লকডাউনের মধ্যেই পথে লোকজন লোকজন। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
অকারণ পথে বেরিয়ে কেউ পেলেন গোলাপ ফুল, কেউ পেলেন মিষ্টি। মাস্ক ছাড়া রাস্তায় ঘুরতে ঘুরতে পুলিশ দাঁড় করিয়ে হাতে তুলে দিল সে সবও।
কারণ, দিনটা যে পয়লা বৈশাখ। দোসরা বৈশাখ কী হবে তা হলে?
জায়গায় জায়গায় পুলিশ জানিয়ে দিয়েছে, বচ্ছরকার পরবের দিন বলে আজ ফুল-মিষ্টি দিয়ে সতর্ক করা হল। কাল থেকে এ সবের বদলে থাকবে অন্য ব্যবস্থা। লকডাউন ভাঙলে জেল-জরিমানা সবই হতে পারে।
আইনের প্রয়োগ কড়া না হলে কিছু মানুষ যে সচেতন হবেন না, তার উদাহরণ রোজই দেখা যাচ্ছে। নববর্ষের সকালে বনগাঁর রাস্তায় মোটরবাইক রেস হল। দেখা গেল, এক বাইকে তিন জন এবং আরোহীদের মাথায় হেলমেট নেই। ভ্যান, মোটরভ্যান টোটো, অটো বেরোল রাস্তায়। কেন বেরিয়েছেন, জানতে চাইলে একটাই জবাব, ‘পেটের দায়ে।’ বাজারগুলিতে শারীরিক দূরত্ব না মেনেই বাজার সারতে দেখা গেল অধিকাংশ মানুষকে। এ ছাড়া, দল বেঁধে আড্ডা দেওয়া, মাঠে নেমে ফুটবল খেলা তো আছেই। অনেক মানুষকে দেখা গেল, মুখ না ঢেকেই রাস্তায় নেমেছেন। কেন এমন গা ছাড়া ভাব? জবাব এল, “মাস্ক পড়লে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে।” প্রশ্ন হল, তা হলে পুলিশ কী করছে? এ সব নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে এ দিন দেখা যায়নি।
ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে এ দিন রাস্তায় পুলিশকে টহল দিতে দেখা গিয়েছে। বাজারেও ভিড় নিয়ন্ত্রণ করেছে। মাস্ক না পড়ে বাইরে বেরোলে ফিরিয়েও দেওয়া হয়েছে।
সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জ থানা এলাকার বিভিন্ন বাজার, খেয়াঘাটে ও জনবহুল জায়গায় মঙ্গলবার পুলিশ মাস্ক বিলি করেছে। তবে দোকানপাট বা হাটেবাজারের ভিড়ে কোনও বদল এ দিন বেলা পর্যন্ত চোখে পড়েনি। বসিরহাটেও পুলিশকে মাস্ক নিয়ে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গেল। এ দিন মাইকে প্রচার করা হয়, মাস্ক না পড়ে বাইরে বেরোলে কান ধরে ওঠবোস করানো হবে। একই সঙ্গে প্রচার করা হয়, হেলমেট ছাড়া বাইক চালক –আরোহীর জন্যও একই শাস্তি। এ দিন শতাধিক নিয়মভঙ্গকারীকে গ্রেফতার এবং বাইক চালকদের জরিমানাও করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, বেশিরভাগ বাইক চালক পকেটে পুরনো প্রেসক্রিপশন নিয়ে ঘুরছিলেন।
নববর্ষের সকালে ক্যানিং বাজারের ভিড় ছিল অন্যান্য সাধারণ দিনের মতোই। মাছ, মাংসের দোকানে ভিড়ের সঙ্গে সঙ্গে আতঙ্ক বাড়িয়েছে শারীরিক দূরত্ব না মানা। মাস্ক না পরেই বহু মানুষকে বাজারে বেরোতে দেখা গিয়েছে। বেলা এগারোটার পরে অবশ্য ভিড় কমতে শুরু করে। লকডাউন ভেঙে রাস্তায় বেরোনো জনতাকে গোলাপ ফুল, মিষ্টি দিয়ে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানায় ক্যানিং থানার পুলিশ।
মাস্ক বিলি করা হয়। তবে আগামী দিনে লকডাউন অমান্য করলে পুলিশ যে গাঁধীগিরি করবে না, তা-ও জানিয়ে দেওয়া হয়। ক্যানিং থানার আইসি অমিত হাতি জানান, এখনও যারা বিনা কারণে রাস্তায় বের হচ্ছেন, তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। নববর্ষ বলে ফুল-মিষ্টি দেওয়া হয়েছে। আগামী দিনে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডায়মন্ড হারবার ও কাকদ্বীপ দুই মহকুমা এলাকার চিত্র ছিল প্রায় একই রকম। সকাল ছ’টা থেকে দশটা পর্যন্ত এমন ভিড় হচ্ছে, যে, শারীরিক দূরত্ব মানার মতো জায়গা থাকছে না। তবে বেলা বাড়লেই আস্তে আস্তে এলাকা ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। কোথাও কোনও জমায়েতের খবর এলে পুলিশ অবশ্য ব্যবস্থা নিচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy