প্রতীকী ছবি
প্রতিদিন ভোরে উঠে ক্যানিং স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে কলকাতায় বিভিন্ন বাড়ি বা ফ্ল্যাটে বাসন মাজা, কাপড় ধোয়া, রান্নার কাজ করতে যান তাঁরা। পুজোপার্বণ বা কোনও বিশেষ উপলক্ষে ছুটি মিললেও এই রোজনামচায় সপ্তাহে কেউ এক-আধদিন ছুটিও পেতেন না।
কিন্তু এখন না চাইলেও ছুটি! লকডাউনের জেরে প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে তাঁরা বেরতে পারছেন না। সকলেই ঘরবন্দি হয়ে দিন কাটাচ্ছেন। ট্রেন চলছে না। কাজে যেতে পারছেন না কেউই। হাতে টাকাও তাই নেই। শুধু তাই নয়, এই পরিস্থিতিতে অনেকেই বেতন না পাওয়ার আশঙ্কাতেও ভুগছেন।
কলকাতার গড়িয়া, যাদবপুর, ঢাকুরিয়া, বাঘাযতীন, বালিগঞ্জ এলাকায় প্রতিদিন ভোরে এই মহিলারা ক্যানিং, লক্ষ্মীকান্তপুর-সহ আশপাশের এলাকা থেকে চলে আসেন। একের পর এক বাড়ি, ফ্ল্যাটে বাসন মাজা, রান্নার কাজ করেন তাঁরা। আবার দুপুরের ট্রেনে ফিরে যান যে যাঁর বাড়িতে। কার্যত এই সমস্ত পরিচারিকাই ছিলেন শহরবাসীর অন্যতম ‘লাইফ লাইন’। কিন্তু লকডাউনের ফলে এই ব্যবস্থার দফারফা হয়ে গিয়েছে। এক একজন পরিচারিকা পাঁচ, ছ’টি বা আরও বেশি বাড়িতে কাজ করতেন। এই কাজ করেই মাসে কেউ চার হাজার, কেউ ছয়-সাত হাজার টাকা রোজগার করেন। কিন্তু এখন সব বন্ধ। গত মাসের মাইনেও কেউ কেউ আনতে যেতে পারেননি। কারণ মার্চ মাস শেষ হওয়ার আগেই লকডাউন ঘোষণা হয়। বন্ধ হয়ে যায় সমস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা। এখন মাস শেষ হতেই সংসারে শুরু হয়েছে টানাটানি। সরকারি উদ্যোগে কেউ কেউ চাল, আলু, ডাল পেয়েছেন ঠিকই। কিন্তু তাঁদের প্রশন এতে আর ক’দিন চলবে?এই পরিচারিকারদের সূত্রেই জানা যাচ্ছে, লকডাউনের ফলে কাজে না যাওয়ায় বেশ কিছু বাড়ি তাঁদের বেতন কেটে নেবেন বলেও শুনিয়ে রেখেছেন। যা নিয়ে কাজের বাড়ির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কয়েকজন পরিচারিকার ফোনে বিস্তর ঝগড়াঝাঁটিও হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। তবে, কিছু বাড়ি আবার এই পরিচারিকাদের আশ্বস্ত করেছেন, তাঁদের বেতন কাটা হবে না বলে। ক্যানিং থেকে কলকাতায় পরিচারিকার কাজ করতে যাওয়া সুনিতা, মঙ্গলা, অনিতারা বলেন, “লকডাউনের জেরে আমারা কাজে যেতে পারিনি। আমরা তো আর ইচ্ছে করে কাজ বন্ধ করিনি? লকডাউন উঠে গেলে আবার যাব। যাঁরা মাইনে কেটে নেবেন বলেছেন, তাঁদের বাড়িতে আর কাজ করব না। আমাদের মতো গরিব মানুষদের কথা ওঁরা ভাবেন না। নিজেরা বাড়িতে বসে মাইনে পাবেন, আর আমরা কাজে যেতে পারনি বলে আমাদের মাইনে কাটবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy