দেখা-নেই: বাজার কবে ভরে উঠবে ইলিশে, এখন অপেক্ষা। ফাইল চিত্র
বর্ষার দেখা নেই, দেখা নেই ইলিশেরও।
অথচ মরসুম শুরু হয়েছে দু’মাস হতে চলল। কিন্তু গভীর সমুদ্রে রুপোলি শস্যের দেখা না মেলায় হতাশ মৎস্যজীবী, ট্রলার মালিকেরা।
মৎস্য দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গভীর সমুদ্রে ইলিশ ধরার মরসুম শুরু হয় জুন মাসের প্রথমে। কাকদ্বীপ মহকুমার শুধু কাকদ্বীপ ব্লকেই ৯৫ শতাংশ মৎস্যজীবী পরিবারের বাস। মরসুমের তিন মাস তাঁদের ব্যস্ততা থাকে বেশি। বাকি ন’মাস মাছ ধরার কাজ খুব বেশি থাকে না। ইলিশের মরসুম বাদ দিয়ে বাকি বছর খরচ চালাতে ট্রলার মালিকের কাছ থেকে অনেকেই টাকা ধার নেন।
এ বছর এখনও পর্যন্ত প্রতিটি ট্রলার ৪-৫ ট্রিপ দিয়েও প্রায় খালি হাতেই ফিরেছে। সমুদ্রে যাওয়ার খরচও প্রচুর। ট্রলারে বরফ, জ্বালানি তেল, ১০-১৫ দিনের মতো খাবার নিতে হয়। সব মিলিয়ে এক-দেড় লক্ষ টাকা বরাদ্দ রাখতে হয়। কিন্তু এত টাকা খরচ করে সমুদ্রে গিয়ে খালি হাতে ফেরায় মালিক এবং মৎস্যজীবী দু’পক্ষই অর্থনৈতিক সংকটে পড়ছে।
ইতিমধ্যেই প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে ট্রলার দুর্ঘটনায় নিখোঁজ হয়েছেন ২৩ জন মৎস্যজীবী। বিপদের আশঙ্কায় সমুদ্রে যাওয়ার অনীহা, অন্য দিকে, মাছ না মেলায় দুশ্চিন্তা— দু’য়ে মিলে উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছেন মৎস্যজীবীরা।
প্রতি বছর এই সময়ে কলকাতা থেকে পুরনো শাড়ি বিক্রেতারা আসেন কাকদ্বীপের মৎস্যজীবী অধ্যুষিত এই অঞ্চলে। মৎস্যজীবীদের হাতে এই সময়ে ভাল টাকা থাকে বলে শাড়িওয়ালাদের বিক্রিবাটাও ভাল হয়। কিন্তু এ বার সেখানেও মন্দা। অক্ষয়নগর কালীনগর গ্রামে আসা এ রকম এক পুরনো শাড়িবিক্রেতা আক্ষেপের সঙ্গে জানালেন, সারা এলাকা চষে ফেললেও কেউ তাঁর কাছে শাড়ি দেখতে চাননি। বিক্রি তো দূরের কথা!
গ্রামের মৎস্যজীবী পালন দাস, হরিপদ দাসেরা বলেন, ‘‘এই তিন মাস আমরা ট্রলারে গিয়ে একটু পয়সার মুখ দেখি। ফলে এই সময়টাই পরিবারের আবদার একটু-আধটু মেটাই। কিন্তু এ বারে হাতে পয়সাকড়ি নেই। কী করে সংসার চলবে, জানি না। ট্রলার মালিকের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছি। সেই ঋণ কী ভাবে শোধ করব, ভেবে পাচ্ছি না।’’
মৎস্য দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ফি বছর এ সময়ে কাকদ্বীপ, নামখানা, ফ্রেজারগঞ্জ, সাগর এলাকা থেকে প্রায় ২৬০০টি ট্রলার গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়। ট্রলার-পিছু মৎস্যজীবী থাকেন ১৫-১৭ জন। মাছ না মেলায় কয়েক হাজার মৎস্যজীবী সংকটে পড়েছেন।
কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী কল্যাণ সমিতির সম্পাদক বিজন মাইতি বলেন, ‘‘চার নম্বর ট্রিপে গিয়েছেন মৎস্যজীবীরা। আবহাওয়া দফতর নিম্নচাপের কারণে গভীর সমুদ্রে দুর্যোগের আশঙ্কার কথা ঘোষণার পরে তাঁদের ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে ফিরতে বলা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy