জয়নগরে উদ্ধার হওয়া রেড ইয়ারড স্লাইডার। নিজস্ব চিত্র।
তারা আদতে মেক্সিকো এবং আমেরিকার দক্ষিণ-পূর্বাংশের বাসিন্দা। কিন্তু রংচঙে চেহারা আর যে কোনও পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতার কারণে পোষ্য হিসেবে ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্ব জুড়ে। কিন্তু ‘রেড ইয়ারড স্লাইডার’ নামে এই কচ্ছপ মুক্ত পরিবেশে ‘অতি ক্ষতিকারক প্রজাতি’ হিসেবে চিহ্নিত। বুধবার এই প্রজাতির একটি কচ্ছপ মিলেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের চালতাবেড়িয়ায়। সুন্দরবন জীব পরিমণ্ডল (বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ) এলাকায় এই কচ্ছপের উপস্থিতি অশনি সঙ্কেত বলেই মনে করছেন প্রাণীবিদেরা।
স্থানীয় সূত্রের খবর, গ্রামবাসীরা কচ্ছপটি উদ্ধার করে পুলিশকে দেন। এরপর রেঞ্জ অফিসার স্বপন ভাণ্ডারী-সহ কয়েকজন বনকর্মী গিয়ে সেটি নিয়ে আসেন। সরীসৃপ বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ চৌধুরী জানিয়েছেন, কানের পাশে উজ্জ্বল লাল দাগের কারণে কচ্ছপটির এমন নাম। তিনি বলেন, ‘‘শিশু কচ্ছপগুলি বিচিত্র বর্ণের হয়। তাই অনেকেই শখ করে কিনে আনেন। কিন্তু এরা দ্রুত আয়তনে বাড়ে। ফলে বড় হলে জলাশয়ে ছেড়ে দেন।’’ সুন্দরবন এলাকায় তারা ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় জীববৈচিত্রের ক্ষতি অনিবার্য বলে জানান অনির্বাণ।
জুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার সরীসৃপ বিজ্ঞানী কৌশিক দেউটি বলেন, ‘‘স্থানীয় বাস্তুতন্ত্রের পক্ষে এই বহিরাগত কচ্ছপ প্রজাতিটি অত্যন্ত ক্ষতিকারক। এরা অস্বাভাবিক দ্রুত হারে জলাশয়ের মাছ, পোকামাকড়, শামুক, কেঁচো খেয়ে ফেলে। ফলে বর্জ্য পদার্থ সহজে জলাশয়ের মাটিতে মিশতে পারে না। জলজ বাস্তুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তা ছাড়া এই কচ্ছপ সরীসৃপ প্রাণীদের প্রাণঘাতী রোগ সৃষ্টিকারী সালমোনেল্লা ব্যাকটেরিয়ার বাহক।’’
২০১৫ সালে রাজারহাটের জলাভূমিতে প্রথম এই বহিরাগত কচ্ছপের সন্ধান মিলেছিল। পরবর্তী কালে রবীন্দ্র সরোবর এবং বারুইপুরের জলাভূমিতেও তাদের দেখা গিয়েছে। ‘কেন্দ্রীয় বন্যপ্রাণ অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো’র পূর্বাঞ্চলীয় ডিরেক্টর অগ্নি মিত্র আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘বন্যপ্রাণী এবং উদ্ভিদের বাণিজ্য সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তি ‘সাইটস’-এর নিষিদ্ধ প্রজাতিগুলির তালিকায় ‘রেড ইয়ারড স্লাইডার’ নেই। ফলে আইন মেনে ভারতে পোষার উদ্দেশ্যে এই কচ্ছপ আমদানি করা যেতে পারে। তবে জীববৈচিত্র আইন অনুযায়ী বহিরাগত কোনও প্রজাতিকে মুক্ত পরিবেশে ছেড়ে দেওয়া অপরাধ।’’
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভাগীয় বনাধিকারিক (ডিএফও) মিলন মণ্ডল বুধবার বলেন, ‘‘যেহেতু এই প্রজাতির কচ্ছপ জলাশয়ে অন্যান্য প্রাণীদের ক্ষতি করে তাই সেটিকে মুক্ত পরিবেশে ছাড়া হবে না। পাঠানো হবে আলিপুর চিড়িয়াখানায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy