Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

দেগঙ্গায় ডেঙ্গির জীবাণু, নড়ে বসছে প্রশাসন

দেগঙ্গায় ডেঙ্গি ও অজানা জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা ২০১৭ সালে কয়েক হাজার ছাড়িয়ে যায়। সে বার মৃত্যুর সংখ্যা ছিল শতাধিক। পরের বছর রাজ্য সরকার ও জেলা প্রশাসন ডেঙ্গি দমনে আগাম কড়া হওয়ায় প্রকোপ ঠেকানো গিয়েছিল।

ব্যবস্থা: বিডিও এবং পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে সাফ করা হয়েছে ইরফানের বাড়ির সামনের পুকুর। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

ব্যবস্থা: বিডিও এবং পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে সাফ করা হয়েছে ইরফানের বাড়ির সামনের পুকুর। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৯ ০২:৫৭
Share: Save:

এক দিকে বাড়ছে জ্বরের প্রকোপ। অন্য দিকে, একটি বালকের রক্তে মিলল ডেঙ্গির জীবাণু। এই দু’য়ের জেরে দু’বছর আগের আতঙ্কই যেন ফিরে এল উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায়। জেলা প্রশাসনের দাবি, যে সব এলাকায় জ্বর হচ্ছে, সেখানে জমা জল এবং আগাছা পরিষ্কারের পাশাপাশি মশা মারার তেল ছড়ানো হচ্ছে। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, ওই কাজ সমস্ত এলাকায় পুরোদমে শুরু হয়নি।

দেগঙ্গায় ডেঙ্গি ও অজানা জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা ২০১৭ সালে কয়েক হাজার ছাড়িয়ে যায়। সে বার মৃত্যুর সংখ্যা ছিল শতাধিক। পরের বছর রাজ্য সরকার ও জেলা প্রশাসন ডেঙ্গি দমনে আগাম কড়া হওয়ায় প্রকোপ ঠেকানো গিয়েছিল। তবুও সে বছর ডেঙ্গিতে মারা যান এক স্কুলশিক্ষিকা ও এক ব্যবসায়ী। চলতি বছরেও মুখ্যমন্ত্রী ডেঙ্গি রোধে আগাম পদক্ষেপ করার জন্য জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ সবের মধ্যেই ঘরে ঘরে জ্বর শুরু হওয়ায় আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, চাঁপাতলার দিঘিরআটির বাসিন্দা সাত বছরের ইরফান হাসান কয়েক সপ্তাহ ধরে জ্বরে ভুগছিল। জ্বর না কমায় ফুলবাগানের বি সি রায় শিশু হাসপাতালে তাকে ভর্তি করে পরিবার। সেখানেই ইরফানের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মেলে। দেগঙ্গার বিডিও দফতরে সে খবর আসতেই নড়ে বসে প্রশাসন। ইরফানের বাড়ি যান বিডিও, ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের কর্মী এবং পঞ্চায়েত প্রধান। বাড়ির আশপাশের আবর্জনা, জমা জল পরিষ্কার করে মশা মারার তেল ছড়ানোও হয় বলে দাবি প্রশাসনের।

এলাকায় গিয়ে জানা গেল, জ্বরে আক্রান্ত বেশ কয়েক জন। ডেঙ্গির আতঙ্কে ছোটদের সকাল থেকে মশারির নীচে রাখা হচ্ছে। জ্বর হলেই রক্তপরীক্ষা করাতে নিয়ে যাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। ইরফানের মা সাবিনাবিবি বলেন, ‘‘হাসপাতালে চিকিৎসা করে ছেলে এখন সুস্থ। তবু ওকে মশারির নীচে রাখছি।’’ কয়েক দিন ধরে জ্বরে ভুগছেন বছর সত্তরের ইয়ার আলি মণ্ডল। জ্বরে ভুগছে চার মাসের এক শিশুও। আজান আলি নামে এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘রাস্তার আবর্জনা সাফাই হয় না। এখন ডেঙ্গি ধরা পড়ায় সরকারি আধিকারিকেরা আসছেন। আগে কেন তাঁরা দেখেন না?’’

দেগঙ্গার বিডিও সুব্রত মল্লিক বলেন, ‘‘ওই বালকটি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছে জেনে এলাকায় গিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। জ্বর নিয়ে আমাদের নজরদারি চলছে।’’ জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘ডেঙ্গি প্রতিরোধে পুরসভা ও পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি, আধিকারিক, স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। দেগঙ্গা-সহ বিভিন্ন এলাকায় ডেঙ্গি দমনে নিয়মিত যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’

দেগঙ্গার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুরজ সিংহ বুধবার বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়েনি। কিন্তু অল্প বৃষ্টিতে যে জল জমেছে, তাতে যাতে মশার লার্ভা না জন্মায়, সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Deganga Health Mosquito
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy