বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন চাষিরা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
দালালদের দাপটে গাইঘাটার দেবীপুর কিসান মান্ডিতে ফসলের ন্যায্য দাম মিলছে না বলে অভিযোগ ছিল চাষিদের। এমনকি, ওই চক্রের খবরদারিতে বাইরে থেকে আনাজ কিনতে আসা ব্যবসায়ীদের একাংশও মান্ডিতে ঢুকতে পারেন না বলে অভিযোগ। এরই প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকালে চাষিরা মান্ডির কিসান বাজারের গেটে তালা বুঝিয়ে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
উদ্ভুত সমস্যার সমাধানে এ দিনই ব্লক অফিসে বিডিও নীলাদ্রি সরকার সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে মান্ডির ব্যবসা দেখভালের জন্য একটি কমিটি গড়ে দেন। বিডিও জানিয়েছেন, বাইরে থেকে আসা ব্যবসায়ীদের যাতে অসুবিধা না হয় সে জন্য তাঁদের নিরাপত্তা দেওয়া হবে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাদের মান্ডিতে ঢুকতে নিষেধ করা হয়েছে। সেখানে পুলিশ মোতায়েন থাকবে। পুলিশ জানিয়েছে, দালাল চক্রের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
সপ্তাহের বৃহস্পতি এবং রবিবার গাইঘাটা ব্লকের চাষিরা তাঁদের আনাজ বা ফসল ওই কিসান মান্ডিতে এনে পাইকারি বিক্রি করেন। চাষিদের অভিযোগ, কিছু দালাল সেখানে আনাজ বিক্রির দর নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের বেঁধে দেওয়া দরেই চাষিরা আনাজ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছিলেন। এতে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁরা ১৮ টাকা কেজি দরে পটল বিক্রি শুরু করেন। কিন্তু দালালেরা সেই দর কেজিপ্রতি ৮ টাকায় বেঁধে দেয়।
চাষিদের অভিযোগ, দালালেরা পাঁশকুড়া থেকে আসা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগসাজশে এই কাজ করে। এ জন্য পাঁশকুড়ার ব্যবসায়ীরা দালালদের টাকা দেন। চাষিদের দাবি, দালালেরা দিল্লি, হলদিয়া, ওড়িশা থেকে আনাজ কিনতে আসা ব্যবসায়ীদের কিসান মান্ডিতে ঢুকতে দেয় না। কারণ, তাদের সঙ্গে দালালদের যোগসাজশ নেই। বিক্রেতা (ভেন্ডার) সমিতির নাম করে কৃষকদের কাছ থেকে কুপন ছাপিয়ে ৫ টাকা করে তোলা হচ্ছিল বলেও অভিযোগ।
চাষিদের অভিযোগ শুনে এ দিন ব্লক কিসান তৃণমূলের পক্ষ থেকে ওই মান্ডিতে হানা দেওয়া হয়। কিসান তৃণমূলের নেতারা দালালদের খবরদারি বন্ধের হুঁশিয়ারি দেন। ব্লক কিসান তৃণমূলের তরফে কার্তিক পাল বলেন, ‘‘কৃষকরা বলছেন, মান্ডিতে আনাজ আনার সময় তাঁদের রাস্তায় বাধা দিচ্ছে দালালেরা। আনাজ নিয়ে কিসান বাজারে আসতে দেওয়া হচ্ছে না। মান্ডিতে ঠিকমতো বেচাকেনা চলছে না। ভবিষ্যতে এ জিনিস চলতে থাকলে পদক্ষেপ করা হবে।’’
কুপন বিলির সময় এ দিন কিসান তৃণমূলের লোকজন দু'জনকে হাতেনাতে ধরে তাদের মান্ডি থেকে তাড়িয়ে দেন। যদিও বিক্রেতা সমিতি সূত্রে জানানো হয়েছে, তারা বিক্রেতাদের কাছ থেকে কুপন দিয়ে টাকা নেয়। কোনও কৃষকের কাছ থেকে নেওয়া হয় না।
গোটা বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। দলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রকাম্ত দাসের দাবি, ‘‘এটা তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। ভাগ-বাটোয়ারার লড়াই। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ চাষি।’’ তৃণমূল অভিযোগ মানেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy