সভা বাতিল। মতুয়ারা বাসে করে ফিরলেন বাড়ি। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
ভিভিআইপি আসেননি। তবে মঞ্চ আছে। ছিলেন নিরাপত্তারক্ষীরাও। ফাঁকা মঞ্চেরই ছবি তুললেন তাঁরা। বনগাঁর প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মমতা ঠাকুরকে দেখা গেল মতুয়া ভক্তদের বলছেন, ‘‘আর কত বার অপমানিত হবে তোমরা। বিজেপি নাগরিকত্ব দিতে পারবে না। আমরা সকলেই নাগরিক।’’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভা বাতিল হওয়ার পর এমনই ছিল শনিবার সকালের ঠাকুরনগরের ছবি।
অমিতের সভার প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। মূল মঞ্চ ছাড়াও আরও দু’টি মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। মূল মঞ্চটি ছাউনি দেওয়া। সেখানে লাগানো ফ্লেক্সে লেখা, ‘অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের তত্ত্বাবধানে এবং সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের ডাকে বিশাল জনসভা’। ওই ফ্লেক্সে শান্তনু ছাড়াও বড়মা বীণাপানি ঠাকুর, প্রধানমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছবি রয়েছে। বাকি দু’টি মঞ্চে লেখা রয়েছে গোঁসাই মঞ্চ এবং বিশেষ অতিথি মঞ্চ। সভাস্থলের আশপাশে বিজেপির দলীয় পতাকা এবং মতুয়া পতাকা নিশানে মুড়ে ফেলা হয়েছিল। ভিড় সামলানো এবং নিরাপত্তার জন্য এসে গিয়েছিলেন অসংখ্য পুলিশকর্মী। প্রশাসন সূত্রের খবর, সভা না হলেও দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৪০০ পুলিশকর্মী ঠাকুরবাড়িতে ছিলেন। সভা হচ্ছে না। কাজ নেই। উৎসাহিত পুলিশকর্মীদের দেখা গেল, মোবাইল বার করে ফাঁকা মঞ্চের ছবি তুলে রাখছেন।
বিজেপি কর্মী এবং মতুয়া ভক্তদের একাংশও মঞ্চ দেখতে ভিড় করেছিলেন। বিজেপির পতাকা নিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে এসেছিল কচিকাঁচারাও। মালদহের গাজল থেকে ৩৫ জনের একটি দল শুক্রবার রাতে ঠাকুরবাড়িতে এসেছে। ওই দলেরই একজন বললেন, ‘‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসছেন না শুনে আমাদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে। অনেকেই মাঝরাস্তা থেকে ফিরে যেতে চেয়েছিলেন। তবে শান্তনু ঠাকুরকে ভালবাসি। তাই দেখা করতে এসেছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ১০-১৫ দিনের মধ্যে নিশ্চয় আসবেন। যত কষ্ট হোক ঠাকুরের ডাকে আমরা আবারও আসব।’’ নদিয়া থেকে একটি মতুয়া দল নিয়ে এসেছিলেন এক বৃদ্ধ। তিনি কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেললেন। বললেন, ‘‘আমরা হতাশ। নাগরিকত্ব পাব কি না, জানতে পারলাম না। উল্টে শান্তনু ঠাকুরকে অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হল। ’’
ঠাকুরবাড়িতে জড়ো হওয়া অনেক ভক্তেরাই বিভ্রান্ত। ফের কবে হবে সভা, কোনও আশ্বাস মিলবে কি? শান্তনুর সঙ্গে দেখা করতে আসা মতুয়াদের মধ্যে এই প্রশ্নই ঘুরেফিরে এসেছে বারবার। তবে যাঁরা দূরদুরান্ত থেকে চলে এসেছিলেন তাঁদের খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। শান্তনু বলেন, ‘‘দূরদুরান্ত থেকে আসা মতুয়া ভক্তদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করেছি। তবে সকলকে বুঝতে হবে দেশের স্বার্থ সবার আগে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy