Advertisement
E-Paper

বিডিওকে ফোন করে নিজের বিয়ে রুখল ছাত্রী

প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই নাবালিকা মগরাহাটের শেরপুর রামচন্দ্রপুর হাইস্কুলের কৃতী ছাত্রী। এ বার সে মাধ্যমিক পাশ করেছে। ওই ছাত্রী পড়াশোনা করতে চায়। কিন্তু পরিবার তাতে নারাজ। তারা ওই নাবালিকার বিয়ের ঠিক করে।

প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

রাজীব চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:৪৫
Share
Save

বিয়ের পিঁড়িতে বসতে নারাজ মেয়ে। তবু তাকে জোর করে ছাদনা তলায় তুলছিল পরিবার। বিয়ে ভণ্ডুলের মরিয়া চেষ্টায় শেষে কোনওরকমে লোকচক্ষুর অন্তরালে গিয়ে নাবালিকা ফোন করেছিল বিডিও-কে। বিয়ের লগ্নের এক ঘণ্টা আগে পুলিশ গিয়ে বন্ধ করে দেয় তার বিয়ে। শনিবার রাতে মগরাহাট-১ ব্লকের সেকেন্দারপুর পঞ্চায়েতের একটি গ্রামের ঘটনা। প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই নাবালিকা মগরাহাটের শেরপুর রামচন্দ্রপুর হাইস্কুলের কৃতী ছাত্রী। এ বার সে মাধ্যমিক পাশ করেছে। ওই ছাত্রী পড়াশোনা করতে চায়। কিন্তু পরিবার তাতে নারাজ। তারা ওই নাবালিকার বিয়ের ঠিক করে।

রবিবার বিডিও (মগরাহাট-১) দেবাশিস মণ্ডল বলেন, ‘‘গতকাল সন্ধ্যায় অপরিচিত একটি নম্বর থেকে আমার মোবাইলে একটি ফোন আসে। ফোন ধরতেই ও প্রান্ত থেকে ভয়ার্ত গলায় একটি মেয়ে বলে, কিছুক্ষণের মধ্যেই তার বিয়ে হয়ে যাবে। কিন্তু ও বিয়েতে নারাজ। বাড়ির লোকজন তা শুনছে না। আমি আমি ওকে আশ্বস্ত করে বলি, পুলিশ কিছুক্ষণের মধ্যেই ও বাড়িতে যাবে।’’ বিডিও-কে ওই নাবালিকা ফোন করেছিল বেশ কৌশল করেই। বিডিও-র কথায়, ‘‘ফোনে ওর কথা শুনে আমি বুঝতে পারছিলাম, মেয়েটির সঙ্গে কয়েকজন আছে। কৌশলে তাদের অন্য কাজে ব্যস্ত করে দিয়ে আমাকে ফোনে সব কথা জানায়। এ-ও বলে, কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশ বা প্রশাসন না-এলে ওর বিয়ে আটকানো যাবে না। এক ঘণ্টার মধ্যেই ওই নাবালিকার বাড়ি পৌছে বিয়ে বন্ধ করি।’’

দোবাশিসবাবু আরও জানান, ওই নাবালিকাকে যে জোর করে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে তার পরিবার, তা স্থানীয় পঞ্চায়েত জানত। পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিরা মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করে। কিন্তু তাতে ফল হয়নি। এর পরেই ওই নাবালিকা তাঁর স্কুলের শিক্ষক পল্লব সেনগুপ্তকে ফোনে জানান। পল্লববাবু তাকে বিডিও-র নম্বর দেন।পল্লববাবু বলেন, ‘‘ওই ছাত্রী বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তায় এসে আমাকে ফোন করে জানায়, জোর করে তার বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমি তাকে বিডিও-র নম্বর দিই। ও সেই নম্বর ও ইট দিয়ে রাস্তায় লিখে রাখে। তারপর বিডিও-কে ফোন করে। আমিও গোটা ঘটনা পুলিশ ও ব্লক শিশু কল্যাণ আধিকারিককে জানাই। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ আমাকে জানায়, আমার ওই ছাত্রীর বাড়ি গিয়েছে পুলিশের একটি দল।’’ বিডিও বলেন, ‘‘আমরা মেয়েটির বিয়ে বন্ধ করতে পেরেছি। ওর বাবা মুচলেকা দিয়ে জানিয়েছে, তাঁর মেয়ে যতদিন পড়াশোনা করতে চাইবে, ততদিন তাকে পড়াশোনা করতে দেওয়া হবে। আপাতত ওই নাবালিকা তার বাড়িতেই রয়েছে। তার পরিবার এখন প্রশাসনের নজরবন্দি।’’

Child Marriage Magrahat

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}