কেনাকাটা: রবিবার ক্রেতার ভিড়ে কিছুটা স্বস্তিতে ব্যবসায়ীরা। বনগাঁ । ছবি নির্মাল্য প্রামাণিক
মাস পয়লায় বেতন হয়েছে বেশির ভাগ অফিসে। জমা পড়েছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারি পেনশন। তার পরেও পুজোর মুখে মাসের প্রথম রবিবার জেলায় জেলায় কেনাকাটা আশানুরূপ হল না বলেই জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বড় দোকান, শপিং মলে কিছুটা ভিড় থাকলেও জেলার ছোট দোকানগুলিতে ক্রেতার তেমন দেখে মেলেনি বলেই জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তবে গত মাসের শেষ রবিবারের তুলনায় মাসের শুরুতে কেনাকাটা বেড়েছে বলে জানালেন অনেকেই।
লকডাউনে নানা ক্ষেত্রে মানুষের আয় কমেছে। তার জেরেই কেনাকাটায় ভাটা পড়েছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। তা ছাড়া, টানা বৃষ্টিতে চাষের ক্ষতি হয়েছে অনেক জায়গায়। তারও প্রভাব পড়েছে পুজোর কেনাকাটায়।
দুই জেলার বিভিন্ন বাজারে বড়দের তুলনায় বাচ্চাদের পোশাকের চাহিদা বেশি রয়েছে। ব্যবসায়ীদের মতে, অর্থনৈতিক সঙ্কটের জেরে অনেকে শুধু বাচ্চাদের পোশাক কিনেই কেনাকাটা সারছেন।
উত্তর ২৪ পরগনার জেলার অন্যতম বড় বাজার হাবড়ায়। পুজোর আগে জামাকাপড়ের দোকানগুলি ভিড়ে উপচে পড়ে। উত্তর ২৪ পরগনা ছাড়াও, পাশের নদিয়া জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকে এখানে কেনাকাটা সারতে আসেন। এ বার পুজো এসে গেলেও দোকানগুলিতে তেমন ভিড় নেই। ব্যবসায়ীরা জানান, গত দিন তিনেক ক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে। তবে প্রত্যাশিত ভিড় নেই। হাবড়ার পোশাক ব্যবসায়ী কৌশিক পালের কথায়, “আগে পুজোর কেনাকাটার জন্য অতিরিক্ত কর্মী রাখতে হত। ভিড় উপচে পড়ত। কর্মীরা খাওয়ার সময় পেতেন না। এ বছর ভিড় তেমন নেই। গ্রামাঞ্চল থেকে ক্রেতারা আসছেন না। শুক্রবার থেকে ক্রেতার দেখা মিলছে। তবে ব্যবসা অর্ধেক হয়ে গিয়েছে।”
বনগাঁয় যশোর রোড সংলগ্ন হাতেগোনা কয়েকটি দোকানে ভিড় হচ্ছে। কিন্তু বেশিরভাগ ছোট দোকানে ক্রেতা নেই বলেই জানালেন ব্যবসায়ীরা। বিউটি পার্লার ও গয়নার দোকানেও লোকজন তেমন আসছেন না। বসিরহাটের বিভিন্ন বাজারেও কেনাকাটার ভিড় অন্যবারের থেকে অনেক কম। ব্যবসায়ীরা জানান, দু’চারটে বড় দোকানে ভিড় হচ্ছে। ছোট দোকানগুলি খদ্দেরের আশায় বসে থাকছে দিনভর। মালঞ্চের পোশাক ব্যবসায়ী আবু বক্কর গাজি বলেন, “শপিং মলগুলিতে তবুও সামান্য হলেও ভিড় দেখা যাচ্ছে। আমাদের মতো ছোট দোকানিদের অবস্থা খারাপ। পরিস্থিতি যা, তাতে দোকানে কর্মচারী রেখে ব্যবসা করাটাই অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
ডায়মন্ড হারবার স্টেশন রোডের বাজারে এ দিন বিকেলের দিকে কিছুটা ভিড় চোখে পড়ে। ব্যবসায়ীরা জানান, নতুন মাস পরার পর থেকে কেনাকাটায় কিছুটা গতি এসেছে। ক্যানিংয়ের বিভিন্ন জামাকাপড়ের দোকানেও গত কয়েকদিনের তুলনায় এ দিন সামান্য বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গিয়েছে। বাসন্তীর বস্ত্র ব্যবসায়ী সুধীর সাহা বলেন, “গত কয়েকদিনের তুলনায় রবিবারের বাজারটা একটু ভাল। তবে এখনও সে ভাবে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যাচ্ছে না। মহালয়ার পরে মনে হয় ভিড়টা একটু বাড়বে।’’
বনগাঁয় মালতি সাহা নামে এক ক্রেতা এসেছিলেন জামাকাপড়ের দোকানে। সঙ্গে দুই ছোট ছেলে। তারই জামাকাপড় কিনে বেরিয়ে আসছিলেন দোকান থেকে। নিজের জন্য কিছু কিনবেন কবে? ম্লান মুখে মালতি বলেন, ‘‘বাজার খুব খারাপ। ছেলেটার কিছু কিনে দিলাম। ওদের আনন্দই আমাদের আনন্দ। নিজেদের নতুন শাড়ি-জামার কথা পরে ভাবব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy