Advertisement
২১ অক্টোবর ২০২৪
Bangaon CPIM

আর জি কর আবহে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে চিন্তা-ভাবনা সিপিএমের

জেলা সিপিএম নেতৃত্ব মনে করছেন, আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়ার খুনের ঘটনার পরে যে নাগরিক প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল, তা এখন গণ আন্দোলনের রূপ নিয়েছে।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

সীমান্ত মৈত্র  
বনগাঁ শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:৪১
Share: Save:

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়ার খুন-ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে এবং দোষীদের শাস্তির দাবিতে রাজ্যে জুড়ে নাগরিক সমাজ পথে নেমেছে। প্রতিবাদ কর্মসূচির আঁচ পড়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলাতেও। ১৪ অগস্ট মেয়েদের রাত দখলের কর্মসূচি থেকেই জেলার নানা প্রান্তে প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছে। দুর্গা পুজোর দিনগুলিতেও কোথাও কোথাও তা অব্যাহত ছিল। জুনিয়র চিকিৎসকদের দশ দফা দাবিকে সমর্থন জানিয়েও মানুষ পথে নামছেন। প্রতীকী অনশন করছেন।

এই আবহে ১৩ নভেম্বর রাজ্যের ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হতে চলেছে। তার মধ্যে এই জেলার হাড়োয়া এবং নৈহাটিও আছে। এই দু’টি আসনে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে এখন বামদলগুলির মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। জেলা সিপিএম সূত্রের খবর, এ বার সরাসরি দলীয় লোকজনকে প্রার্থী না করে বিশিষ্ট কোনও মানুষকে প্রার্থী করা যায় কিনা, সে বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।

জেলা সিপিএম সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সাম্প্রতিক সময়ে তৃণমূল বিরোধী যে জনমত তৈরি হয়েছে, তাকে আহত না করে ওই জনমত যাতে এককাট্টা থাকে, সেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে আমরা দু’টি আসনে প্রার্থী দেওয়ার চেষ্টা করব।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমরা তৃণমূল-বিরোধী সকলের সঙ্গে আলোচনা করে অভিন্ন বোঝাপড়ার ভিত্তিতে প্রার্থী নির্বাচন করছি। সে ক্ষেত্রে কোনও বিশিষ্টজনকে প্রার্থী করা হতে পারে। আমাদের একটাই লক্ষ্য থাকবে, তৃণমূলকে বড় ধাক্কা দেওয়া।’’ সিপিএমের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এমনও সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, দলীয় প্রতীক ছাড়া এ বার প্রার্থী দেওয়া হতে পারে।

জেলা সিপিএম নেতৃত্ব মনে করছেন, আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়ার খুনের ঘটনার পরে যে নাগরিক প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল, তা এখন গণ আন্দোলনের রূপ নিয়েছে। আর জি কর নিয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে দুর্নীতি দুষ্কৃতীরাজ এবং থ্রেট কালচারের মতো বিষয়গুলি উঠে এসেছে। মৃণাল বলেন, ‘‘২০১১ সালের পর থেকে জেলায় আমরাও দুর্নীতি, দুষ্কৃতীরাজ এবং থ্রেট কালচারের বিরুদ্ধে লড়াই করে টিকে আছি।’’

সিপিএম সূত্রে জানানো হয়েছে, ২০১১ সালের পরে জেলায় তৃণমূলের থ্রেট কালচার শুরু হয়েছে। তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা হুমকি দিয়ে বলেছেন, বিষাক্ত সাপের মতো সিপিএম কর্মীদের পিটিয়ে মারা হবে। সিপিএমের সঙ্গে সামাজিক সম্পর্ক রাখা যাবে না। হাটে-বাজারে গল্পগুজব করা যাবে না। সিপিএম কর্মীদের বাড়ির সামাজিক অনুষ্ঠান বয়কট করতে হবে। এ সব ঘটনাও থ্রেট কালচারের অঙ্গ বলে দাবি সিপিএম নেতৃত্বের। তা ছাড়া, ২০১১ সালের পর থেকে জেলায় অসংখ্য সিপিএম পার্টি অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেওয়া হয়নি। সিপিএম কর্মীদের খেতের ফসল নষ্ট করা, পুকুরে কীটনাশক ছড়িয়ে মাছ মেরে ফেলার ঘটনা ঘটেছে। মৃণাল বলেন, ‘‘এই থ্রেট কালচার এখন মানুষ নিজেদের অভিজ্ঞতায় বুঝতে পারছেন।’’

সিপিএমের এই পরিকল্পনাকে অবশ্য গুরুত্ব দিতে নারাজ জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘ভোটে লড়াই করতে সিপিএম নানা ফন্দি-ফিকির করবে। তবে এতে কোনও লাভ হবে না। সিপিএম বরং চেষ্টা করুক, জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়া থেকে নিজেদের রক্ষা করতে!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bangaon
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE