Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

অচলাবস্থা বাড়ল বনগাঁ পুরসভায়

কাউন্সিলরদের দাবি, তাঁদের নিজের দিকে প্রভাবিত করার জন্য শঙ্করকে সময় দিয়েছিল তৃণমূল নেতৃত্ব। সে জন্যই তাঁরা আরও দ্রুত দলত্যাগ করলেন।

দিল্লিতে মুকুল রায়ের সঙ্গে বনগাঁ পুরসভার কাউন্সিলররা। —নিজস্ব চিত্র

দিল্লিতে মুকুল রায়ের সঙ্গে বনগাঁ পুরসভার কাউন্সিলররা। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৯ ০০:৫২
Share: Save:

মঙ্গলবার বিকেলে দিল্লিতে বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে পুরসভার ১২ জন তৃণমূল কাউন্সিলর বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। একই সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। এতে বনগাঁ পুরসভার অচলাবস্থা আরও বাড়ল।

বনগাঁ পুরসভার ২২টি আসনের মধ্যে ২০টি তৃণমূলের দখলে। বাকি দু’টি সিপিএম ও কংগ্রেসের দখলে। এ দিন দিল্লিতে ১২ জন কাউন্সিলর বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় পুরসভায় শাসকদল সংখ্যালঘু হয়ে পড়ল। পুরসভার ক্ষমতা দখলের দিকে বিজেপি আরও একধাপ এগিয়ে গেল বলেই রাজনৈতিক মহল মনে করছে। এই অবস্থায় সাধারণ মানুষ পুর পরিষেবা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। রাজনৈতিক ডামাডোলে এমনিতেই পরিষেবা ব্যাহত হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে কবে ফের নাগরিক পরিষেবা গতি পাবে সেদিকেই তাকিয়ে তাঁরা।

কেন কাউন্সিলররা দলত্যাগ করলেন?

এ দিন বিজেপিতে যোগ দেওয়া কাউন্সিলর মনোতোষ নাথ বলেন, ‘‘বনগাঁর পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যের অনৈতিক কাজের প্রতিবাদ করে আমরা ১৪ জন কাউন্সিলর পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থার চিঠি দিয়েছিলাম মহকুমাশাসকের কাছে। দলীয় নেতৃত্বের কাছেও পুরপ্রধানের অপসারণ দাবি করেছিলাম। বারাসতে দলীয় বৈঠকে আমাদের জেলা নেতৃত্বের তরফে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল ১৫ জুনের মধ্যে পুরপ্রধানকে অপসারণ করা হবে। সেটা না হওয়াতে আমরা পুরপ্রধানকে সরাতে বিজেপিতে যোগ দিলাম।’’ কাউন্সিলরদের দাবি, তাঁদের নিজের দিকে প্রভাবিত করার জন্য শঙ্করকে সময় দিয়েছিল তৃণমূল নেতৃত্ব। সে জন্যই তাঁরা আরও দ্রুত দলত্যাগ করলেন।

কাউন্সিলরদের অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন দলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি বলেন, ‘‘পুরপ্রধানের অপসারণ নিয়ে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ছিল। তিনি ১৭ জুন পর্যন্ত এলাকার বাইরে ছিলেন। কাউন্সিলর ও বিশ্বজিতকে বলা হয়েছিল পুরমন্ত্রী ফিরলেই পদক্ষেপ করা হবে। বিশ্বজিতের সঙ্গে মন্ত্রীর ন’বার কথাও হয়েছিল। আসলে গোটাটাই ছিল পূর্ব পরিকল্পিত।

জল্পনাটা শুরু হয়েছিল রবিবার দুপুরের পর থেকে। ওই দিন দুপুরের পর থেকে বিধায়কের মোবাইল বন্ধ ছিল। ওই দিন রাতেই কাউন্সিলরেরা দিল্লি উড়ে গিয়েছিলেন। দলের জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব বিশ্বজিতের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। দলের তরফে তাঁকে প্রায় ১০০ মেসেজ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু বিধায়ক আর সাড়া দেননি। সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে মুকুল রায়ের সঙ্গে বিধায়ক ও কাউন্সিলরদের ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হতে শুরু করে। তখনই চিত্রটা পরিষ্কার হয়ে যায়। দলত্যাগ নিয়ে বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে লড়াই সংগ্রাম করলাম। সেই দলের কাছেই আমার কথার কোনও মূল্য ছিল না।’’ জ্যোতিপ্রিয়ের কথায়, ‘‘বিশ্বজিতের উচিত ছিল বিধায়কের পদ ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া।’’ এ দিন শহরের বিভিন্ন এলাকায় বাজি ফাটিয়ে, মিষ্টি বিতরণ, আবির খেলে বিজেপি ও তৃণমূলের সমর্থকেরা উল্লাসে মেতে ওঠেন।

বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘‘বিধায়ক সহ ১২ জন কাউন্সিলর দলে যোগদান করাতে দল আরও শক্তিশালী হল বনগাঁয়। সকলে মিলে বনগাঁর মানুষকে দমবন্ধ পরিবেশ থেকে মুক্তি দেওয়ার কাজ করব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bongaon Bongaon Municipality TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy