ঝুঁকি: এ ভাবেই পারাপার। ছবি: দিলীপ নস্কর
ভাটার সময়ে ঘাটে লঞ্চ ঢোকাতে না পেরে জেটির সঙ্গে কাঠের পাটাতন লাগিয়ে ওঠানামা করতে হয়। যে কোনও সময়ে বিপদ ঘটতে পারে। সাগরের বেনুবন জেটিঘাটে বেহাল পরিকাঠামোয় জন্য এমনই দুর্ভোগ যাত্রীদের।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাগরদ্বীপের কপিল মুনির আশ্রম দেখতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তো বটেই, দেশের বহু জাগা থেকেও মানুষ আসেন। কাকদ্বীপের লট ৮ ঘাট থেকে মুড়িগঙ্গা নদী পার হয়ে কচুবেড়িয়া ঘাট থেকে গঙ্গাসাগরে পৌঁছতে হয়। এ ছাড়া, সাগর দ্বীপের বাসিন্দাদের নিত্য প্রয়োজনে কলকাতা, কাকদ্বীপ বা ডায়মন্ড হারবার শহরে যেতে হলে কচুবেড়িয়া ঘাট থেকে মুড়িগঙ্গা পেরোতে হয়। লট ৮ ঘাটে এসে সেখান থেকে সড়ক পথে গাড়ি মেলে। কিন্তু বছর পনেরো ধরে নদীতে চরা পড়ে যাওয়ায় অমাবস্যা বা পূর্ণিমায় ভাটার সময়ে ভেসেল দীর্ঘক্ষণ বন্ধ থাকে। জোয়ারের অপেক্ষায় থাকতে হয় যাত্রীদের।
এই সমস্যার সমাধানের জন্য প্রশাসনের উদ্যোগে সাগরের বেনুবনের কাছে নতুন একটি জেটিঘাট চালু হয়। ২০১২ সালে নামখানা থেকে মুড়িগঙ্গা নদী হয়ে চেমাগুড়ি খাল দিয়ে বেনুবন ঘাটে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়।বেনুবন ঘাটে ঢোকার আগে প্রায় আধ কিলোমিটার চিমাগুড়ি খালপথ দিয়ে ঘাটে পৌঁছনোয়। ওই খালপথে ভাটার সময়ে জল কমে যায়। নৌকো ঘাটে ঢোকাতে সমস্যা হয়। লঞ্চ অতি ধীর গতিতে ঘাটে ঢোকে। মাঝে মধ্যে আটকেও পড়ে। তখন জোয়ারের অপেক্ষায় থাকা ছাড়া গতি নেই।
উল্টো দিকে নামখানা জেটি ঘাটের কাছে নির্দিষ্ট কোনও ঘাট নেই। এখানে ওখানে দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানামা করাতে হয়। বর্ষার সময়ে ঘাটে ওঠানামা বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়ায়। বেনুবন ঘাটের কর্মীদের অভিযোগ, প্রতিবছর জেটির কাঠের পাটাতন পাল্টাতে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ হচ্ছে। কংক্রিটের জেটি তৈরি করলে এই সমস্যা থাকবে না। গঙ্গাসাগর মেলা এলেই খাল ড্রেজিং করা হয়। কিন্তু ড্রেজিং করার পরে পলি বাঁধের পাশেই ফেলে রাখা হয়। ফলে আবার বছর না ঘুরতেই পলিমাটি খালে মিশে যায়।
কাকদ্বীপের মহকুমাশাসক সৌভিক চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই খালটির চর কাটার জন্য সেচ দফতরের সঙ্গে কথা হয়েছে।’’
বেনুবন জেটিঘাট নানা সমস্যায় জর্জরিত। লোহার কাঠামোর সঙ্গে কাঠের পাটাতন দেওয়া জেটি। ফি বছর সাগর মেলার সময়ে কাঠের পাটাতন পাল্টাতে হয়। সে সময়ে যাত্রীদের ওঠানামা করতে সমস্যা হয়। ঘাটে আলোর ব্যবস্থা নেই। পানীয় জলের একটিমাত্র নলকূপ। কোনও ভাবে তা খারাপ হলে জল কিনে খাওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। পুরুষ-মহিলাদের জন্য দু’টি শৌচালয় রয়েছে বটে, কিন্তু অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে গেলে লাইন পড়ে যায়।
ঘাট থেকে কপিলমুনি মন্দিরে পৌঁছনোর সাড়ে ৪ কিলোমিটার রাস্তার ১ কিলোমিটারে ইট পাতা। বর্ষায় রাস্তা জলে ডুবে থাকে। রাস্তাটি কংক্রিটের করার জন্য প্রশাসনের কাছে একাধিকবার আবেদন জানানো হলেও কাজ হয়নি। রাস্তায় আলো না থাকায় সন্ধের পরে চলাচলে সমস্যা হয়। সমস্যাগুলি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মহকুমাশাসক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy