Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Didir Suraksha Kavach Programme

রাস্তা নিয়ে ক্ষোভের মুখে দিদির দূতেরা

বিশপুর শিবমন্দিরের পাশ থেকে যে রাস্তা ঘোষপাড়া হয়ে মাওলার মোড়ে গিয়েছে, সেই রাস্তা দিয়ে মিছিল এগোতেই এ দিন বার বার ভিড়ের মাঝে আটকে পড়েন নেতারা।

বিশপুর পঞ্চায়েত এলাকায় দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচির মিছিল। নিজস্ব চিত্র

বিশপুর পঞ্চায়েত এলাকায় দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচির মিছিল। নিজস্ব চিত্র

নবেন্দু ঘোষ 
হিঙ্গলগঞ্জ শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৩ ০৯:০৩
Share: Save:

বিশপুর শিবমন্দিরে পুজো দিয়ে শনিবার সকালে শুরু হয়েছিল ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচি। মন্দির থেকে বাইরে আসতেই একের পর এক প্রশ্নবাণ ছুটে এল তৃণমূলের নেতাদের দিকে। মূলত রাস্তাঘাট নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন বহু গ্রামবাসী। ‘দিদির দূত’ হিসাবে স্থানীয় বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল কেন গরহাজির, শুনতে হল সে প্রশ্নও।

এ দিনের কর্মসূচিতে ছিলেন বসিরহাট উত্তরের বিধায়ক রফিকুল ইসলাম। হিঙ্গলগঞ্জ ব্লক তৃণমূল সভাপতি সহিদুল্লাহ গাজি-সহ তৃণমূলের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও ছিলেন। নীলাঞ্জন সাউ নামে এক গ্রামবাসী রফিকুলের কাছে জানতে চান, “স্থানীয় বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল নেই কেন আপনার সঙ্গে? আসলে উনি প্রতিশ্রুতি রাখতে পারেননি।’’ হাসনাবাদ থেকে শিথলিয়া পর্যন্ত প্রায় ৩৬ কিলোমিটার পিচের রাস্তা বেহাল। বিধায়ক বার বার আশ্বাস দিলেও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ জানান তিনি। রাস্তা খারাপ হওয়ায় বার বার বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বলে জানান।

রফিকুল ক্ষোভ প্রশমিত করার চেষ্টা করে বলেন, “বিধায়ক দলের নির্দেশেই ভবানীপুর ১ পঞ্চায়েত এলাকায় গিয়েছেন। আমি এখানে এসেছি আপনাদের কথা শুনে। ওই রাস্তার টেন্ডার হয়ে গিয়েছে।’’ দ্রুত কাজ হবে বলে আশ্বাস দিয়ে যান তিনিও।

দেবেশ পরে বলেন, “এ বার বাড়ি বাড়ি যাবেন দিদির দূতেরা। আপাতত আমরা দলের নির্দেশে এক এক জন বিধায়ক এক একটি পঞ্চায়েত এলাকায় যাচ্ছি দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচির উদ্বোধন করতে।”

যদিও স্থানীয় বিজেপি নেতা হিরেন মাখালের কটাক্ষ, “তৃণমূল ভয় পেয়েছে। অপ্রিয় প্রশ্ন, ক্ষোভ এড়িয়ে যেতে চাইছে। সে কারণে গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে যাচ্ছেন না।”

বিশপুর শিবমন্দিরের পাশ থেকে যে রাস্তা ঘোষপাড়া হয়ে মাওলার মোড়ে গিয়েছে, সেই রাস্তা দিয়ে মিছিল এগোতেই এ দিন বার বার ভিড়ের মাঝে আটকে পড়েন নেতারা। যে রাস্তা ধরে মিছিল যাচ্ছিল, সেটি ভাঙাচোরা ইটের। তা নিয়েও ক্ষোভের কথা শুনতে হয় বিধায়ককে।

বিশপুর উত্তরপাড়া বটতলায় সুজন বাগ নামে এক যুবক-সহ কয়েক জন ঝাউতলা থেকে মামলার মোড় পর্যন্ত ভাঙাচোরা ইটের রাস্তা নিয়ে ক্ষোভ জানান। আরও নানা রাস্তা নিয়ে অভিযোগ উঠে আসে গ্রামবাসীদের কথায়। অনেকে জানান, লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা গত কয়েক মাস ধরে পাচ্ছেন না। দুর্গাপুরের পিঁপড়েখালিতে ভাঙাচোরা রাস্তা চলাচলের অযোগ্য বলে অভিযোগ ওঠে। দুর্গাপুর বায়লানি হাইস্কুলে যাওয়ার ওই পথ দিদির দূতেদের দেখান গ্রামবাসীরা। একাধিক বার মিছিল থামিয়ে রাস্তা নিয়ে ক্ষোভ শুনতে হয়েছে নেতাদের। কেউ কেউ জানান, সরকারি কিছু সুবিধা পাচ্ছেন না। আশ্বাস দেওয়া হয়, দ্রুত পদক্ষেপ হবে। ভাঙাচোরা রাস্তায় সন্তপর্ণে এগোন নেতারা। ভিড়ের পিছন থেকে কাউকে কাউকে বলতে শোনা গেল, ‘‘কত ধানে কত চাল নিজেরাই দেখছেন ওঁরা। আমরা এত বার বললেও কারও কানে কথা ওঠেনি!’’ দুর্গাপুর বায়লানি হাইস্কুলে গিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেন রফিকুল। প্রধান শিক্ষক স্কুলে শিক্ষকের সঙ্কটের কথা জানান। ক্লাস ঘরের সমস্যার কথা জানানো হয়। শিক্ষিকা বিদিশা হীরা বলেন, “হাসনাবাদ যাওয়ার মূল পিচের রাস্তা বেহাল।” রফিকুল আশ্বাস দেন, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ দ্রুত গ্রহণ করা হবে।

তৃণমূলের স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য হাবিবর শেখও পথঘাটের হাল নিয়ে ক্ষোভ জানান বিধায়কের কাছে।

স্থানীয় এক তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে দুপুরে খাওয়া সেরে পঞ্চায়েত অফিসে বৈঠক করেন রফিকুল। বিকেলে বায়লানি বাজারে সভা করেন। রাতে আর এক নেতার বাড়িতে খেয়েদেয়ে কর্মসূচি শেষ হয়।

অন্য বিষয়গুলি:

Didir Doot TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy