প্রতীকী ছবি
এক হাজার লিটার জলের ট্যাঙ্ক ভর্তি করে দিতে জেনারেটর ভাড়া নিচ্ছে এক হাজার টাকা।
গত চার দিন ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ। দেখা দিয়েছে পানীয় জলের সমস্যা। বিদ্যুতের সমস্যার কারণে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানীয় জলের সরবরাহ বন্ধ হয়ে রয়েছে। প্রত্যন্ত সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় পানীয় জলের সরবরাহ না থাকায় সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ। তবে জেলার ফলতা পাম্পিং স্টেশন, বারুইপুরের কৃষ্ণমোহনপুর, বেগমপুর, পুরন্দরপুরের এবং গোসাবা ব্লকের কিছুটা অংশে বিদ্যুৎ সংযোগ আসায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জল সরবরাহ সম্ভব হয়েছে। ফলতা এলাকায় পাম্পিং স্টেশন চালু করা সম্ভব হয়েছে। এর ফলে এলাকার বহু মানুষের পানীয় জলের সমস্যার সমাধান করা গিয়েছে বলে প্রশাসনের দাবি।
তবে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পাইপলাইন বহু জায়গায় ভেঙে যাওয়ায় প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে পানীয় জলের সরবরাহ কবে চালু করা কবে সম্ভব হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তার উপরে জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকার কারণে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পাম্পিং স্টেশনগুলি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। জেলার ২৬টি এলাকায় বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে জেনারেটর চালিয়ে কিছু জায়গায় পানীয় জল সরবরাহের চেষ্টা করা হচ্ছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পক্ষ থেকে। তবে অধিকাংশ বুস্টিং স্টেশন জেনারেটর দিয়ে চালু করা সম্ভব নয় বলে দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে দফতরের পক্ষ থেকে পানীয় জলের পাউচ প্যাক সরবরাহ করা হচ্ছে।বিদ্যুৎ না থাকার কারণে অনেক বাড়িতেই মোটর চালিয়ে জলের ট্যাঙ্ক ভর্তি করা সম্ভব হচ্ছে না। এই রকম পরিস্থিতিতে তাই অনেকেই বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে ভ্রাম্যমাণ জেনারেটর ভাড়া করে বাড়ির জলের ট্যাঙ্ক ভর্তি করে নিচ্ছেন। এ জন্য মোটা অঙ্কের টাকা গুণতে হচ্ছে।
ভাঙড়ের বাসিন্দা রফিকুল হক, হামিদ মোল্লারা বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ না থাকার কারণে সব থেকে বেশি সমস্যা হচ্ছে পানীয় জলের। ঝড়ের কারণে বাড়ির আশপাশে নলকূপ অকেজো হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে তীব্র জলের সংকট দেখা দিয়েছে। বাধ্য হয়ে তাই জলের ট্যাঙ্ক ভর্তি করতে জেনারেটর ভাড়া করতে হচ্ছে।’’
প্রত্যন্ত সুন্দরবন এলাকা সহ জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় ঝড়ের কারণে বহু নলকূপ গাছ পড়ে ভেঙে গিয়েছে। তা ছাড়া, গরম পড়তেই ভূগর্ভস্থ জলস্তর নেমে যাওয়ায় অধিকাংশ নলকূপ অকেজো হয়ে পড়ে। এ রকম পরিস্থিতিতে তাই অনেকেই গৃহস্থালির কাজ করছেন পুকুরের জলে। পানীয় জলের চাহিদা মেটাতে অনেকে পুকুরের জল ফুটিয়ে খাচ্ছেন। এ বিষয়ে গোসাবার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘পরিস্রুত পানীয় জল ছাড়া কোনও ভাবেই অন্য জল পান করা উচিত নয়। পেটের সমস্যা-সহ নানা রকম রোগ হতে পারে। আমরা ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি সুন্দরবনের গোসাবা ব্লকের প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হ্যালোজেন ট্যাবলেট সরবরাহ করছি। তাঁরা যেন জলে ওই ট্যাবলেট মিশিয়ে খান।’’
জেলা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার দেবজিৎ কুণ্ডু বলেন, ‘‘বিদ্যুতের সমস্যার কারণে বেশ কিছু ক্ষেত্রে পানীয় জল সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করছি পানীয় জল সরবরাহ করার। প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে ইতিমধ্যেই পাউচ প্যাকের মাধ্যমে পানীয় জল পৌঁছে দিয়েছি। যে সব জায়গায় বিদ্যুৎ এসেছে, সেই সমস্ত জায়গায় ইতিমধ্যে আমরা দফতরের পানীয় জল সরবরাহ শুরু করে দিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy