ফাইল চিত্র।
সমুদ্রে ইলিশের আকাল চলছেই। মাঝে কিছুদিন মৎস্যজীবীদের জালে ইলিশ উঠলেও মরসুমের শুরুতে হাত খালিই ছিল তাঁদের। এখন আবার চলছে সেই আকাল। প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং প্রকৃতির খামখেয়ালিপনায় এই পরিস্থিতি বলে মনে করছেন মৎস্যজীবীরা। এই পরিস্থিতিতে ট্রলার মালিক এবং মৎস্যজীবীদের মাথায় হাত পড়ার জোগাড়। ক্ষতির পরিমাণ দিন দিন বেড়েই চলেছে বলে জানালেন তাঁরা।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইলিশের মরসুম প্রায় দেড় মাস পার হতে চলল। বার বার ট্রলার সমুদ্রে গিয়ে ইলিশ পাচ্ছে না। প্রায়ই খালি ট্রলার নিয়ে ফিরতে হচ্ছে। ট্রলারের জ্বালানি তেল ও মৎস্যজীবীদের মজুরি দিতে গিয়ে ক্ষতির মুখে পড়ছেন ট্রলার মালিকেরা। এমনিতেই সমুদ্রে মাছ না মেলায় এই মরসুমে সুন্দরবন এলাকায় অর্ধেকের কম ট্রলার ইলিশ ধরতে যাচ্ছে। মরসুমের শুরুতেই প্রায় ১৪-১৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও আশানুরূপ মাছ মিলছে না বলে জানাচ্ছেন অনেকে।
ট্রলার মালিক ও মৎস্যজীবীদের এই সমস্যা নিয়ে দিন কয়েক আগে মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরির সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল। সেখানে সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী, জেলা প্রশাসনের আধিকারিক, ট্রলার মালিকেরা ছিলেন। আলোচনা হয়েছে, কেন বার বার দুর্ঘটনা ঘটছে সমুদ্র। ডিজেলের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি ও সুন্দরবন এলাকার ট্রলারে ডিজাইন বদলানোর বিষয়ও উঠে এসেছে আলোচনায়।
ট্রলার মালিকেরা জানালেন, গত তিন বছর ধরে সমুদ্রে সে ভাবে ইলিশ মিলছে না। প্রতিবারই সমুদ্রে গিয়ে লোকসান হচ্ছে। তার উপরে আমপান, বুলবুল ও ইয়াসে বেশ কিছু ট্রলার ভেঙে গিয়েছিল। সেগুলি মেরামত করতে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। ট্রলার দুর্ঘটনায় একাধিক প্রাণহানি হয়েছে। সে সব পরিবারগুলিকে আর্থিক সাহায্যে করতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে ট্রলার সমুদ্রে পাঠানো দায় হয়ে উঠেছে।
কাকদ্বীপ ফিশারম্যান ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজন মাইতি বলেন, ‘‘তিন বছর আগে সমুদ্র ভাল মাছ মিলত। সে সময়ে প্রতি বার সমুদ্রে গিয়ে ৩-৪ হাজার টন মাছ নিয়ে ফিরত ট্রলার। এ বার এখনও পর্যন্ত মাত্র দু’আড়াই হাজার টন মাছ ঢুকেছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘ডিজেলের দাম আকাশছোঁয়া হয়ে যাওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ বেড়েই চলেছে। প্রতিবার সমুদ্রে গিয়ে ৩০-৪০ হাজার টাকা ক্ষতি হচ্ছে। এ ভাবে চলতে থাকলে সমুদ্রে ট্রলার পাঠানো বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাতে লক্ষ লক্ষ শ্রমিক কাজ হারাবেন।’’
এ বিষয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সহ মৎস্য আধিকারিক (সামুদ্রিক) জয়ন্তকুমার প্রধান বলেন, ‘‘প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য ইলিশ মিলছে না। তা ছাড়া, আগেভাগে ছোট মাছ ধরে ফেলায় সমস্যা তৈরি হচ্ছে। ছোট মাছ ধরার ট্রলার মালিকদের বিরুদ্ধে এ বার থেকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy