প্রতীক্ষা: টিকা নেওয়ার জন্য লাইন দিয়েছেন মানুষ। বনগাঁর একটি টিকা প্রদান কেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র।
পরপর দু’দিন করোনার টিকা নিতে বনগাঁর একে বালা প্রাথমিক স্কুলে এসেছিলেন এক যুবক। কিন্তু টিকা মেলেনি। প্রথমদিন সকালে এসে লাইনের অনেক পিছনে পড়ে যাওয়ায় টিকা পাননি। পরের দিন আগে লাইন পেতে ভোর রাতে টিকাকরণ কেন্দ্রে যান তিনি। কিন্তু গিয়ে দেখেন, তাঁর আগে অনেক মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। শেষে ওই যুবক আগের দিন সন্ধ্যা থেকে লাইন দিয়ে পরের দিন সকালে টিকা পান।
উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ, বসিরহাট, বারাসত মহকুমার বিভিন্ন এলাকাতেই টিকা পেতে রাতভর লাইন দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। অনেক ক্ষেত্রে রাত জেগে লাইনে দাঁড়িয়েও শেষপর্যন্ত টিকা মিলছে না বলে অভিযোগ। টিকার লাইনকে কেন্দ্র করে দালাল চক্র গজিয়ে ওঠার অভিযোগও উঠছে। জেলার প্রতিটি ব্লকে রোজ টিকাকরণ হচ্ছে না বলেও অভিযোগ। বাগদা ও গাইঘাটা ব্লকে সোমবার টিকাকরণ হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন করে টিকা না এলে মঙ্গলবার থেকে আর সাধারণ মানুষকে টিকা দেওয়া যাবে না। দিন কয়েক আগে আমডাঙা ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে টিকা নেওয়ার লাইনে দাঁড়ানোর নিয়ে ঝামেলা হয়। কয়েকজন আহত হয়েছিলেন। অভিযোগ সরকারি অ্যাপে নাম নথিভুক্ত করে টিকাকরণ কেন্দ্রে গিয়েও অনেক সময় মিলছে না টিকা।
বনগাঁ পুর এলাকার চারটি জায়গা থেকে নিয়মিত করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। আগে আসার ভিত্তিতে টিকা দেওয়া হচ্ছে। সে কারণে মানুষ আগের দিন রাত থেকে মাদুর, মশা মারা ধূপ নিয়ে টিকাকরণ কেন্দ্রে চলে আসছেন। সকালে যাঁরা আসছেন, তাঁদের সঙ্গে রাত জাগা মানুষদের লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে প্রায়ই ঝামেলা হচ্ছে। অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রে রাতে একজন এসে তাঁর পরিচিত বা আত্মীয়স্বজনদের জন্যও লাইন রেখে দিচ্ছেন ইট বা অন্য কোনও জিনিসপত্র দিয়ে। ফলে অনেকে সশরীরে এসেও লাইনে পিছিয়ে পড়ছেন। যা নিয়ে ঝামেলা বাড়ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সিভিক ভলান্টিয়ার বা পুলিশ মোতায়েন রাখা হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার থেকে নিয়ম করে দেওয়া হয়েছে, কেউ কারও জন্য লাইন রাখতে পারবেন না। সোমবার দুপুরে একে বালা প্রাথমিক স্কুলে গিয়ে দেখা গেল, স্কুলের গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ভিতরে সিভিক ভলান্টিয়ারের উপস্থিতিতে টিকাকরণ চলছে। বাইরে জনা কুড়ি মানুষের জটলা। তাঁরা কেউ ভোরে, কেউ সাত সকালে এসেও এ দিন টিকা না পেয়ে বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, রোজ এক একটি কেন্দ্র থেকে গড়ে ১০০ জনকে টিকা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ভিড় হচ্ছে অনেক বেশি। যদিও বাসিন্দাদের দাবি, এক একটি কেন্দ্র থেকে রোজ ৫০-৬০ জনের বেশি টিকা দেওয়া হচ্ছে না। পুরপ্রশাসক গোপাল শেঠ বলেন, “ভ্যাকসিন সরবরাহ যেমন হচ্ছে, তেমনই দেওয়া হচ্ছে।”
জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, জেলায় চাহিদার তুলনায় প্রতিষেধকের সরবরাহ কম থাকার কারণেই সমস্যা তৈরি হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার পর্যন্ত জেলায় টিকা মজুত আছে মাত্র ৪০-৪২ হাজার। জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা বলেন, “রাজ্য থেকে যেমন ভ্যাকসিন মিলছে, সেভাবেই দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy