খুলনা খেয়াঘাটে কোন গাড়ি চলল না। নিজস্ব চিত্র।
প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দারের গ্রেফতারের প্রতিবাদে সোমবার সন্দেশখালিতে ১২ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দেয় বামেরা। সন্দেশখালির মূল দ্বীপে এ দিন ধর্মঘটের ভালই প্রভাব পড়ে। সকাল থেকেই দোকান-বাজার বন্ধ ছিল। রাস্তা ঘাট ঠিল শুনশান। তবে ওই দ্বীপ এলাকা বাদে অন্যান্য এলাকায় ধর্মঘটের তেমন প্রভাব চোখে পড়েনি।
সন্দেশখালি কাণ্ডে রবিবার কলকাতা থেকে গ্রেফতার করা হয় সন্দেশখালির সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দারকে। রাতে তাঁকে বসিরহাট থানায় রাখা হয়েছিল। সোমবার সেখান থেকে তাঁকে বসিরহাট আদালতে তোলা হয়।
দলীয় নেতার গ্রেফতারের প্রতিবাদে রবিবারই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু করে সিপিএম। পাশাপাশি এ দিন সন্দেশখালি বন্ধের ডাক দেওয়া হয়। বন্ধের জেরে সন্দেশখালির মূল দ্বীপ এলাকায় বাজার, খেয়াঘাট চত্বর শুনশান ছিল এ দিন। একটা দুটো ছাড়া তেমন টোটো, ইঞ্জিন ভ্যানের দেখা মেলেনি। পথে বেরিয়ে বিপাকে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। অনেকেই পায়ে হেঁটে যাতায়াত করতে বাধ্য হন। সন্দেশখালি বাজারে প্রায় সব দোকানই বন্ধ ছিল এ দিন। বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, “পুলিশ চাপ দিয়েছিল দোকান খুলতে। তবে দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি কয়েকদিন। এলাকা শান্ত হলে তারপরে দোকান খুলব। এখনও তো ১৪৪ ধারা ওঠেনি।” ব্যারাকপুরের বাসিন্দা সুনীল হাওলাদার এ দিন পরিবারের মহিলা ও বাচ্চা নিয়ে সন্দেশখালি আসছিলেন। ত্রিমনি বাজারে এসে আটকে যান তিনি। তাঁর কথায়, “ব্যারাকপুর থেকে ধামাখালি আসতে কোনও সমস্যা হয়নি। কিন্তু সন্দেশখালি বাজার থেকে টোটো বা ইঞ্জিন ভ্যান না পেয়ে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। অবশেষে কিছু না পেয়ে হেঁটে খুলনা খেয়াঘাটে আসি।”
তবে সন্দেশখালির মূল দ্বীপের বাইরে জনজীবন প্রায় স্বাভাবিকই ছিল। নিরাপদ সর্দারের বাড়ি সন্দেশখালির খুলনাতে। বাড়ির দু’কিলোমিটারের মধ্যে খুলনা বাজার। সেখানে এ দিন সকাল থেকেই সব দোকান খোলা ছিল। ইঞ্জিন ভ্যান ও টোটো চলাচল স্বাভাবিক ছিল। একই ছবি দেখা গিয়েছে সন্দেশখালি ও ন্যাজাট থানা এলাকার অন্যান্য জায়গাতেও। দিনভর বিভিন্ন রাস্তায় টহল দিতে দেখা গিয়েছে পুলিশকে। সন্দেশখালি, খুলনা খেয়াঘাটেও পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল এ দিনও।
সন্দেশখালির সিপিএম নেতা রঞ্জিত নাথ বলেন, “সফল হয়েছে ধর্মঘট। তৃণমূলের বাহিনী সন্দেশখালির মানুষের উপরে যে অত্যাচার চালিয়েছে, তার জেরেই মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ধর্মঘট পালন করেছেন। তবে কিছু জায়গায় সরস্বতী পুজো থাকায় বিকেলের পর দোকান খোলা হয়েছিল।” সন্দেশখালি তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার মাহাতো বলেন, “সন্দেশখালির আন্দোলন বামেদের সাজানো নাটক। মানুষ সেটা বুঝে ফেলেছেন। তাই ধর্মঘটে কোনও সাড়া পড়েনি। জনজীবন স্বাভাবিক ছিল।”
এ দিকে নিরাপদ সর্দারের মুক্তির দাবিতে এ দিন বসিরহাটে পুলিশ সুপারের দফতরে বিক্ষোভ দেখান বাম কর্মী সমর্থকরা। বসিরহাট টাউন হল থেকে মিছিল করে ইটিন্ডা রোড ধরে তাঁরা বসিরহাটে পুলিশ সুপারের অফিসে যান। রাস্তায় বসে পুলিশকে ধিক্কার জানিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয়। সেখানে ঘণ্টা খানেক বিক্ষোভের পর ইটিন্ডা রোড ধরে সংগ্রামপুর সেতু পেরিয়ে বসিরহাট আদালতের সামনে আসে মিছিল। সেখানেও কিছুক্ষণ বিক্ষোভ চলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy