কাকদ্বীপ হাসপাতালে রক্তদান শিবির, বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র Sourced by the ABP
এ বার অতিরিক্ত গরম ছিল। তার মধ্যেই পঞ্চায়েত ভোটের দামামা বেজে যায়। এখন নির্বাচন মিটে গেলেও বর্ষায় শুরু হয়ে গিয়েছে ধান চাষের মরসুম। এ সবের জেরে কয়েক মাসে কাকদ্বীপ মহকুমা এলাকায় রক্তদান শিবির কার্যত বন্ধ। ফলে, রক্তের সঙ্কট তৈরি হয়েছে কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ব্লাড সেন্টারে। ভুগতে হচ্ছে রোগী এবং তাঁদের আত্মীয়দের। পরিস্থিতি সামলাতে বৃহস্পতিবার হাসপাতালের চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা নিজেরাই জরুরি ভিত্তিতে শিবিরের আয়োজন করে ১০০ ইউনিট রক্ত দিলেন। কিন্তু তাতেও ক’দিন সামলানো যাবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
ওই ব্লাড সেন্টার সূত্রে জানা গিয়েছে, মহকুমার প্রায় ১২ লক্ষ মানুষ কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। নামখানা, পাথরপ্রতিমা, সাগরের মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলের রোগীরাও আসেন। তাঁদের মধ্যে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত, প্রসূতি, অস্ত্রোপচারের রোগী বা দুর্ঘটনায় জখমেরাও থাকেন। এঁদের জন্য প্রতি মাসে বিপুল পরিমাণ রক্ত প্রয়োজন হয়। তা ছাড়া মহকুমার অন্য সব হাসপাতাল-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের রক্তের জোগানও দেওয়া হয় এখান থেকেই। কিন্তু রক্তদান শিবির সে ভাবে না হওয়ায় বর্তমানে চাহিদার তুলনায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
বিভিন্ন গ্রুপের রক্ত সঠিক সময়ে ব্লাড সেন্টারে না মেলায় বিপাকে পড়ছেন রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা। রক্তদাতার খোঁজে হয়রানি বাড়ছে তাঁদের। থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তদের আত্মীয়রা উদ্বিগ্ন। দুশ্চিন্তায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও।
হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু রায় বলেন, ‘‘শিবির চালু না হলে চাহিদা মেটানো দুষ্কর হবে। বিভিন্ন ক্লাব, সামাজিক সংগঠন ও ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে কথা বলে দ্রুত কিছু শিবির আয়োজন করার চেষ্টা করব।”
গ্রামীণ এলাকার বিভিন্ন রক্তদান শিবিরের উদ্যোক্তারা জানান, নতুন পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলি ব্যস্ত। এ ছাড়া ধান চাষ শুরু হওয়ায় এখন শিবির আয়োজন করা হলেও বেশি মানুষকে পাশে পাওয়া যাবে না। কিছুদিন পর থেকে ফের শিবির শুরু করা যেতে পারে।
সাগরের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ জানা বলেন, “আমার পরিবারের এক সদস্য অসুস্থ ছিলেন। এ পজ়িটিভ রক্তের প্রয়োজন ছিল। সাধারণত এই গ্রুপের রক্ত অত বিরল নয়, তা সত্ত্বেও সাগর থেকে কলকাতা পর্যন্ত খুঁজে শেষ পর্যন্ত টাকা দিয়ে রক্ত নিয়ে এসেছি। এখানে রক্ত ছিল না।”
বৃহস্পতিবার হাসপাতালের শিবিরে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে মোট ১০০ জন রক্ত দেন। সেই দলে ছিলেন সুপারও। নার্স সোমা বেরা বলেন, “ব্লাড সেন্টারে পর্যাপ্ত রক্ত নেই। জীবন বাঁচানোর জন্য এগিয়ে এলাম। আগেও বেশ কয়েকবার রক্ত দিয়েছি।”
কিন্তু এর পরেও ক’দিন পরিস্থিতি সামলানো যাবে তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। শিবিরের জন্য বিভিন্ন ক্লাব ও সংগঠনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy