বিপত্তি: চাষের জমিতে এখনও এই অবস্থা।
জল জমে গিয়েছে স্বরূপনগরের বিস্তীর্ণ এলাকায়। অতিরিক্ত বৃষ্টি তো বটেই, তার সঙ্গে ইছামতী, যমুনা এবং পদ্মা নদীতে জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় এলাকা জলমগ্ন।
বিডিও কৃষ্ণগোপাল ধাড়া বলেন, “স্বরূপনগরের কিছু এলাকায় জল জমে যাওয়ায় কয়েকজনকে শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ফসলেরও ক্ষতি হয়েছে। যে সব বাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছে, সেই বাড়ির বাসিন্দাদের চাল, পলিথিন-সহ ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বরূপনগর ব্লকের ১০টি পঞ্চায়েত। ইছামতী নদীর এক দিকে তিনটি, অন্য দিকে সাতটি পঞ্চায়েত এলাকা। এই ব্লকের মধ্যে বিলবল্লি রাজ্যের মধ্যে অন্যতম বড় জলাশয়। ওই ব্লকের মধ্যে সোনাই নদী-সহ বেশ কয়েকটি বিল ও বাওড় আছে। এই ব্লকের চারঘাট পঞ্চায়েতের টিপি সংলগ্ন এলাকায় যমুনা ও পদ্মা এক সঙ্গে মিলেছে। তেঁতুলিয়া থেকে তরণীপুর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকার নদীর ধার জবরদখল করে ছোট ছোট মাছের ভেড়ি এবং পাটা দিয়ে জল আটকে ফসলের চাষ করা হয়। এর ফলে নদীর অপরিসর হয়ে গিয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই জল উপচে দু’পাশের জনজীবন বিধ্বস্ত করে তুলছে বলে অভিযোগ।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মাঝে মাঝে নদী থেকে পলি তোলার কাজ করা হলেও তা ফের নদীর পাশেই জড়ো করা হয়। বর্ষার জলে ধুয়ে গিয়ে সেই পলি ফের নদীতেই পড়ে যায়।
স্বরূপনগরে নিকাশি অব্যবস্থার কারণে বৃষ্টিতে নদীর দু’দিকের চাষের জমি, বাড়ি জলে ডুবে যায়। এ বারও একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। চারঘাট, শগুনা, গোবিন্দপুর, শাঁড়াপুল এবং শাঁড়াপুল পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি গ্রামের বড় এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ রমেন সর্দার বলেন, “নিচু জায়গায় জমা জল দ্রুত বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। দুর্গত মানুষের জন্য পলিথিন এবং ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
মালঙ্গপাড়ার পুলক বিশ্বাস, খর্দরসিংহ গ্রামের কুতুবুদ্দিন গাজিরা জানালেন, নদীর পলি ঠিক মতো না তোলার কারণে প্রতি বছর বর্ষায় এলাকা জলে ডুবে যায়। ২০০৮ সালে করা স্লুস গেট ২০১৬ সাল পর্যন্ত ঠিকঠাক চলার পরে উপযুক্ত মেরামতির অভাব দেখা দিয়েছে। এখন তা ঠিকঠাক কাজ করছে না। ফলে গ্রামের মধ্যে এবং চাষের জমিতে হাঁটুসমান জল। ধান ও আনাজের ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয় কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নিম্নচাপের ফলে এলাকায় প্রায় ৫ হাজার ৬২৫ হেক্টর আমন ধান এবং ১২০০ হেক্টর আনাজের ফসল জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। স্বরূপনগর পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি প্রদীপ্ত মণ্ডল বলেন, “ভারী বৃষ্টির কারণে জলবন্দি মানুষকে সব রকম ভাবে সাহায্য করা হচ্ছে। চাষের ক্ষতি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট সব দফতরের সঙ্গে কথা হয়েছে। দফতরগুলির আধিকারিকদের কাছ থেকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস মিলেছে। নালায় আবর্জনা ফেলা বন্ধ করতে সচেতনামূলক প্রচার করা হচ্ছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে কী ভাবে জল সরানো যায়, তার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy