই দুঃখজনক। আমরা সব রকম সাহায্য নিয়ে ওঁদের পরিবারের পাশে আছি।’’

শোকার্ত: নাসিরুদ্দিনের স্ত্রী-সন্তান। ছবি: নির্মল বসু

শোকার্ত: নাসিরুদ্দিনের স্ত্রী-সন্তান। ছবি: নির্মল বসু

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:১৬
Share: Save:

বাসন্তী হাইওয়ের দুর্ঘটনায় মৃত বাকিবুল্লা শেখ এবং নাসিরুদ্দিন গাজির দেহ হাসনাবাদ থানার ভবানীপুরের ঘোষালপুর ও উত্তর ইছাপুর গ্রামে আনা হলে শোকের ছায়া নামে এলাকায়। দুই তরতাজা যুবককে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে তাঁদের পরিবার। বুধবার তাঁদের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। হাসনাবাদের গ্রামের দু’টি পরিবারই অর্থকষ্টে দিন কাটায়। বুধবার বাকিবুল্লার খড়ের চালের ঘরের বারান্দায় বসেছিলেন তাঁর মা ফজিলা বিবি ও স্ত্রী রোজিনা বিবি। অন্তঃসত্ত্বা রোজিনা দুই সন্তানকে নিয়ে শোকার্ত। বললেন, ‘‘কাজ মিটিয়ে দ্রুত বাড়ি ফেরার কথা ছিল ওঁর। এ ভাবে কফিনবন্দি হয়ে যে বাড়ি ফিরবেন, স্বপ্নেও ভাবিনি।’’ ফজিলা বলেন, ‘‘বাকিবুল্লার বয়স যখন তিন, তখন ওর বাবা মারা যায়। তারপর থেকে বহু কষ্ট করে সংসার চালাচ্ছি। ছেলেদের মানুষ করতে চাষ করেছি, মাছ ধরেছি।’’ তিনি আরও জানান, বাকিবুল্লা কাপড়ের কাজ ধরায় সবে একটু সুদিনের মুখ দেখা যাচ্ছিল। তাঁর মৃত্যুতে আশা-ভরসা সব শেষ হয়ে গেল। দুই পরিবারের সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার ভোর ৪টে নাগাদ মালবাহী গাড়িতে করে নতুন পোশাক নিয়ে বাকিবুল্লা এবং নাসিরুদ্দিন-সহ এলাকার ১৩ জন কলকাতার মেটিয়াবুরুজের দিকে বেরিয়েছিলেন।

বাকিবুল্লার বাড়ি থেকে একটু এগোলেই নাসিরুদ্দিনের বাড়ি। পরিবারের এক মাত্র রোজগেরে সদস্য ছিলেন তিনি। দু’বছর হল মেটিয়াবুরুজে সেলাইয়ের কাজ জোগাড় করেছিলেন নাসিরুদ্দিন। তাঁর পরিবারের সদস্যদের দাবি, কয়েক মাস ধরে সেলাইয়ের কাজ করে নাসিরুদ্দিনের হাতে টাকা তেমন আসছিল না। নাসিরউদ্দিন সে দিন তাই মেটিয়াবুরুজ যাচ্ছিলেন বাড়তি রোজগারের আশায়। স্বামীর মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্ত্রী রেহেনা বিবি ও মেয়ে মারুফা খাতুন।

এ দিন মৃতদের বাড়িতে সমবেদনা জানাতে যান জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ ফিরোজ কামাল গাজি। তিনি বলেন, ‘‘অভাবের সংসারে হাল ধরেছিলেন বাকিবুল্লা এবং নাসিরুদ্দিন। তাঁদের মৃত্যু খুবই দুঃখজনক। আমরা সব রকম সাহায্য নিয়ে ওঁদের পরিবারের পাশে আছি।’’ হাসনাবাদের বিডিও অরিন্দম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মৃতদের পরিবারের হাতে ২ লক্ষ এবং আহতদের হাতে ৫০ হাজার টাকার চেক তুলে দেওয়া হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Basanti Highway Basanti Highway accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE