সুন্দরবনে দেখা মেলে এই সাইলা সেরেটা প্রজাতির কাঁকড়ার। নিজস্ব চিত্র
বাঘ আর ম্যানগ্রোভ তো আছেই। কাঁকড়া দিয়েও কি চেনানো যাবে সুন্দরবনকে? উত্তর জানতে গবেষণা শুরু করছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন।
ওজন নিদেন পক্ষে ২৫০ গ্রাম। ঠিক মতো পরিচর্যা করলে তা বেড়ে ৫০০ গ্রামও হয় মাঝে মধ্যে। শরীরে মাংসের পরিমাণ বাজার চলতি কাঁকড়াগুলির তুলনায় অনেক বেশি। তাই দাম বেশ চড়া। আকারেও বেশ বড়। বর্ণ, হালকা সবুজ অথবা কালো। বিজ্ঞানের অভিধানে এই কাঁকড়ার নাম ‘সাইলা সেরেটা’, যা মেলে সুন্দরবনের কালোমাটির অঞ্চলে।
এই জাতীয় কাঁকড়া অন্য কোনও রাজ্যে পাওয়া যায় কি না, তা অনুসন্ধান করবে দক্ষিণ ২৪ পরগনা মৎস্য দফতর। ওই দফতরের এক আধিকারিক জানান, অন্য কোনও রাজ্যে না মিললে, এ রাজ্যের জন্য ওই প্রজাতির কাঁকড়ার ‘জিআই ট্যাগ’-এর আবেদন করা যেতে পারে। এ নিয়ে ইতিমধ্যেই একটি বৈঠক হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর।
মৎস্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন অঞ্চলে মূলত এই কাঁকড়া পাওয়া যায়। এর চাষ বাড়ানোর জন্য চাষিদের সহায়তা করে মৎস্য দফতর। দরপত্র ডেকে ক্ষুদ্র কাঁকড়া (ক্র্যাব সিড) কিনে চাষিদের দেওয়া হয়। তাঁরা খাইয়ে বড় করেন কাঁকড়াগুলিকে।
ওই আধিকারিক জানান, পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী এলাকাতেও এই কাঁকড়া মিলতে পারে। কারণ, এর জন্ম ও বেড়ে ওঠার অনুকূল পরিবেশ এবং মাটি রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূল অঞ্চলে। পূর্ব মেদিনীপুরেও ‘সাইলা সেরেটা’র অস্তিত্ব মিললে, সে ক্ষেত্রে গোটা রাজ্যের জন্যই ‘জিআই ট্যাগ’-এর আবেদন জানানো যেতে পারে বলে মনে করছে জেলা মৎস্য দফতর।
প্রশাসন সূত্রের খবর, অনুসন্ধানের প্রক্রিয়াটি রয়েছে প্রাথমিক পর্যায়ে। মৎস্য দফতরের আর এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে এ নিয়ে গবেষণা শুধু দফতরের পক্ষে চালানো সম্ভব কি না, সে প্রশ্ন রয়েছে। গবেষণায় যুক্ত কোনও প্রতিষ্ঠানকে এই কাজ দেওয়া যায় কি না, তা ভাবা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, গবেষণার বিষয়টি সময়সাপেক্ষ। জিআই ট্যাগ-এর জন্য আবেদন করতে গেলে অনেক প্রামাণ্য নথি ও তথ্য প্রয়োজন। তা ছাড়া, এই জাতীয় কাঁকড়া অন্য রাজ্যেও থাকতে পারে। সে কারণে এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে গেলে কোনও গবেষণা প্রতিষ্ঠান বা দক্ষিণ ২৪ পরগনার কোনও একটি কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রকে অনুসন্ধান চালানোর প্রস্তাব দেওয়া যেতে পারে। জেলায় নিমপিঠ ও নরেন্দ্রপুরে দু’টি কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র রয়েছে।
মৎস্য দফতর জানায়, সুন্দরবনের একাংশের মানুষ এই প্রজাতির কাঁকড়া বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করেন। খুচরো বাজারে এই কাঁকড়া ৮০০-১০০০ টাকা কেজি দরেও অনেক সময়ে বিক্রি হয়। সে কারণে ‘সাইলা সেরেটা’র চাষ আরও ভাল করার উপরেও জোর দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এক আধিকারিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy