চাষের জমিতে মাছ ধরতে নেমেছেন কৃষক। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
দু’দিনের টানা বৃষ্টিতে এখনও জলমগ্ন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকা। মঙ্গলবার সকাল থেকে বৃষ্টি কমলেও জেলার বহু এলাকা থেকে এখনও জল নামেনি। বহু বাড়ি জলে ডুবে রয়েছে। পুকুর, ভেড়ির মাছ ভেসে গিয়েছে। জেলার অধিকাংশ ধান, আনাজ খেত জলের তলায়। দ্রুত জল না নামলে আনাজ চাষে প্রচুর ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, জেলায় ৮৭,৬৪৫ হেক্টর জমির আমন ধান ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এর ফলে প্রায় ৩ লক্ষ জন চাষি ক্ষতিগ্রস্ত। জেলার প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির পটল, বেগুন, উচ্ছে, ঢেঁরস-সহ বিভিন্ন আনাজের ক্ষতি হয়েছে। ক্যানিং ১, ২, ভাঙড়, কুলতলি, জয়নগর, কাকদ্বীপ, মথুরাপুর-সহ জেলার প্রায় ৭ হাজার হেক্টর পুকুর, ভেড়ির মাছ ভেসে গিয়েছে। সব মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জেলা জুড়ে মোট ৬৮টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। সোমবারই বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার দশেক মানুষকে শিবিরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ৭২টি কমিউনিটি কিচেন থেকে দুর্গতদের রান্না করা খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। জেলায় ২৭২টি মাটির বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে গিয়েছে। ২,২৯৭টি মাটির বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনও পর্যন্ত সাড়ে ন’হাজারের বেশি ত্রিপল, কুড়ি মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।
এ দিন বৃষ্টি কমায় বিভিন্ন ব্লকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন প্রশাসনের আধিকারিকেরা। ভাঙড়ের আনাজ চাষি আনোয়ার আলি বলেন, “ইয়াসে আনাজের প্রচুর ক্ষতি হয়েছিল। তারপর থেকে পর পর প্রাকৃতিক দুর্যোগে মাঠের ফসল প্রায় শেষ। আমার এক বিঘা জমির বেগুন গাছ জলে ডুবে গিয়েছে। ১০ কাঠা জমির পটল জলমগ্ন।”
ক্যানিংয়ের মেছোভেড়ির মালিক সিরাজ পিয়াদা বলেন, “নিজের ১০ বিঘা ও লিজ নেওয়া ৫ বিঘা জমি মিলিয়ে ভেড়ি করেছিলাম। টানা বৃষ্টিতে ভেড়ির বাগদা, গলদা-সহ সমস্ত মাছ ভেসে গিয়েছে। সব মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১০ লক্ষ টাকা।” গোসাবার ব্লক কৃষি আধিকারিক রীতেশ কুণ্ডু বলেন, “মাসখানেক আগের অতিবৃষ্টির ফলে চাষের জমি অনেকটা জলের তলায় চলে যায়। সেই জল সরিয়ে চাষিরা ধান-সহ অন্যান্য আনাজের চাষ করেছিলেন। কিন্তু তিন সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই ফের এই বৃষ্টি। দ্রুত জমি থেকে জল না সরলে প্রচুর ক্ষতি হবে।”
জেলাশাসক পি উলগানাথনের কথায়, “আমরা কন্ট্রোল রুম থেকে পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছি। দুর্গত এলাকায় পর্যাপ্ত ত্রিপল, চাল পাঠিয়েছি। রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হিসেব করা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy