হতভম্ব: প্রশাসনের চিঠি হাতে মল্লিকা দাস। ছবি: সমরেশ মণ্ডল।
আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু টাকা মেলেনি। তারপরেও কেন বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়নি, তা জনতে চেয়ে প্রশাসনের চিঠি পেয়েছেন সম্প্রতি। সাগরের খানসাহেব আবাদ গ্রামের বাসিন্দা মল্লিকা দাস প্রশাসনের চিঠি পেয়ে অবাক। সমাধানের খোঁজে গত কয়েকদিন এক দফতর থেকে আরেক দফতরে ছুটে বেড়িয়েছেন ৭১ বছরের বৃদ্ধা। শেষে জানা যায়, বৃদ্ধার টাকা চলে গিয়েছে অন্য কারও অ্যাকাউন্টে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে বৃদ্ধার বাড়ি তৈরির প্রথম কিস্তির ৪৫ হাজার টাকা মঞ্জুর হয়। সেই টাকা তাঁর দেওয়া ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানোও হয়েছিল। এতদিনেও বাড়ি তৈরির কাজ শুরু না হওয়ায় তাঁকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রথম কিস্তির টাকায় বাড়ি তৈরির কাজ শুরু না করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে মল্লিকার দাবি, তিনি কোনও টাকা পাননি।
বৃদ্ধা বলেন, “এ ব্যাপারে আগেই পঞ্চায়েতে জানিয়েছি। পঞ্চায়েত থেকে বলছে আমার অ্যাকাউন্টে নাকি টাকা পাঠানো হয়েছে। কিন্তু আমি ব্যাঙ্কে গিয়ে খতিয়ে দেখেছি। আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কোনও টাকা ঢোকেনি। আমার দ্বিতীয় কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও নেই। ব্যাঙ্কের কাগজপত্রও পঞ্চায়েতে দেখিয়েছি।”
সম্প্রতি চিঠি পাওয়ার পর ফের স্থানীয় পঞ্চায়েতে যান বৃদ্ধা। কিন্তু সেখানে কোনও সাহায্য মেলেনি। ব্লক দফতরে গেলেও কেউ তাঁকে সাহায্য করতে চায়নি বলে অভিযোগ। বাধ্য হয়ে ছেলেকে নিয়ে বুধবার কাকদ্বীপ মহকুমা শাসকের কাছে হাজির হন তিনি। মহকুমা শাসক বৃদ্ধার অভিযোগ শোনেন। ওইদিনই তাঁকে স্থানীয় ব্লক দফতরে কাগজপত্র নিয়ে স্থানীয় ব্লক দফতরে কাগজপত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়। সেই মতো ব্লক দফতরে যান মল্লিকা।
তাঁর দাবি, “ব্লক দফতরে কাগজপত্র খতিয়ে দেখে জানানো হয়েছে, টাকাটা অন্য অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে। দ্রুত আমার অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হবে বলে জানানো হয়েছে। তারপরেই বাড়ির কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে।” এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) মহম্মদ সামিউল আলম বলেন, “বিডিও এবং এসডিওর সঙ্গে কথা বলে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। দ্রুত প্রথম কিস্তির টাকা আমরা ওই মহিলার সঠিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেব।”
এ দিকে এই ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর। সিপিএমের সাগর এরিয়া কমিটির সম্পাদক বিধান দাস বলেন, “আবাস যোজনার টাকা একজনের অ্যাকাউন্টে না ঢুকে হাওয়া হয়ে গেল। সেই টাকা কোথায় গেল কেউ জানে না। কিন্তু প্রশাসন তাঁকে বাড়ি তৈরির জন্য চাপ দিচ্ছে। এই সরকারের আমলে এরকম ঘটনা প্রচুর আছে। দুর্নীতির একটা আখড়া তৈরি হয়েছে। সাধারণ মানুষকে ভুক্তভোগী হতে হচ্ছে। এই ঘটনার যথাযথ তদন্ত হওয়া উচিত।” তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির প্রাণী ও মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল সামির শাহ বলেন, “প্রাপক যদি টাকা না পায়, তাহলে সেটা ভুল। চেষ্টা করা হবে এমন ভুল আর যেন না হয়। এ নিয়ে বিরোধীদের হইচই ভিত্তিহীন।”
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy