Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
Bagda By Poll

উপনির্বাচনে বাম, কংগ্রেসের ভরাডুবি

বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা এই কেন্দ্রে ফরওয়ার্ড ব্লকের শিকড় এক সময়ে বহুধাবিস্তৃত ছিল।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

সীমান্ত মৈত্র  
বাগদা  শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৪ ০৫:৫৬
Share: Save:

বাবা পাঁচ বার বিধায়ক হয়েছিলেন যে কেন্দ্রে, সেই কেন্দ্রেই ছেলে হারলেন মাত্র ৪.১৮ শতাংশ ভোট পেয়ে। বহুচর্চিত বিধানসভা কেন্দ্র, বাগদা। লোকসভায় বনগাঁ আসনে জিতেছে বিজেপি। এগিয়ে ছিল বাগদাতেও। গত বিধানসভাও ছিল বিজেপির দখলে। লোকসভা ভোটের পরে দেড় মাস কাটতে না কাটতেই অবশ্য সেই আসন ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল। এক সময়ে বাগদা বিধানসভা কেন্দ্র ছিল কংগ্রেসের দখলে। উপনির্বাচনে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে তাদেরও।

বামেদের এই হাল হল কেন?

বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা এই কেন্দ্রে ফরওয়ার্ড ব্লকের শিকড় এক সময়ে বহুধাবিস্তৃত ছিল। সেই আশাতেই বাগদার প্রাক্তন বিধায়ক, ফরওয়ার্ড ব্লকের কমলাক্ষ্মী বিশ্বাসের ছেলে গৌর বিশ্বাসকে প্রার্থী করেছিল বাম শিবির। গৌর ভোট পেয়েছেন সাকুল্যে ৮,১৮৯টি। প্রচার-পর্ব চলাকালীন বাম প্রার্থী দাবি করেছিলেন, অনেক দিন পরে বাম কর্মীরা জানপ্রাণ দিয়ে লড়াই করছেন। তবে ভোটে জিততে এটুকুই যে যথেষ্ট নয়, তা বুঝতে পারেননি প্রার্থী। ফল প্রকাশের পরে গৌর বলেন, ‘‘আমি দুঃখিত। তবে মানুষের রায় মাথা পেতে নিয়েছি। আমাদের কিছু সাংগঠনিক দুর্বলতা ছিল।’’

বাগদা আসনে আসন সমঝোতা হয়নি বাম-কংগ্রেসের। আলাদা প্রার্থী দেয় কংগ্রেস। প্রার্থী অশোককুমার হালদার পেয়েছেন ১,২৯৭টি ভোট, যা মোট ভোটের মাত্র ০.৬৬ শতাংশ! এই যেখানে পরিস্থিতি, সেখানে বামেদের সঙ্গে মন কষাকষি করে আলাদা প্রার্থী দেওয়ার কী যুক্তি থাকতে পারে, ভেবে পাচ্ছেন না দলের নেতাদের অনেকেই।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত, একক ভাবে বাগদায় এখন আর কংগ্রেসের সংগঠন বলে কার্যত কিছু নেই। উপনির্বাচনের প্রচারও তেমন দানা বাঁধেনি। অশোক বলেন, ‘‘এতটা খারাপ ফল আশা করিনি। হতে পারে, বামেদের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে জোটের কারণে অনেক কংগ্রেস কর্মী উৎসাহ হারিয়েছেন। তাঁদের এ বার আর প্রচারে পাওয়া যায়নি।’’

এই বাগদাই ছিল অতীতে বামেদের, বিশেষ করে ফরওয়ার্ড ব্লকের শক্ত ঘাঁটি। গৌরের বাবা কমলাক্ষ্মী বিশ্বাস বাগদার পাঁচ বারের বিধায়ক ছিলেন। ২০০৬ সালে তৃণমূল প্রার্থী দুলাল বর জয়ী হন। তারপর থেকে বামেদের কোনও প্রার্থী এখানে বিধানসভায় জয়ী হননি। ২০১৬ সালের তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসের হয়ে দাঁড়ানো দুলালকে বামেরা সমর্থন করেছিল। সে বারও দুলাল জয়ী হন।

২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও বামেরা আসনটি কংগ্রেসকে ছেড়ে দিয়েছিল। তবে ২০১৯ সালে বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী দেয়। বাগদা বিধানসভা এলাকা থেকে সিপিএম প্রার্থী পেয়েছিলেন ৬,৯৫৭ ভোট (৩.৩৪ শতাংশ)। এ বারের লোকসভা ভোটে বনগাঁ আসনে বামেরা প্রার্থী দেয়নি। কংগ্রেস প্রার্থীকে বামেরা সমর্থন করে। কংগ্রেস প্রার্থী বাগদা থেকে পেয়েছিলেন ৪,৮৩৯ ভোট। শতাংশের হিসেবে, ২.২৩ শতাংশ।

তবে উপনির্বাচনের প্রচারে বামেদের মিটিং-মিছিলে ভিড় হয়েছিল ভালই। এলাকায় মাটি কামড়ে পড়েছিলেন সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সত্যসেবী কর। তিনি ভোটের ফল নিয়ে বলেন, ‘‘মিটিং-মিছিলে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের ভোট আমরা পেয়েছি। কিন্তু তার বাইরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে আমাদের নিবিড় যোগাযোগের অভাব ছিল। এ বার সেই কাজে আমরা মনোযোগী হয়েছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

CPIM Congress TMC BJP Bagda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE