ইয়াকুব লস্করের বাড়ি।
আমপানে এক ক্ষতিগ্রস্তের থেকে ক্ষতিপূরণের ৬ হাজার টাকা নিয়ে নেওয়া হয়েছে, বাকি ১৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠল তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে। ক্ষতিগ্রস্ত ওই ব্যক্তি ক্যানিংয়ের মহকুমাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
ঘটনাটি ক্যানিং ২ ব্লকের নারায়ণপুর পঞ্চায়েতের দক্ষিণ মাকালতলা গ্রামের। আমপান ঝড়ে ওই গ্রামের বাসিন্দা ইয়াকুব লস্করের মাটির বাড়ির অ্যাসবেস্টসের চাল ভেঙে যায়। পরে তিনি ক্ষতিপূরণের টাকার জন্য ক্যানিং ২ ব্লক অফিসে আবেদন করেন। তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরকারি ক্ষতিপূরণের ২০ হাজার টাকা জমাও পড়ে। সেই টাকা থেকে তিনি ঘর মেরামতের জন্য অ্যাসবেস্টসের দোকানে টাকা জমা করেন।
অভিযোগ, এরপরেই নারায়ণপুর পঞ্চায়েতের প্রধান সালাউদ্দিন সর্দার তাঁর দুই সাগরেদকে ইয়াকুবের বাড়িতে পাঠিয়ে তাঁকে ডেকে পাঠান। ইয়াকুব প্রধানের বাড়িতে দেখা করতে গেলে তাঁকে কুড়ি হাজার টাকা দিতে বলা হয় বলে অভিযোগ। ইয়াকুব অস্বীকার করলে তাঁকে নানা ভাবে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এমনকী, সরকারি আবাস যোজনা প্রকল্পে ঘরের টাকা দেওয়া হবে না বলেও জানানো হয়। পঞ্চায়েতের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে না বলে ভয় দেখানো হয় বলেও অভিযোগ। পরে তিনি এক আত্মীয়ের কাছ থেকে ৬ হাজার টাকা জোগাড় করে প্রধানের বাড়িতে দিয়ে আসেন বলে দাবি ইয়াকুবের। প্রধান ওই টাকা নিয়ে বাকি ১৪ হাজার টাকা আদায়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পরেই মহকুমাশাসকের দফতরে হাজির হয়ে বিষয়টি লিখিত ভাবে জানান ইয়াকুব।
তিনি বলেন, ‘‘আমপানে আমার মাটির বাড়ির অ্যাসবেস্টসের চাল ভেঙে গিয়েছে। বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্লক অফিসে গিয়ে বার বার আবেদন করার পরে ক্ষতিপূরণের কুড়ি হাজার টাকা পেয়েছি। পঞ্চায়েত প্রধানের লোকজন আমার বাড়িতে এসে হুমকি দিচ্ছে। ভয়ে আমি ধার করে প্রধানকে ৬ হাজার টাকা দিয়ে দিয়েছি। তারপরেও বাকি টাকা আমার কাছে চাওয়া হচ্ছে। নানা ভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’’
ক্যানিংয়ের মহকুমাশাসক রবিপ্রকাশ মিনা বলেন, ‘‘এ রকম একটা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
তৃণমূলের একাংশের দাবি, আমপানে এমন অনেকেরই বাড়ি ক্ষতি হয়েছে। এই সময়ে তাঁদের অনেকেই ক্ষতিপূরণের টাকা পাচ্ছেন। পাশাপাশি অনেকেই আবার সরকারি আবাস যোজনা প্রকল্পে ঘর তৈরির টাকা পাচ্ছেন। একই ব্যক্তি দু’রকম ভাবে তো সরকারি অনুদান পেতে পারেন না। তাই যাঁরা আবাস যোজনা প্রকল্পে ঘর তৈরির টাকা পাচ্ছেন, তাঁদের আমপানের ক্ষতিপূরণের ২০ হাজার টাকা ফেরত দিতে বলা হচ্ছে। তার বদলে ওই টাকা অন্য আর একজন আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত গরিব মানুষ পেতে পারেন।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, আমপানের ক্ষতিপূরণের টাকার সঙ্গে সরকারি আবাস যোজনা প্রকল্পে ঘরের টাকার কোনও সম্পর্ক নেই। দু’টোই সরকারি আলাদা আলাদা প্রকল্প।
পঞ্চায়েতের প্রধান সালাউদ্দিন বলেন, ‘‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আমাকে বদনাম করতে এ সব বলা হচ্ছে। আমি কয়েক দিন ধরে অসুস্থ। বাড়ির বাইরে বের হতে পারছি না। দীর্ঘ দিন ধরে ঘুটিয়ারি শরিফ এলাকায় হেরোইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছি। তাদেরই কেউ আমার বদনাম করতে এ সব করছে। আমি কখনও কারও থেকে টাকা চাইনি।’’
ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক সওকত মোল্লা বলেন, ‘‘এ ধরনের কোনও ঘটনা জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। সেই মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি পরিষ্কার বলে দিয়েছি, আমার বিধানসভা এলাকায় কোনও দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না। গরিব মানুষকে পরিষেবা
দিতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy