Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
মানুষকে সচেতন করতে তৎপর প্রশাসন

বাড়ছে স্ক্রাব টাইফাস 

বেশ কয়েকজন এই রোগে আক্রান্ত।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

সামসুল হুদা
ভাঙড় শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:০৪
Share: Save:

‘স্ক্রাব টাইফাস’ আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে এলাকায়।

বারুইপুর মহকুমা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বারুইপুর, সোনারপুর-সহ মহকুমার বেশ কয়েকটি ব্লক এলাকায় এই রোগ দেখা দিয়েছে। বেশ কয়েকজন এই রোগে আক্রান্ত। ইতিমধ্যে বারুইপুর ব্লক এলাকায় এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ ছাড়িয়েছে। ব্লক স্বাস্থ্য দফতর ও মহাকুমা স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হরেছে। মানুষকে সচেতন করতে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় লিফলেট, হ্যান্ডবিল বিলি করা হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে প্রশাসনের কর্মী ও স্বাস্থ্যকর্মীরা এলাকার জঞ্জাল, আবর্জনা, আগাছায় ভরা জঙ্গল পরিষ্কার করেছেন।

ভাঙড় ১ বিডিও সৌগত পাত্র বলেন, ‘‘আমাদের ব্লক এলাকায় এখনও পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্তের কোনও খবর নেই। আমরা প্রশাসনিক ভাবে তৎপর। ইতিমধ্যে এলাকায় সাফাই অভিযান চালাচ্ছি। মানুষকে সচেতন করতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’’

রোগের লক্ষণ

• পাঁচ-সাত দিন জ্বর থাকে।
• মাথা ও গায়ে ব্যথা।
• গায়ে লাল র‌্যাশ বেরোয়।
• মাইটের কামড়ের জায়গায় ঘা দেখা যায়।
• শ্বাসকষ্ট, রক্তপাত ও মাঝেমধ্যে জ্ঞান হারান রোগী।
কী থেকে এই রোগ হয়
• মাইট নামে এক ক্ষুদ্র পতঙ্গের কামড় বা লার্ভা থেকে এই রোগ হয়।
• মাইট খালি চোখে দেখা যায় না।

দিন কয়েক আগে টানা পাঁচদিনের জ্বর, গাঁটে গাঁটে ব্যথা, গায়ে ছোপ ছোপ ফোসকা পড়ার মতো দাগ নিয়ে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এক যুবক। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানান, ওই যুবকের ‘স্ক্রাব টাইফাস’ হয়েছে। সম্প্রতি সোনারপুরের বিদ্যাধরপুরে এক শিশুও এই রোগে আক্রান্ত হয়।

এমনিতেই ডেঙ্গি, জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের মতো মারণ রোগে অতিষ্ঠ মানুষ। তার উপর স্ক্রাব টাইফাসের মত রোগ ধরা পড়ায় আতঙ্কে ভুগছেন মানুষ। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, স্ক্রাব টাইফাসের মতো মারণ রোগ মাইট নামে ক্ষুদ্র এক পতঙ্গের কামড় থেকে ছড়ায়। এই রোগের জীবাণু ইঁদুরের দেহে থাকে। মাইট নামের ক্ষুদ্র পতঙ্গ যা খালি চোখে সহজে দেখা যায় না। মানুষের শরীরে মাইটের কামড় বা লার্ভা থেকে এই রোগ ছড়ায়। ‘ওরিয়েনসিয়া শুশুগামুসি’ নামক ব্যাক্টেরিয়া থেকে এই রোগ ছড়ায়। যদিও স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হন তাহলে রোগীর ৫-৭ দিন জ্বর, মাথা-গায়ে ব্যথা, গায়ে লাল লাল র‌্যাশ, মাইটের কামড়ের জায়গায় ঘা, কিছু ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট, রক্তপাত ও মাঝেমধ্যে জ্ঞান হারানোর মত উপসর্গ দেখা দিতে পারে। সাধারণত উত্তরবঙ্গের মিরিক এবং তরাই অঞ্চলের জঙ্গলে এই ধরনের মাইটের খোঁজ পাওয়া যায়। তবে এই রোগে কোনও রোগী আক্রান্ত হলে এবং তার সঠিক চিকিৎসা হলে দ্রুত আরোগ্য সম্ভব।

ভাঙড় ১ ও ২ ব্লক প্রশাসন ইতিমধ্যে এই রোগের বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা নিয়েছে। ব্লক এলাকায় ঝোপঝাড়, জঙ্গল, ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। কয়েকদিন আগে ভাঙড় ১ ব্লকের নারায়ণপুর অঞ্চলের ঘুনিমেঘি গ্রামে স্ক্রাব টাইফাস নিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। ব্লক প্রশাসন ও স্বাস্থ্য কর্তারা ওই এলাকায় গিয়ে মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি এলাকায় সচেতনতা শিবির করেন।

বারুইপুর মহকুমার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা মৃদুল ঘোষ বলেন, ‘‘বারুইপুর-সহ কয়েকটি ব্লক এলাকায় বেশ কয়েকজন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত মারা যাওয়ার কোনও খবর নেই। আমাদের স্বাস্থ্য কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন। প্রয়োজনীয় সব রকম ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Scrub typhus Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy