Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
South 24 Pargana

বয়স মাত্র ৮, নিখুঁত উচ্চারণে স্তোত্রপাঠে বাজিমাত জাতীয় মঞ্চে

স্তোত্রপাঠের সময় স্পষ্ট সংস্কৃত উচ্চারণে শ্রোতাদের মুগ্ধ করে সে। পাশাপাশি, সমান তালে চালিয়ে যাচ্ছে নিজের পড়াশোনাও।

বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করেছে অদ্রিজা। নিজস্ব চিত্র।

বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করেছে অদ্রিজা। নিজস্ব চিত্র।

সৈকত ঘোষ
ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১২:০০
Share: Save:

মাত্র ৮ বছর বয়সেই আবৃত্তি, নাচ এবং স্তোত্রপাঠে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে সে। ছবি আঁকাতেও রয়েছে সমান দক্ষতা। স্তোত্রপাঠের সময় স্পষ্ট সংস্কৃত উচ্চারণে শ্রোতাদের মুগ্ধ করে সে। পাশাপাশি, সমান তালে চালিয়ে যাচ্ছে নিজের পড়াশোনাও। এতটুকু বয়সেই আবৃত্তি, স্তোত্রপাঠ এবং ছবি আঁকার জন্য ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডস-এর খেতাব জিতল ডায়মন্ড হারবারের পিরিজপুরের বাসিন্দা অদ্রিজা মুখোপাধ্যায়।

অদ্রিজার জন্ম পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া শহরে। তবে পুলিশকর্মী বাবা রাজীব মুখোপাধ্যায়ের বদলি হওয়ায় পর থেকেই সে ডায়মন্ড হারবারের বাসিন্দা ৷ তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া অদ্রিজা ছোট থেকে বাড়িতে মায়ের কাছে আবৃত্তির তালিম নেয়। নাচ এবং ছবি আঁকার প্রাথমিক শিক্ষিকাও মা মৌসুমী মুখোপাধ্যায়। একইসঙ্গে বাবার মুখে স্তোত্রপাঠ শুনতে শুনতে ছোট্ট অদ্রিজাও রপ্ত করে ফেলেছে এর ধরন।

মাঝেমধ্যে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করেছে অদ্রিজা। লকডাউনে বাড়িতে বসে ছবি আঁকা, নাচ এবং আবৃত্তির অনুশীলন শুরু হয়। মেয়ে সব ধরনের পারফরম্যান্স ভিডিয়ো করে জমিয়ে রাখতে ভালবাসেন অদ্রিজার মা। একাধিক ভার্চুয়াল প্রতিযোগিতাতে সেই ভিডিয়ো পাঠাতে শুরু করেন। কয়েক মাসের মধ্যে রাজ্য এবং রাজ্যের বাইরে থেকে বহু পুরস্কার জিততে থাকে অদ্রিজা।

গত বছর অক্টোবর মাসে অনলাইনে ‘ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডস’-এ অদ্রিজার নাম তোলার জন্য আবেদন জানানো হয়। কিছু দিনের মধ্যে সংস্থার তরফে অদ্রিজার পারফরম্যান্সের কিছু ভিডিয়ো চাওয়া হয়। সেই মতো তার বেশ কিছু ভিডিয়ো পাঠিয়েও দেওয়া হয়। অদ্রিজার কাজে মনভরে বিচারকদের। ‘ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডস্’-এ জায়গা পেতে তার অসুবিধে হয়নি।

গত ৪ ফেব্রুয়ারি অদ্রিজার পদক এবং শংসাপত্র বাড়িতে পাঠানো হয়। খুদে প্রতিভার এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত তার পরিবার। সুখবর ছড়িয়ে পড়তেই ফোনে একের পর এক শুভেচ্ছা আসতে শুরু করেছে বাড়িতে।

আরও পড়ুন:

এত বড় খেতাব জিতে কেমন লাগছে ? প্রশ্ন করতে ছোট্ট অদ্রিজার উত্তর, ‘‘খুব খুশি হয়েছি। মা বলেছেন, বড় পুরস্কার এটা। আরও ভাল করে কাজ করতে হবে। আত্মীয়রা ফোন করেও খুব ভাল বলেছেন।’’

মেয়ের এতবড় সাফল্যকে পথচলার প্রথমধাপ হিসেবেই দেখছেন মা মৌসুমী মুখোপাধ্যায়। তাঁর কথায় ‘‘ছোট থেকেই আমার মেয়ে সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক নিয়ে কাজ করছে। বড়দের আশীর্বাদে ও এতবড় খেতাব জিতেছে। ওকে আরও ভাল কাজ করতে হবে।’’

কথা বলার সময় পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন অদ্রিজার বাবা। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশে চাকরি করার জন্য অধিকাংশ সময় বাড়ির বাইরে থাকি। অদ্রিজার মা ওকে তৈরি করেছেন। এত টুকু মেয়ে আমার স্তোত্রপাঠ শুনে নিজে নিজেই কীভাবে আয়ত্ত করেছে, তা আমার কাছে রীতিমতো বিস্ময়। ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডস-এ নিজের মেয়ের নাম কখনও দেখতে পারব, স্বপ্নেও ভাবিনি।’’

ছোট্ট অদ্রিজার সর্বভারতীয় এই খেতাব জেতার খবর পেয়ে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছে ডায়মন্ড হারবারের মহকুমা প্রশাসন। এসডিও সুকান্ত সাহা বলেন, ‘‘আমরা খুবই আনন্দিত এবং গর্বিত। ওর জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা।’’

আরও পড়ুন:

অন্য বিষয়গুলি:

South 24 Pargana
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy