পুলিশের গাড়িতে চাপিয়ে আনা হয় উদ্ধার হওয়া তরুণীদের। —নিজস্ব চিত্র।
নিখোঁজ মেয়েকে খুঁজতে নেমে নারী পাচারচক্রের হদিশ পেল পুলিশ। ডায়মন্ড হারবার এবং রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে অল্প বয়সি মেয়েদের বিহারে পাচার করে দেওয়া হচ্ছিল বলে জানা গিয়েছে। পাচার হয়ে যাওয়া ৬ তরুণীকে এখনও পর্যন্ত উদ্ধার করতে পেরেছে পুলিশ। কাজের লোভ দেখিয়ে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন গোপন পার্টিতে তাঁদের অশ্লীল নাচ করতে বাধ্য করা হতো বলে জানা গিয়েছে। এই পাচারচক্রের মূল পান্ডাদের খুঁজে বার করতে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
কাজের খোঁজে বিহারে গিয়ে মাস চারেক আগে নিখোঁজ হয়ে যায় ডায়মন্ড হারবারের রামচন্দ্রপুর এলাকার বাসিন্দা এক নাবালিকা। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেই পাচারচক্রটির হদিশ মেলে। পুলিশ জানিয়েছে, এক মধ্যবয়সি মহিলার সঙ্গে ওই কিশোরীর আলাপ হয়। কথা কথায় নাচের প্রতি নিজের ভালবাসার কথা ওই মহিলাকে জানায় সে। তা জানতে পেরে তাকে নাচের দলে কাজ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন ওই মহিলা। তাঁর কাছ থেকে আশ্বাস পেয়ে এলাকার আরও দুই তরুণীর সঙ্গে বিহার রওনা দেয় ওই কিশোরী।
কিন্তু তার পর থেকে আর বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি কাউকেই। পুলিশ জানিয়েছে, বিহারের মতিহারি জেলার চ্যাইনপুরে এক গোপন আস্তানায় প্রথমে ওই নাবালিকা এবং বাকি তরুণীদের আটকে রাখা হয়। তার পর বিভিন্ন গোপন পার্টি এবং অনুষ্ঠানে পাঠানো শুরু হয়। বাধ্য করা হয় অশ্লীল নাচে অংশ নিতে। সেখানে নানা অত্যাচারের শিকার হতে হয় সকলকে।
আরও পড়ুন: ‘ওয়াশিং মেশিন নাকি! তৃণমূলে থাকলে কালো, বিজেপি-তে ভাল’, কটাক্ষ মমতার
এ ভাবে বেশ কয়েক মাস চলার পর, সম্প্রতি নাচের দলের একটি মেয়ের কাছ থেকে গোপনে ফোন জোগাড় করে বাড়িতে সব কিছু জানায় ডায়মন্ড হারবারের ওই নাবালিকা। তা নিয়ে ১ জানুয়ারি ডায়মন্ড হারবার থানায় লিখিত অভিযোগ জানান মেয়েটির পরিবারের লোকজন। অপহরণ ও পাচারের মামলা দায়ের করে সেই মতো তদন্ত শুরু করে। যে নম্বর থেকে ফোন এসেছিল, তার টাওয়ার ধরেই শেষমেশ মেয়েটির নাগাল মেলে।
মতিহারি থেকে মেয়েটিকে ফিরিয়ে আনতে জেলার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ডায়মন্ড হারবার মহিলা থানার ওসি অমৃতা পাখিরাদাসের নেতৃত্বে একটি বিসেষ কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তকারী অফিসার বাদল বসুর নেতৃত্বে দলটি মতিহারি পৌঁছয়। তার পর গত শনিবার স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতায় চ্যাইনপুরে অভিযান চালিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা হয় আরও ৫ তরুণীকে। ওই নাবালিকা-সহ তিন জন ডায়মন্ড হারবারের বাসিন্দা হলেও, বাকি তিন জন কুলতলি থানা এলাকার বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: নীলবাড়ির লক্ষ্যে লকেটে ভরসা অমিত-দিলীপের, পেলেন বড় দায়িত্ব
গোপন সূত্রে পুলিশি অভিযানের খবর পেয়ে আগেভাগেই মতিহারির আস্তানা থেকে চম্পট দিয়েছিল নাচের দলের পাণ্ডারা। তাদের নাগাল পায়নি পুলিশ। সোমবার সকালে উদ্ধার হওয়া ৬ জনকে নিয়ে ডায়মন্ড হারবার ফিরে আসে পুলিশের ওই দল। দুপুরে আদালতে গোপন জবানবন্দির জন্য আদালতে নিয়ে যাওয়া হয় সকলকে। পাচারচক্রের হদিশ পেতে এই মুহূর্তে সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। জেরা শেষ হলেই পরিবারে লোকজন মেয়েদের ফিরে পাবেন বলে জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy