জ্যোতিপ্রিয়ের গ্রেফতারে হাবড়ার মুক্তিধাম শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লির কাজ শেষ হওয়া নিয়ে জল্পনা। ছবি: সুজিত দুয়ারি।
রেশন দুর্নীতি মামলায় বনমন্ত্রী তথা হাবড়ার তৃণমূল বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গ্রেফতার করেছে ইডি। বিধায়কের অনুপস্থিতিতে উন্নয়নমূলক কাজগুলির কী হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে এলাকায়। বিশেষ করে, হাবড়া পুর এলাকায় একাধিক কাজের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
পুর প্রশাসন সূত্রের খবর, পুরসভার বিভিন্ন কাজেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকত মন্ত্রীর। কোনও কাজের বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরি করা, সংশ্লিষ্ট দফতরে তা জমা দেওয়া, দ্রুত সরকারি অর্থ অনুমোদন করানো—সব কাজই করতেন বিধায়ক। পুর কর্তৃপক্ষকে তেমন ঝক্কি এতদিন সামলাতে হয়নি। এখন সেই শূন্যস্থান কী ভাবে পূরণ হবে, তার উত্তর খুঁজছে পুরসভা।
হাবড়ার পুরপ্রধান তৃণমূলের নারায়ণ সাহা বলেন, “বিভিন্ন সরকারি দফতরের মন্ত্রী ও আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে বালুদা (জ্যোতিপ্রিয়ের ডাক নাম) যে কোনও কাজ দ্রুত করিয়ে নিয়ে আসতেন। এখন তাঁর অনুপস্থিতিতে আমাদের বড় অসহায় লাগছে।”
হাবড়া পুরসভা সূত্রের খবর, পুর এলাকায় বেশ কিছু রাস্তা তৈরির কথা রয়েছে। সেই কাজে খরচ ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা। নতুন রাস্তাগুলি তৈরির প্রকল্প পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের জমা দেওয়া হয়েছে। হাবড়ায় বৈদ্যুতিক চুল্লি তৈরির কাজও চলছে। ওই কাজের জন্য খরচ ধরা হয়েছে ২ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা। এখনও পর্যন্ত বৈদ্যুতিক চুল্লির জন্য পাওয়া গিয়েছে ৩৭ লক্ষ ৫৯ হাজার টাকা। এ ছাড়া, শহরে এক হাজার এলইডি বাতিস্তম্ভ বসানোর কাজের প্রকল্পও জমা দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে রাস্তা, আলো, বৈদ্যুতিক চুল্লির মতো প্রস্তাবিত কাজগুলির অগ্রগতি নিয়েই চিন্তিত পুর কর্তৃপক্ষ।
বর্তমানে হাবড়ায় বস্ত্র হাট, কর্মতীর্থ এবং বুস্টার পাম্প স্টেশন তৈরির কাজও চলছে। নারায়ণের কথায়, “এই কাজগুলিও মুখ্যমন্ত্রীকে বলে বালুদাই হাবড়ার উন্নয়নের জন্য করিয়ে এনেছিলেন। এই কাজগুলি হয়তো শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলি নিয়েই আমরা চিন্তায় পড়েছি।”
পুরসভার কাজে মন্ত্রীর প্রভাব অবশ্য নতুন নয়। এর আগে, ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত হাবড়ার পুরপ্রধান ছিলেন তৃণমূলের নীলিমেশ দাস। তিনি বলেন, “আমার সময়েও হাবড়া শহরে যা উন্নয়ন হয়েছিল, তার অনুমোদন, টাকা বরাদ্দের ক্ষেত্রে বালুদা বড় ভূমিকা নিয়েছিল। এখন তাঁর অনুপস্থিতিতে উন্নয়ন কাজে নিশ্চয়ই প্রতিবন্ধকতা তৈরি হবে।”
বিষয়টির সমালোচনা করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। হাবড়ার সিপিএম নেতা আশুতোষ রায়চৌধুরী বলেন, “এলাকার বিধায়ক হিসাবে কেউ বিধানসভা বা মন্ত্রিসভায় এলাকার উন্নয়নের জন্য প্রস্তাব দিতে পারেন, দাবি জানতে পারেন। কিন্তু পুর এলাকায় উন্নয়নের কাজ পরিচালনা করার জন্য পুরসভা আছে। পুরসভা একটি স্বশাসিত সংস্থা। তাদের কাজে বিধায়ক বা মন্ত্রী নিয়ন্ত্রণ করবেন কেন? এরা কি আইনকানুন মানবে না?” বিজেপি নেতা বিপ্লব হালদার বলেন, “রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা থাকলে উন্নয়ন হবে। বিধায়ক থাকাকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের টাকাই উনি খরচ করতে পারেননি। রেল কারশেড, উড়ালপুল, যশোর রোড চওড়া করা—এ সব কাজে ব্যর্থ। তাই বিধায়ক থাকা না-থাকার মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই। চোরের শাস্তি তো হবেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy