Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
অমাবস্যার কটালে ভাঙল নদীবাঁধ
Flood

প্লাবিত এলাকা, ফের আশ্রয় পথে

ওই গ্রামের বাসিন্দা আরতি ঘোষের জানান, বাঁধটি পাকাপাকি ভাবে তৈরি করা হলে এই দুর্ভোগে পড়তে হত না। বাঁধ ভেঙে নোনা জল ঢোকায় চাষবাস, পুকুরের মাছ সব শেষ হয়ে গেল। কোনও ভাবে শাক সিদ্ধ খেয়ে দিন কাটাছে তাঁর। সরকারি ত্রাণ মেলেনি।  

প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
সাগর শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:১৪
Share: Save:

অমাবস্যার ভরা কটালে নদীবাঁধ ভেঙে জল ঢুকে প্লাবিত হয়েছে এলাকা। ভেসেছে ঘরবাড়ি। পুকুর, খাল, বিল ডুবে রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সাগর ব্লকের বঙ্কিমনগর গ্রামের বহু মানুষই ঘর ছেড়ে রাস্তায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ব্লকের ধসপাড়া সুমতিনগর ২ পঞ্চায়েতে বঙ্কিমনগর ও সুমতিনগর গ্রামের কাছে মাসখানেক আগে মুড়িগঙ্গা নদী বাঁধ প্রায় ৩ কিলোমিটার ভেঙে গিয়েছিল। তখনও এলাকা প্লাবিত হয়ে পুকুর, খাল, চাষের জমি নোনা জলে ডুবে যায়। প্রায় ২০০টি পরিবার আশ্রয় রাস্তার উপরে তাঁবু খাটিয়ে ছিলেন। সেচ দফতর থেকে মেশিনে মাটি কেটে বাঁধ তৈরি করার কাজ শুরু করে। মাসখানেক পরে সেই বাঁধের কাজ শেষ হয়। ফের অমাবস্যার কটালে জোয়ারের কয়েক মিটার বাঁধ ভেঙে জল ঢোকা শুরু করেছে। নোনা জল ঢুকে যায় ঘরের মধ্যে। সেই পরিবারগুলিকে রাস্তায় আশ্রয় নিতে হল। সরস্বতী প্রধান নামে এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘জোয়ারের সময়ে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট জলে ডুবে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে পরিবারের ৯ জনকে নিয়ে তাঁবুতে বাস করছি। সরকারি সাহায্যে বলতে একটাই ত্রিপল পেয়েছিলাম। ত্রাণের খাবার কিছুই পাইনি। প্রায় না খেয়ে চার দিন কেটে গেল।’’

ওই গ্রামের বাসিন্দা আরতি ঘোষের জানান, বাঁধটি পাকাপাকি ভাবে তৈরি করা হলে এই দুর্ভোগে পড়তে হত না। বাঁধ ভেঙে নোনা জল ঢোকায় চাষবাস, পুকুরের মাছ সব শেষ হয়ে গেল। কোনও ভাবে শাক সিদ্ধ খেয়ে দিন কাটাছে তাঁর। সরকারি ত্রাণ মেলেনি। এ বিষয়ে ধসপাড়া সুমতিনগর ২ পঞ্চায়েতের প্রধান বিপিন পড়ুয়া বলেন, ‘‘গত কটালের সময়ে সুমতিনগর ও বঙ্কিমনগর দুই গ্রামে নোনা জল ঢুকে ৪০টির মতো মাটির বাড়ি ভেঙে পড়েছিল। তাঁরাই ওখানে তাঁবু খাটিয়ে রয়েছেন। বর্ষা কাটলে ওঁদের বাড়িগুলি সংস্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ স্থানীয় একটি ক্লাব থেকে সকলের জন্য ত্রিপল ও ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেল।

নামখানা ব্লকের মৌসুনি পঞ্চায়েতে মুড়িগঙ্গা ও সমুদ্রবাঁধ প্রায় ১১০০ মিটার আগে থেকেই ভেঙে রয়েছে। ওই বাঁধ পাকাপাকি ভাবে তৈরির জন্য প্রায় ২৩ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কিন্ত বর্ষার জন্য কাজ শুরু করা যায়নি। ফলে ওই ভাঙা বাঁধ দিয়ে চার দিন ধরে নোনা জল ঢুকে পড়েছে। গৃহহীন হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার। অনেকে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে চলে গিয়েছেন। স্থানীয় স্কুল ঘরেও আশ্রয় নিয়েছেন কেউ কেউ। তবে এখনও পর্যন্ত সরকারি ত্রাণের ব্যবস্থা হয়নি বলে অভিযোগ।

এলাকার বাসিন্দা নামখানা পঞ্চায়েতে সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শুভেন্দু মান্না বলেন, ‘‘ত্রাণের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’একই ভাবে প্লাবিত সাগরের ধবলাট পঞ্চায়েতে মনসাবাজার ও বোটখালি এলাকা। রাস্তা, ঘরবাড়ি জলের তলায়।এ বিষয়ে সেচ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নদী ও সমুদ্রের জল বেড়ে যাওয়ায় বাঁধ উপচে এলাকায় জল ঢুকে পড়েছে। তবে জল নেমে গেলেই আবার বাঁধ মেরামতি করা হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Flood Sagar Sundarban
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy