সন্দেশখালিতে এক যুগ পর একটি পার্টি অফিস পুনর্দখল সিপিএমের। — নিজস্ব চিত্র।
এক যুগ আগে মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল পার্টি অফিস থেকে। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল নেতাদের ছবি, লাল ঝান্ডাটুকুও। শনিবার সন্দেশখালির কোড়াকাটিতে বেদখল হয়ে যাওয়া সেই পার্টি অফিস ‘পুনর্দখল’ করল সিপিএম। সন্দেশখালির প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দারের নেতৃত্বে মিছিল করে এই পার্টি অফিসের দখল নেয় বামেরা।
২০১১ সালে রাজ্যে রাজনৈতিক ক্ষমতার পরিবর্তনের পরেও সন্দেশখালির দুর্গ অটুট রেখেছিল সিপিএম। কিন্তু ২০১২ সালে সন্দেশখালির কোড়াকাটি এলাকায় লাল ঝান্ডার দলীয় কার্যালয় বেহাত হয়ে যায়। সিপিএমের অভিযোগ, তৃণমূলের লোকজন প্রথমেই পার্টি অফিসে সমস্ত লাল ঝান্ডা পুড়িয়ে দিয়ে নিজেদের দলীয় নিশান লাগিয়ে দেন। তার পর পার্টি অফিসে থাকা লোকজনকে বেধড়ক মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। সিপিএমের দাবি, সে দিন থেকেই রাতারাতি সিপিএমের পার্টি অফিসে শোভা পেতে শুরু করে তৃণমূলের ঘাসফুল পতাকা। তার পর কালিন্দী, ছোট কলাগাছি নদী দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। এলাকার ‘বাঘ’ বলে পরিচিত তৃণমূল নেতা শাহজাহান এখন জেলবন্দি। আর তাতেই ‘হাওয়া ঘোরার’ সঙ্কেত পাচ্ছে সিপিএম।
শনিবার সকালে মিছিল করে এলাকায় ঢোকে সিপিএম। মিছিলের নেতৃত্বে একদা এই এলাকারই বিধায়কের দায়িত্ব পালন করা সিপিএম নেতা নিরাপদ সর্দার। তিনিই কোড়াকাটিতে মিছিল নিয়ে ঢোকেন। তার পর বন্ধ পার্টি অফিসের তালা খুলে ভিতরে ঢোকেন। সামনে লাল ঝান্ডা উত্তোলন করা হয়। আকাশ, বাতাস তখন মুখরিত ইনকিলাবের ধ্বনিতে। লাল ঝান্ডায় ঢাকা আশপাশ। নিরাপদ বলছেন, ‘‘২০১১ সালের পর থেকেই আপনারা দেখেছেন, কী ভাবে সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের উপর সন্ত্রাস চালিয়ে এসেছে তৃণমূল। এলাকায় লাল ঝান্ডার যত পার্টি অফিস ছিল, সবই দখল করে নিয়েছিল তৃণমূল। এটাই ছিল একমাত্র জায়গা যেখানে বসে এলাকার গরিব কৃষক, ক্ষেতমজুর মানুষেরা বসে নিজেদের সুখ-দুঃখের কথা আলোচনা করতেন। আজ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সেই পার্টি অফিস পুনর্দখল করা হল। মানুষের চোখেমুখে আনন্দের ছাপ দেখছেন।’’
গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালির সরবেড়িয়া গ্রামে শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে ‘বাঘ’-এর অনুগামীদের তাড়া খেয়ে ফিরতে হয় কেন্দ্রীয় এজেন্সি ইডির আধিকারিকদের। জমি দখল করে ভেড়ি তৈরি থেকে নারী নির্যাতন— ফেব্রুয়ারির গোড়া থেকে বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে পথে নামেন সন্দেশখালির মহিলারা। সেই সময় গ্রেফতার করা হয়েছিল নিরাপদকেও। পরবর্তী কালে অবশ্য হাই কোর্ট থেকে জামিন পান তিনি। আর মুক্তি পেয়েই আবারও সংগঠন মজবুত করার কাজে নেমে পড়েছেন নিরাপদ। তারই অঙ্গ হিসাবে সন্দেশখালির কোড়াকাটিতে এক যুগ আগে বেদখল হয়ে যাওয়া পার্টি অফিস পুনর্দখল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy