ফাইল চিত্র।
‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির জন্য অনেকেই সমস্যার কথা জানাতে পেরেছেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সামান্য কিছু কাজে গতি এলেও বেশির ভাগ কাজই হয়নি এখনও। আদৌ সেই কাজ হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে অভিযোগকারীদের মধ্যেই।
দিদিকে বলো হেল্পলাইনে অভিযোগ জানাবেন কিনা, জানালে স্থানীয় নেতাদের রোষের মুখে পড়বেন কিনা তা নিয়ে বিস্তর চিন্তাভাবনা করেছেন অনেকেই। কিন্তু এই সবকিছুকে উপেক্ষা করেও কিছু মানুষ এলাকার সমস্যার কথা জানিয়েছেন ওই হেল্পলাইনে। যেমন, পেশায় আইনজীবী দীপক হালদার। ক্যানিং মহকুমায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত না থাকায় সুন্দরবন-সহ এই মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের সমস্যার কথা দিদিকে বলোতে জানিয়েছেন।
দীর্ঘ পনেরো বছর আগে নোটিফিকেশন হলেও এই আদালত এখনও তৈরি হয়নি ক্যানিংয়ে। কিছুদিন আগে বিচার দফতরকে জমি হস্তান্তর করা হয় আদালত তৈরির জন্য। কিন্তু এরপর বেশ কয়েকমাস কেটে গেলেও কাজের কোনও অগ্রগতি না হওয়ায় দিদিকে বলো হেল্পলাইনে এটি দ্রুত করার আবেদন জানিয়েছেন ওই আইনজীবী। তিনি বলেন, “আদালত তৈরি হলে সুন্দরবন-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের দুর্ভোগ অনেকখানি কমবে। আদৌ তা কবে হবে জানি না। দিদিকে বলোতে জানালাম দেখি কি হয়।” রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহাল দশার কথা জানাতে দিদিকে বলো হেল্পলাইনে ফোন করেছিলেন জীবনতলা থানার আঠেরোবাকি এলাকার বাসিন্দা সওকত মোল্লা। দিন কয়েক আগে নিজের দাদার শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার চিকিৎসা করাতে গিয়ে কলকাতার একের পর এক হাসপাতালে হয়রানির শিকার হয়েছেন তিনি। সওকত বলেন, ‘‘আমার দাদা ইব্রাহিম মোল্লার চিকিৎসার জন্য গত ক’দিন ধরে কলকাতার একের পর এক সরকারি হাসপাতালে গিয়েছি। কোথাও ঠিকমতো চিকিৎসা পাইনি। ন্যাশানাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে শুরু করে কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সর্বত্রই হয়রান হয়েছি। চিকিৎসা করাতে না পেরে বাড়িতে ফেরত নিয়ে এসেছি। দিদিকে বলোতে জানিয়েছি।” এ সব ছাড়াও রাস্তাঘাটের সমস্যা, সরকারি প্রকল্পের ঘরের দাবি, পানীয় জলের সমস্যা, লো ভোল্টেজের সমস্যা আবার কেউ চাকরির দাবিও জানিয়েছেন দিদিকে বলো হেল্পলাইনে। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে সেই সমস্ত অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখার জন্য জেলাশাসকের দফতরে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে ব্লক স্তরে পাঠানো হয়েছে বেশ কিছু অভিযোগ।
ক্যানিং ১ ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, এই ব্লক থেকে সব থেকে বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে রাস্তাঘাট তৈরি ও মেরামতি বিষয়ে। দরিদ্র সীমার নীচে বসবাসকারি মানুষজন সরকারি প্রকল্পের ঘরের দাবিও জানিয়েছেন। ক্যানিংয়ের মাতলা নদীতে সেতু নির্মাণের ফলে নৌ পারাপারের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত ছিলেন সেই সব মানুষজন বিকল্প কর্ম সংস্থানের দাবিও জানিয়েছেন। ইতিমধ্যে বেশ কিছু সমস্যার সমাধান করা হয়েছে বলে দাবি ব্লক প্রশাসনের। বাকি বিষয়গুলিও খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল বলেন, “এলাকার মানুষ দিদিকে বলো এই উদ্যোগে ভীষণ খুশি। একদিকে যেমন হেল্পলাইনে মানুষ তাঁদের সমস্যার কথা বলছেন, তেমনি আমারা যখন এলাকায় গিয়ে জনসংযোগ করছি তখনও মানুষের বিভিন্ন সমস্যার কথা জানতে পারছি ও তা দ্রুত যাতে সমাধান হয় সেই ব্যবস্থা করছি।’’
যদিও দিদিকে বলো এই কর্মসূচিকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির দক্ষিণ ২৪ পরগনা (পূর্ব) জেলার সভাপতি সুনিপ দাস। তিনি বলেন, ‘‘এত দিন এ সব কেন করেননি? ২০২১ সালে বিজেপি এ রাজ্যে ক্ষমতায় আসছে বুঝতে পেরে ক্ষমতায় থাকার লোভে সাধারণ মানুষকে আবার ভাওতা দিচ্ছে তৃণমূল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy