Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Corona

ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ পেতে সমস্যা

পঁয়তাল্লিশের কম বয়সি অনেকে এখন দ্বিতীয় ডোজ পেতে সমস্যায় পরছেন।

হয়রান: টোনা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে ভ্যাকসিনের জন্য দীর্ঘ লাইন।

হয়রান: টোনা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে ভ্যাকসিনের জন্য দীর্ঘ লাইন। নিজস্ব চিত্র।

সামসুল হুদা 
ভাঙড়  শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২১ ০৫:২০
Share: Save:

প্রথম দিকে টিকা দেওয়া হয় চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশদের। এরপরে শুরু হয় সাধারণ মানুষের টিকাকরণ। প্রথমে ষাট বছরের বেশি বয়সিদের প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হয়েছিল। পরে বয়স পঁয়তাল্লিশ পেরোলেই প্রতিষেধক দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। কিন্তু প্রাথমিক ভাবে অনেকেরই টিকার প্রতি অনীহা ছিল। ফলে বয়স পঁয়তাল্লিশ পেরোলেও টিকা নিতে আসেননি অনেকে। অভিযোগ, প্রতিষেধক দেওয়ার লোক না পেয়ে সে সময়ে ‘টার্গেট’ পূরণ করতে পঁয়তাল্লিশের কম বয়সিদের টিকার প্রথম ডোজ দিয়ে দিয়েছিলেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। কিন্তু গত কয়েক দিনে পরিস্থিতি বদলেছে। করোনার প্রকোপ বাড়ায় টিকার লাইনে ভিড় করছেন পঁয়তাল্লিশের বেশি বয়সি বহু মানুষ। এ দিকে, চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জোগান কমে যাওয়ায় নানা জায়গায় সমস্যা শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সে সময়ে নিয়মের ফাঁক গলে টিকার প্রথম ডোজ পেয়ে যাওয়া পঁয়তাল্লিশের কম বয়সি অনেকে এখন দ্বিতীয় ডোজ পেতে সমস্যায় পরছেন।

এমনই অভিযোগ উঠেছে ভাঙড় ২ ব্লকের জিরানগাছা ব্লক হাসপাতালের অন্তর্গত টোনা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। চিকিৎসকেরা বলছেন, সময় মতো দ্বিতীয় ডোজ না পেলে প্রথম ডোজের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ নেওয়ার পরে প্রায় ৬ সপ্তাহ কেটে গিয়েছে ভাঙড় ২ ব্লকের পোলেরহাট ২ পঞ্চায়েতের টোনা গ্রামের বাসিন্দা ৩৭ বছরে সুব্রত মণ্ডলের। গত কয়েক দিন ধরে বার বার টোনা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে ফিরে আসছেন। তিনি বলেন, “এ ভাবে কত দিন ঘুরব বুঝতে পারছি না। এখন বলা হচ্ছে, ভ্যাকসিন নেই। কী করব জানি না।” ওই গ্রামেরই বাসিন্দা, ৩৭ বছরের মোহন্ত মণ্ডলের প্রথম ডোজ নেওয়ার পরে ৬ সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। তিনিও গত কয়েক দিন ধরে দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার জন্য ঘুরছেন। বললেন, “যদি দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন দিতে এত সমস্যা হয়, তা হলে প্রথম ডোজ দিয়েছিল কেন? আমরা তো ভ্যাকসিন নিতে চাইনি। ডেকে দেওয়া হয়েছিল। এখন যদি সময় মতো দ্বিতীয় ডোজ না দেওয়া হয়, তা হলে প্রথম ডোজের কোনও কার্যকারিতা থাকবে না।”

ভাঙড়ের জমি কমিটির সদস্য তথা বিধানসভা নির্বাচনে সিপিআইএমএল রেড স্টার প্রার্থী মির্জা হাসান বলেন, “আমার ৪৫ বছর বয়স হয়নি। যেহেতু আমি প্রার্থী, তাই আমাকে প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছিল। দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন নিতে গিয়ে বেশ কয়েক দিন ঘুরতে হয়েছে। বহু মানুষ ভ্যাকসিনের জন্য সকাল থেকে লাইন দিচ্ছেন। অনেকে ফিরে যাচ্ছেন। প্রথম দিকে অনেকেরই বয়স না হওয়া সত্ত্বেও ডেকে ডেকে তাঁদের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। এখন বলা হচ্ছে বয়স হয়নি এবং ভ্যাকসিনের সরবরাহ ঠিক নেই।” কেন এই সমস্যা? ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী, প্রতিষেধক নেওয়ার জন্য অনলাইনে নাম নথিভুক্ত করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সেই সময়ে বেশ কিছু দিন প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে পোর্টালে নাম নথিভূক্ত করা যাচ্ছিল না। তখন অফলাইনে নাম নথিভুক্ত করে প্রতিষেধক দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। সে সময়ে বহু ক্ষেত্রে অনেক কম বয়সি মানুষও প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন নিয়ে নিয়েছিলেন। এখন দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রে ৪৫ বছর না হওয়ায় পোর্টালে নাম নথিভুক্ত করতে গিয়ে সমস্যা তৈরি হচ্ছে।

ভাঙড় ২ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক হিরণ্ময় বসু বলেন, “সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী, ৪৫ বছরের নীচে মানুষের ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা নয়। যদি এমন কোনও ঘটনা ঘটে থাকে, তা হলে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”

অন্য বিষয়গুলি:

Corona coronavirus COVID19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy